কালীমন্দির পাহারায় এলাকার মুসলিম যুবকেরা। ছবি: সমাজমাধ্যম।
মসজিদ থেকে মাইকে প্রচার করছেন এক তরুণ। ‘বিশেষ ঘোষণা’ বলে মনে করিয়ে দিচ্ছেন, এলাকায় সংখ্যালঘু মানুষকে রক্ষা করার দায়িত্ব বাকি সকলের। সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছেসেই ভিডিয়ো।
শেখ হাসিনা সরকারকে উচ্ছেদের পরে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে চলছে ভাঙচুর, লুটতরাজ, সংখ্যালঘু পীড়ন। তার মধ্যেই শান্তি-সম্প্রীতি রক্ষায় এগিয়ে আসছেন বহু মানুষ। জোটবদ্ধ হয়ে পাহারা দিচ্ছেন এলাকার মন্দির। আর এই কাজে সামনের সারিতে কিশোর-তরুণ-যুবক এবং পড়ুয়ারা। এর মধ্যেই হিন্দু-সহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের পাশে থাকার জন্য বিভিন্ন জেলায় হেল্পলাইন নম্বর এবং কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। প্রতিটি নম্বরের সঙ্গে এক জনকরে সেনা আধিকারিককে দায়িত্বও দেওয়া হয়েছে।
ফরিদপুরের রামকৃষ্ণ মিশন পাহারা দিয়েছেন এলাকার মানুষজন। মহমদুল হাসান ওয়ালিদ ফেসবুকে লিখেছেন, ‘ফরিদপুরে রামকৃষ্ণ মিশন রক্ষার্থে আমাদের চরকমলাপুর যুবক সঙ্ঘ টিম পাহারায় রয়েছে। আমরা থাকতে পুরো ফরিদপুর শহরে কোনও মন্দিরে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে দিব না’। এ ছাড়া, ফরিদপুরের ইসকন, সাহাপারা মন্দির, পূর্ব আলিয়াবাদ পাটপাশ মন্দির এবং চকবাজার মন্দিরেও পাহারার ব্যবস্থা করেছেন এলাকাবাসী। একই ছবি দেখা গিয়েছে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে। ওই ধর্মস্থান গত কাল রাতভর পাহারা দিয়েছেন তরুণ-কিশোর-যুবকেরা। রাত ১১টা থেকে মঙ্গলবার ভোর ৫টা পর্যন্ত ২১ জন। সেই ভিডিয়োও তাঁদের এক জন সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেছেন।
সংখ্যালঘুদের ‘জান-মাল’ বাঁচাতে কুমিল্লার কান্দিরপাড়ে একজোট হয়েছেন মুসলিমদের বড় অংশ। এলাকার বিভিন্ন জায়গায় মাইকে তাঁরা প্রচার করছেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে কোনও দুষ্কৃতী যেন হিন্দু ভাই-বোনের বাড়ি এবং তাঁদের ধর্মস্থানে হামলা চালাতে না পারে। শান্তির বাংলাদেশ গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য’। হাথাজারি কালীমন্দির পাহারা দিয়েছেন এলাকার মাদ্রাসার পড়ুয়ারা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে রক্ষার দায়িত্ব নিয়েছেন এলাকার মন্দিরগুলির।
সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধন হয়েছে। অংশ নিয়েছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অনেক নেতা। ছাত্রনেতারা বলেছেন, যে দেশ তাঁরা নির্মাণ করতে চান, তা কোনও বিভেদের দেশ নয়। স্বাধীন ভাবে ধর্ম পালনের অধিকার ক্ষুণ্ণ করার কোনও চেষ্টা ছাত্রসমাজ সহ্য করবে না। আজ আজ বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এই মানববন্ধন হয়। দুপুরের পর বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থী-সহ অনেকেই এতে অংশ নিয়েছিলেন।
নৈরাজ্য-অরাজকতা-সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প যখন বাংলাদেশকে ঢেকে ফেলতে চাইছে, তখন তরুণ প্রজন্মই আশার আলো। যাঁরা দিন কয়েক আগেই শহিদ মিনারে গেয়েছিলেন, ‘ভাইয়ের-মায়ের এত স্নেহ, কোথায় গেলে পাবে কেহ ....’।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy