ছবি: পিটিআই।
লকডাউনের বর্ষপূর্তি। এই এক বছরে কী কঠিন সব দিন দেখেছে ব্রিটেন। করোনায় হারিয়েছে ১ লক্ষ ২৬ হাজারেরও বেশি মানুষকে। প্রাণ বাঁচাতে প্রায় পুরো দেশ ঘরবন্দি। একটা বছর সময়ের সঙ্গে অসম লড়াই লড়েছে দেশবাসী আর প্রশাসন। সেই লড়াইকে স্মরণীয় করে রাখতে মঙ্গলবার ‘ন্যাশনাল ডে অব রিফ্লেকশন’ পালন করলেন ব্রিটিশরা।
এ দিন দুপুর ১২টা নাগাদ এক মিনিট নীরবতা পালনের মধ্যে দিয়ে ওই অনুষ্ঠানের সূচনা হল। নৈঃশব্দে ভাঙল ক্যান্টারবেরি ক্যাথিড্রালের ঘণ্টার শব্দে। সন্ধেয় ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে সাংবাদিক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বললেন, ‘‘গত এক বছর ধরে করোনা আমাদের যা যা শিখিয়েছে, তা এক জীবনের অভিজ্ঞতা হয়ে থাকবে।’’ দেশবাসীর জন্য বার্তা পাঠিয়েছিলেন ব্রিটেনের যুবরাজ চার্লস। তিনি জানান, ‘‘আমাদের বিশ্বাস, দর্শন যার যেমনই হোক না কেন, আসুন একটা মুহূর্ত একসঙ্গে ওঁদের স্মরণ করি। এই এক বছরে যাঁদের হারালাম তাঁদেরকে শ্রদ্ধা জানাই।’’ গত এক বছর ধরে অক্লান্ত পরিষেবা দেওয়ার জন্য হাসপাতালে ফুল পাঠিয়ে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। লন্ডনের যে হাসপাতালে সম্প্রতি রানির স্বামী প্রিন্স ফিলিপের অস্ত্রোপচার হয়েছে, সেই সেন্ট বার্থোলোমে হাসপাতালে আইরিশ, টিউলিপের তোড়া পাঠিয়েছেন তিনি।
সংক্রমণ ছড়ানোর ভয়ে মিছিল-সমাবেশের উপায় নেই। তাই দিনটাকে স্মরণীয় করে রাখতে রাত আটটার সময়ে সকলকে বাড়ির দরজায় মোমবাতি আর আলো নিয়ে দাঁড়াতে বলা হয়েছিল। ওয়েম্বলি স্টেডিয়াম, কার্ডিফ ক্যাসেল, বেলফাস্ট সিটি হলের মতো জনপ্রিয় স্থানগুলি সাজানো হয়েছিল হলুদ আলোয়।
এক বছরের পুরনো লড়াইয়ের অভিজ্ঞতাকে পুঁজি করে করোনা সংক্রমণ রুখতে নতুন উদ্যমে মাঠে নামছে ব্রিটিশ প্রশাসন। ব্রিটেন স্ট্রেনের দাপটে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে ইতিমধ্যে বেসামাল ব্রিটেন। এই সময়ে কেউ অনাবশ্যক বিদেশে ছুটি কাটাতে গেলে ৫ হাজার পাউন্ড জরিমানা করা হবে বলে জানানো হয়েছে। পড়শি দেশ জার্মানি আর ফ্রান্সে চোখ রাঙাচ্ছে করোনার ব্রাজিল ও দক্ষিণ আফ্রিকার স্ট্রেন। সেখান থেকে সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ ছড়িয়ে পড়া আটকাতে প্রত্যেককে সচেতন থাকার আর্জি জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী জনসন। লাল তালিকায় থাকা ৩০টি দেশ থেকে ব্রিটেনে এলে প্রথম ১০ দিন হোটেলে কোয়রান্টাইন থাকা বাধ্যতামূলক। কিন্তু সেই তালিকায় এখনও ফ্রান্স না-থাকায় প্রমাদ গুণছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, এতে সংক্রমণ বাড়তে পারে।
পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে ব্রাজিলেও। মঙ্গলবার এক দিনে ব্রাজিলে ৩২৫১ জনের মৃত্যু হয়েছে। অতিমারির শুরু থেকে এখনও পর্যন্ত দেশে এটাই দৈনিক মৃত্যুর সর্বোচ্চ সংখ্যা। এই অবস্থায় উল্টো সুরে গাইতে শুরু করেছেন প্রেসিডেন্ট জ়াইর বোলসোনারো। মঙ্গলবার এক রেডিয়ো বার্তায় করোনায় মৃতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘এই বছরটা ব্রাজিলীয়দের জন্য প্রতিষেধকের বছর হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। ’’
বিশ্ব জুড়ে টানা ৬ সপ্তাহ মৃত্যুহার কমার পরে, এই সপ্তাহে তা ফের বেড়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। মঙ্গলবার হু-র প্রকাশিত একটি রিপোর্টে জানা গিয়েছে, আমেরিকা আর ইউরোপেই মৃতের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy