বিখ্যাত মাগাওয়া
ল্যান্ডমাইন খুঁজে বার করতে তার জুড়ি মেলা ভার। শতাধিক ল্যান্ড মাইন শনাক্ত করে প্রচুর মানুষের জীবন বাঁচিয়েছে সে। নিজের কীর্তির জন্য মিলেছে সাহসিকতার পুরস্কারও। এ হেন বিখ্যাত ইঁদুর মাগাওয়ার মৃত্যুর খবর ঘোষণা করল আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এপোপো। এই সংস্থাটির সদর দফতর বেলজিয়ামে। সংস্থাটি ইঁদুর ও কুকুরকে প্রশিক্ষণ দেয় যাতে ল্যান্ড মাইন শনাক্তকরণে সক্ষম হয় তারা।
এপোপো-র তরফে সম্প্রতি জানানো হয়েছে, গত সপ্তাহের শেষ দিকে ক্রমশ ঝিমিয়ে পড়ছিল মাগাওয়া। অধিকাংশ সময়েই ঘুমিয়ে থাকত। মাগাওয়ার মৃত্যু এক বিরাট ক্ষতি। তার দুর্দান্ত কাজের জন্য সকলে কৃতজ্ঞ। ২০১৩ সালে তানজ়ানিয়ায় জন্ম মাগাওয়ার। সেখানেই এপোপো-র প্রশিক্ষণ শিবিরে ল্যান্ড মাইন শনাক্তের যাবতীয় খুঁটিনাটির প্রশিক্ষণ শেষে ২০১৬ সালে কাম্বোডিয়ার সিয়াম রিয়েপ প্রদেশে পাঠানো হয় এই ‘আফ্রিকান জায়ান্ট পাউচড র্যাট’টিকে। এই প্রজাতির ইঁদুর আয়তনে ছোট হওয়ায় মাটিতে মাইন পোঁতা থাকলেও তা এড়িয়ে খুব সহজে চলাফেরা করতে পারে।
গত সোমবার কাম্বোডিয়ার উত্তরের প্রদেশ প্রে ভিহিয়া-য় একটি অ্যান্টি ট্যাঙ্ক মাইন নিষ্ক্রিয় করার সময়ে বিস্ফোরণে মৃত্যু হয় তিন মাইন বিশেষজ্ঞের। তাঁদের মৃত্যুর ঘোষণার পরেই মাগাওয়ার মৃত্যুর বিষয়টিও সামনে আসে। তবে ওই দলটিতে ছিল না সে। মৃত্যুর সময়ে মাগাওয়ার বয়স হয়েছিল আট বছর।
একটা সময়ে কাম্বোডিয়ায় গৃহযুদ্ধের জেরে হাজার কিলোমিটারেরও বেশি জায়গায় ল্যান্ডমাইন বিছিয়ে রাখা হয়েছিল। সে কারণে বিশ্বে ল্যান্ডমাইনের বিস্ফোরণের ক্ষেত্রে বিপজ্জনক দেশগুলির মধ্যে অন্যতম কাম্বোডিয়া। সেই সূত্রেই মাগাওয়ার কাম্বোডিয়া গমন। মাটির গন্ধ শুঁকে একশোরও বেশি ল্যান্ড মাইন চিহ্নিত করার পাশাপাশি অন্যান্য বিস্ফোরকও খুঁজে বার করে প্রচুর মানুষকে বাঁচিয়েছে আফ্রিকান ওই ইঁদুরটি। পাঁচ বছরের সফল কর্মজীবন শেষে গত বছরের জুন মাসে অবসর নিয়েছিল মাগাওয়া। এপোপো জানিয়েছে, ওর জন্যই কাম্বোডিয়ার বহু মানুষ নির্ভয়ে হাসতে, খেলতে, ঘুরে বেড়াতে পারছেন।
২০২০ সালে ব্রিটেনের ‘পিপল’স ডিসপেনসারি ফর সিক অ্যানিম্যালস’ মাগাওয়াকে সোনার পদক দিয়েছিল অনন্য কীর্তির জন্য। যা পশুদের মধ্যে সাহসিকতার সর্বোচ্চ পুরস্কার বলে বিবেচিত হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy