মোনিকা ও নাতনির কোলে জোই। ছবি: এপি।
—‘‘আস্তে, চেঁচাবে না, ফোনে কথা বলছি তো!’’ বাড়ির সামনের বাগানটায় ঘুরে-ঘুরে কথা বলছিলেন মার্গারেট। কিন্তু কে শোনে তাঁর কথা। প্রাণপণে চেঁচাচ্ছিল একরত্তি কুকুরছানা। গাছের আড়ালে যে ওত পেতে একজোড়া শিকারি চোখ! যত ক্ষণে হুঁশ ফেরে মার্গারেটের, ঈগলের খপ্পরে পোষ্য।
ছবির নাম ‘দ্য প্রোপোজাল’। কিন্তু পর্দায় দেখা এক রকম, বাস্তব আরও কঠিন। মঙ্গলবার যা চোখের সামনে ঘটতে দেখলেন ফিলিপ রডরিগেজ। বাগানে ঘুরছিল তাঁর বোন মোনিকা নেওহার্ডের পোষ্য জোই। হঠাৎই কোত্থেকে এসে ঝাঁপিয়ে পড়ে একটা প্রকাণ্ড ঈগল। তার পর ৮ পাউন্ডের ছোট্ট কুকুর জোইকে তুলে নিয়ে বেপাত্তা।
রডরিগেজ শিকাগো থেকে পেনসিলভেনিয়ার বাওম্যানস্টাউনে বোনের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন। বললেন, ‘‘শহরের মানুষ। এমন অদ্ভুত কাণ্ড কোনও দিন দেখিনি!’’ গাড়ি নিয়ে ঈগলটিকে ধাওয়া করেন রডরিগেজ। চারপাশে প্রচুর গাছপালা। ‘অপহরণকারী’ কোথায় লুকিয়েছে, কিছুতেই ঠাহর করতে পারেননি তিনি। বাড়ি ফিরে বোনকে দুঃসংবাদটা দেন। এর পর আর জোই-র বেঁচে থাকার কোনও আশা নেই, ধরেই নিয়েছিলেন দু’জনে। পোষ্যকে হারিয়ে সারাদিন কান্নাকাটি করেন ভাইবোন।
আরও পড়ুন: ট্রাম্পের ভিসা নীতিই ভাবনা
ও দিকে, মোনিকার বাড়ি থেকে বেশ কিছুটা দূরে ক্রিস্টিনা হার্টমানের বাড়ি। মহিলা হঠাৎই দেখেন, ছোট্ট একটা কুকুর কাঁদছে। ঠান্ডায় প্রায় জমে গিয়েছে সে, সারা গায়ে বরফের কুচি। নড়তে পারছে না। গায়ের বিভিন্ন জায়গায় ক্ষত, লোম ঝরে গিয়েছে। ছুটে যান তিনি। বাড়িতে নিয়ে আসেন জোইকে। ভাল করে কম্বলে জড়িয়ে দু’বাটি চিকেন স্যুপ খাওয়ান। তবে খানিক চাঙ্গা হয় জোই।
কিন্তু প্রভুকে খুঁজে পাওয়া যাবে কী ভাবে? ফেসবুকে গোটা ব্যাপারটা জানিয়ে ছবি-সহ পোস্ট করেছিলেন মোনিকা। ব্যস, তাতেই সমস্যার সমাধান। ৭ বছরের জোই-র মালকিনের সন্ধান পেয়ে যান ক্রিস্টিনা।
কী ভাবে ঈগলের কবল থেকে রক্ষা পেল জোই, জানা নেই কারও। কিন্তু বেঁচে যে ফিরেছে, তাতেই খুশি নেওহার্ড-পরিবার। ‘আর ওকে চোখের আড়াল হতে দেব না,’ বলছেন মোনিকা। চোখের আড়াল হচ্ছে কে? বাড়ি থেকে বেরোচ্ছেই না জোই। মোনিকা বললেন, ‘‘ওর উপর দিয়ে যা গিয়েছে..., দোষ দেওয়া যায় না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy