বৃহস্পতিবারই জোরালো ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছিল জাপান। এ বার তার তিন দিনের মাথায় ফের ভূকম্পনের সতর্কতা জারি করল জাপান। পরিস্থিতি এমনই যে, বাধ্য হয়ে বিদেশ সফর বাতিল করেছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদাও।
জাপানের আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই আরও একটি ভূমিকম্পের সম্ভাবনা রয়েছে। ভূমিকম্পের তীব্রতা শক্তিশালী হবে বলেই মনে করছেন তাঁরা। তীব্রতা রিখটার স্কেলে আট কিংবা নয়ও ছুঁয়ে ফেলতে পারে! এমনকি সুনামির সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। এ ধরনের বিধ্বংসী ভূমিকম্পকে ‘মেগা-কোয়েক’ নাম দিয়েছেন আবহবিদরা। এই অবস্থায় কিশিদা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী হিসাবে সঙ্কট ব্যবস্থাপনার সর্বাধিক দায়িত্ব তাঁর হাতেই। তাই আরও অন্তত এক সপ্তাহ দেশেই থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন:
বৃহস্পতিবারের ভূমিকম্পটির উৎসস্থল ছিল জাপানের দক্ষিণ উপকূলের কিউশু দ্বীপ। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ৭.১। জোরালো এই ভূমিকম্পের পরেও সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছিল। বলা হয়েছিল, জাপানের দক্ষিণ উপকূলের দুই দ্বীপ কিউশু এবং শিকোকুতে সমুদ্রের ঢেউ এক মিটার উচ্চতা পর্যন্ত উঠতে পারে।
তবে এ বারের ভূমিকম্পটি মাত্রায় আগের বারেরটিকেও ছাপিয়ে যাবে বলে অনুমান। সংবাদ সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, ওই সতর্কবার্তা পাওয়ার পরেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে দেশ জুড়ে। সকলেই আগামী কয়েক দিনের মতো রসদ মজুত করতে বেরিয়ে পড়েছেন রাস্তায়। কেউ কেউ আবার এই ক’টা দিনের জন্য নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে হন্যে হয়ে ঘুরছেন।
আরও পড়ুন:
এএফপি আরও জানাচ্ছে, যদি এরকম বড়সড় মাপের ভুমিকম্প সত্যিই হয়, তা হলে এটিই হবে শতাব্দীর সবচেয়ে বিধ্বংসী ভূমিকম্প। পরিস্থিতি সামাল দিতে ইতিমধ্যেই সতর্ক হয়েছে জাপান প্রশাসন। শহরের মধ্যে বুলেট ট্রেনগুলি অপেক্ষাকৃত ধীর গতিতে চালানো হচ্ছে। দেশের পারমাণবিক কেন্দ্রগুলিকেও একাধিকবার দুর্যোগ মোকাবিলা প্রস্তুতি পরীক্ষা করে দেখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ভৌগোলিক অবস্থানের নিরিখে জাপান ‘প্রশান্ত মহাসাগরীয় অগ্নিবলয়ে’ অবস্থিত। সে কারণে দেশটি বিশ্বের সবচেয়ে ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকাগুলির অন্যতম। বছরে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ১৫০০রও বেশি কম্পন অনুভূত হয় সে দেশে। প্রসঙ্গত, চলতি বছরেই ১ জানুয়ারি আর এক বিধ্বংসী ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছিল জাপান। সেই কম্পনের ২০০রও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। ঘরছাড়া হয়েছিলেন ২৬ হাজারেরও বেশি মানুষ।