রয়টার্সের তোলা ফাইল চিত্র।
‘সেনা অভ্যুত্থানে’র দে়ড় দিন পেরিয়ে গিয়েছে। জিম্বাবোয়ের রাজধানী এখনও থমথমে। অশান্তি নেই ঠিকই। কিন্তু এখন আর এ নিয়ে বিশেষ সন্দেহ নেই প্রেসিডেন্ট রবার্ট মুগাবের ৩৭ বছরের কর্তৃত্ব টলোমলো। বৃহস্পতিবার মুগাবের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী মর্গান স্ভ্যানগিরাই দেশে ফিরে এসেছেন বলে খবর মিলেছে একটি সূত্রে।
মুগাবেকে হটিয়ে জিম্বাবোয়েতে যখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গড়ার কথা ভাবা হচ্ছে, তখন স্ভ্যানগিরাইয়ের ফিরে আসা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন কূটনীতিকরা। ক্যানসার চিকিৎসার জন্য এত দিন বিদেশে ছিলেন এই বিরোধী নেতা। দু’টি সূত্রে তাঁর প্রত্যাবর্তনের খবর নিশ্চিত করা হয়েছে। বিরোধী দল ‘স্ভ্যানগিরাই মুভমেন্ট ফর ডেমোক্র্যাটিক চেঞ্জ’-এরই এক প্রবীণ সদস্য জানিয়েছেন, সেনাবাহিনীর সঙ্গে তাদের আলোচনা চলছে। নয়া প্রশাসনে বিরোধীরা যথাযথ মর্যাদায় থাকবে বলেই ওই সদস্যের দাবি। সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক দলগুলির সমর্থনও আদায়ের চেষ্টা করা হচ্ছে।
ওই সদস্য যে ভাবে কথা বলেছেন, তাতে মনে হচ্ছে ‘চুক্তি’ প্রায় হয়েই গিয়েছে! কিন্তু আবার এটাও ঘটনা, যাঁকে সরানো নিয়ে এত তোড়জোড় চলছে, সেই তিরানব্বইয়ের নেতা মুগাবে সরে যাওয়ার কোনও ইঙ্গিত দিতেই নারাজ। হারারেতে তিনি যে গৃহবন্দি, সে বিষয়ে সন্দেহ অনেকটাই কেটেছে। কিন্তু বন্দি হওয়ার পর থেকে প্রকাশ্যে মুখ খোলেননি তিনি।
আপাতত মুগাবে-ঘনিষ্ঠ এক ক্যাথলিক যাজক মধ্যস্থ হিসেবে কাজ করছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমার দাবি, বন্দি হলেও মুগাবে বহাল তবিয়তেই আছেন। ‘সাদার্ন অফ্রিকান ডেভেলপমেন্ট কমিউনিটি’-র চেয়ারম্যান হিসেবে এ দিনই বতসোয়ানায় একটি বৈঠকের ডাক দেন জুমা। সকলেই চাইছেন, শান্তিপূর্ণ পথে প্রবীণতম নেতাকে সরানোর প্রক্রিয়ার ত্বরান্বিত করতে। তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে স্ভ্যানগিরাইয়ের কী ভূমিকা হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। ২০০৮ সালের এক বিতর্কিত নির্বাচনের পরে ক্ষমতা ভাগের চুক্তি করে স্ভ্যানগিরাই প্রধানমন্ত্রী হন। কিন্তু তার পরের পাঁচ বছরের মধ্যে ক্ষমতার পুরো রাশ হাতে নেন মুগাবে। সে বারও নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ উঠেছিল।
তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট এমারসন মানগাগওয়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় থাকবেন, এমন ইঙ্গিত গোড়া থেকেই রয়েছে। কারণ দেশের সেনাও তাঁরই পাশে। গত ৩০ অক্টোবর মানগাগওয়াকে ভাইস প্রেসিডেন্ট পদ থেকে ছেঁটে ফেলেছিলেন মুগাবে। সেই ক্ষোভ বাড়ত বাড়তেই বুধবারের সেনা সক্রিয়তা বলে মনে করা হচ্ছে।
জিম্বাবোয়েতে ফের নির্বাচন হওয়ার কথা আগামী বছর। তত দিন পর্যন্ত মুগাবেকে থাকতে দেওয়া হবে না বলেই কূটনীতিকদের একাংশের ধারণা। জিম্বাবোয়েতে শান্তি এবং অহিংসার ডাক দিয়েছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy