Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

করোনায় নয়, জাপানে বেশি মানুষ মারা গিয়েছেন আত্মঘাতে! প্রকাশ্যে অবাক করা তথ্য

কারওর চাকরি নেই, কেউ স্বামী-সন্তানকে নিয়ে চিন্তিত, কেউ ব্যবসায়িক কারণে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত, কেউ আবার নিজের শরীর স্বাস্থ্য নিয়ে এতটাই চিন্তিত হয়ে পড়ছেন যে তাঁদের মধ্যে মানসিক অবসাদ দেখা দিচ্ছে।

কারওর চাকরি নেই, কেউ স্বামী-সন্তানকে নিয়ে চিন্তিত, কেউ ব্যবসায়িক কারণে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত, কেউ আবার নিজের শরীর স্বাস্থ্য নিয়ে এতটাই চিন্তিত হয়ে পড়ছেন যে তাঁদের মধ্যে মানসিক অবসাদ দেখা দিচ্ছে। গ্রাফিক: অসীম রায়চৌধুরী

কারওর চাকরি নেই, কেউ স্বামী-সন্তানকে নিয়ে চিন্তিত, কেউ ব্যবসায়িক কারণে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত, কেউ আবার নিজের শরীর স্বাস্থ্য নিয়ে এতটাই চিন্তিত হয়ে পড়ছেন যে তাঁদের মধ্যে মানসিক অবসাদ দেখা দিচ্ছে। গ্রাফিক: অসীম রায়চৌধুরী

সংবাদ সংস্থা
টোকিও শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০২০ ১৪:০৮
Share: Save:

এ বছর অক্টোবর মাসে যত লোক করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন, তার থেকে অনেক বেশি মানুষ আত্মহত্যা করেছেন জাপানে। এমনই তথ্য উঠে এসেছে জাপান সরকারের দেওয়া পরিসংখ্যানে। অক্টোবর মাসে কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ২০৮৭ জনের, উল্টো দিকে এই এক মাসে আত্মহত্যা করেছেন ২১৫৩ জন। স্বাস্থ্যমন্ত্রকের দেওয়া এই তথ্যে অনেকেই চমকে যাচ্ছেন। চিকিৎসক মহল মনে করছে, করোনা কালের মানসিক অসুস্থতাই এর একমাত্র কারণ।

কী করে এই মানসিক অসুস্থতার জন্ম হচ্ছে? চিকিৎসকরা বলছেন, লিঙ্গ, শ্রেণির ভিন্নতায় আলাদা আলাদা রকমের মানসিক চাপ তৈরি হচ্ছে। কারওর চাকরি নেই, কেউ স্বামী-সন্তানকে নিয়ে চিন্তিত, কেউ ব্যবসায়িক কারণে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত, কেউ আবার নিজের শরীর স্বাস্থ্য নিয়ে এতটাই চিন্তিত হয়ে পড়ছেন যে তাঁদের মধ্যে মানসিক অবসাদ দেখা দিচ্ছে। আর সেই অবসাদই ঠেলে দিচ্ছে আত্মত্যার দিকে।

জাপান পৃথিবীর এমন একটি দেশ, যারা নিয়মিত আত্মহত্যার পরিসংখ্যান প্রকাশ করে। যেখানে আমেরিকা ২০১৮ সালে শেষ আত্মহত্যার পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে, সেখানে জাপান প্রায় প্রতিনিয়ত এই সংখ্যা প্রকাশ করে চলেছে। এই তথ্য জানিয়ে আলাদা করে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে মহিলাদের মানসিক অবস্থা নিয়েও। বলা হয়েছে, মহিলাদের আত্মহত্যার প্রবণতা উল্লেখযোগ্য ভাবে বেশি। আগের থেকে অনেক বেশি সংখ্যায় মহিলারা আত্মহত্যা করছেন। হোটেল, ফুড সার্ভিস, ও রিটেল বাণিজ্যে বিপুল সংখ্যায় মহিলাদের নিয়োগ করা হয়। সাধারণত সেখানে আংশিক সময়ের চাকরি করেন তাঁরা। অতিমারির সময়ে কর্মহীন হতে হয়েছে অনেককে। জাপানের মহিলারা জানাচ্ছেন, করোনার অজুহাতে অনেকেরই চাকরি গিয়েছে। এক কথায়, জাপান সরকার মহিলাদের গুরুত্ব দিচ্ছে না বলে অভিযোগ। এছাড়া, যে মহিলাদের সদ্যোজাত সন্তান রয়েছে, তাঁদের মধ্যেও দুঃশ্চিন্তা বাড়ছে। সেই কারণে মানসিক অবসাদের পরিমাণ বাড়ছে। একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, অতিমারির মধ্যে ২৭ শতাংশ মহিলাদের মধ্যে মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি দেখা দিয়েছে। সেই তুলনায় পুরুষদের সংখ্যা অনেকটাই কম, মাত্র ১০ শতাংশ।

সমস্যা বাড়ছে শিশু, কিশোরদেরও। যাদের বয়স ২০ বছরের নীচে, তাদের মধ্যে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। সামাজিক জীবন থেকে সরে আসা, স্কুল কলেজ বন্ধ থাকার কারণে শিশু-কিশোরদের জীবনে চাপ বাড়ছে। অনেক সময়ে বাড়িতে হেনস্থার শিকার হতে হচ্ছে শিশুদেরও। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, অতিমারির সময় জাপানের শিশুদের ৭৫ শতাংশ মানসিক সমস্যা ও চাপে ভুগছে।

কয়েক দিন আগেই, হানা কিমুরা নামে জাপানের একজন ক্রীড়াবিদ ও রিয়্যালিটি শো স্টার আত্মহত্যা করেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় একের পর এক নিন্দাজনক মেসেজ আসার ফলে তিনি আত্মহত্যা করেন বলে জানা যায়। আতিমারিতে প্রভাব পড়েছে বিখ্যাত মানুষদের জীবনেও। সিনেমা, কনসার্ট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাঁদের আয়ে প্রভাব পড়েছে।

আরও পড়ুন: বঙ্গভোটের ‘মন কি বাত’! মোদীর মুখে অরবিন্দ থেকে মনোমোহন বসু

কবে এই আত্মহত্যার প্রবণতা কমবে, তা নিয়েও খুব একটা স্পষ্ট করে কিছু বলতে পারেননি জাপানের চিকিৎসকরা। তাঁরা বলেছেন, জাপানে শীত পড়ার সময়েই নতুন করে করোনা সংক্রমণের ভয় রয়েছে। করোনার তৃতীয় ঢেউ জাপানে শুরু হয়ে যেতে পারে। ফলে অতিমারির প্রভাবে ধুঁকতে থাকা জাপানের অর্থনীতি আরও অনেক বড় ধাক্কার সামনে পড়তে পারে। এতে অবসাদ যে বাড়বে, সেটা এখনই নিশ্চিত করে বলা চলে।

আরও পড়ুন: অমিতের প্রস্তাব মানা হবে কি না, তা নিয়ে আজ বৈঠকে কৃষকরা

অন্য বিষয়গুলি:

japan coronavirus covid 19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy