Advertisement
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Indian Army

সেনায় পেনশন বিধি সংস্কারের পথে কেন্দ্র, স্ত্রী-অভিভাবকদের মধ্যে ভাগ, আলোচনা চলছে, জানালেন মন্ত্রী

সম্প্রতি একাধিক শহিদ জওয়ানের বাবা-মা আর্থিক সহায়তার জন্য সেনাবাহিনীর দ্বারস্থ হয়েছেন, জানিয়েছেন ‘নেক্সট টু কিন’ আইন সংশোধনের দাবি। এ সব প্রস্তাব বিবেচনা করে শহিদের বাবা-মা এবং স্ত্রীর মধ্যে পেনশন বণ্টনের পথে হাঁটতে পারে কেন্দ্র।

— ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০২৪ ১৮:০০
Share: Save:

কর্তব্যরত অবস্থায় কোনও সেনা জওয়ান বা কর্মীর মৃত্যু হলে কে পাবেন ক্ষতিপূরণের অর্থ? পেনশনই বা পাবেন কারা? শুক্রবার সংসদে এ বিষয়ে মতামত স্পষ্ট করল কেন্দ্র।

শুক্রবার কংগ্রেস সাংসদ ইমরান মাসুদ লোকসভায় প্রশ্ন করেছিলেন, কর্তব্যরত অবস্থায় কোনও সেনা জওয়ান শহিদ হলে এককালীন ক্ষতিপূরণের অর্থ এবং পেনশন কে পাবেন? এই প্রশ্নের উত্তরেই ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, ভবিষ্যতে পেনশনের টাকা শহিদের স্ত্রী ও পিতা-মাতার মধ্যে ভাগ করার পথে হাঁটতে পারে কেন্দ্র।

শুক্রবার ইমরানের প্রশ্নের উত্তরে প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী সঞ্জয় শেঠ জানিয়েছেন, আগেই তাঁদের কাছে শহিদের বাবা-মা এবং স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক পেনশন বণ্টনের একটি প্রস্তাব এসেছে। প্রস্তাবটি বিবেচনা করে শীঘ্রই সিদ্ধান্ত জানাবে কেন্দ্র। সম্প্রতি শহিদ জওয়ানদের বাবা-মাও আর্থিক সহায়তার জন্য সেনাবাহিনীর দ্বারস্থ হয়েছেন, জানিয়েছেন ‘নেক্সট টু কিন’ আইন সংশোধনের দাবি। জানা গিয়েছে, এর পরেই প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের কাছে এ নিয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছে সেনাবাহিনী। তবে নিয়মে কী বদল আনা হবে তা এখনও স্পষ্ট জানায়নি কেন্দ্র। বিষয়টি এখনও রয়েছে আলোচনার স্তরেই।

সেনায় পেনশন নিয়ে বিতর্কের শুরু মাসখানেক আগে ভারতীয় সেনায় কর্মরত ক্যাপ্টেন অংশুমান সিংহের মরণোত্তর সম্মান ‘কীর্তি চক্র’ নিয়ে। অংশুমানের বাবা-মায়ের দাবি ছিল, ‘কীর্তি চক্র’ এবং যাবতীয় অর্থ নিয়ে বাড়ি থেকে চলে গিয়েছেন তাঁদের পুত্রবধূ। এর পরেই সেনার ‘নেক্সট অফ কিন’ নীতি বদলের দাবিতে সরব হন তাঁরা।

প্রসঙ্গত, ক্যাপ্টেন অংশুমান ছিলেন সেনার মেডিক্যাল সার্ভিসের অফিসার। ২০২৩ সালের জুলাই মাসে সিয়াচেনে কর্তব্যরত ছিলেন তাঁরা। সেখানেই ১৯ জুলাই সেনাশিবিরের গোলাবারুদ রাখার ঘরে আগুন ধরে যায়। তিন সহকর্মী ও চিকিৎসার যন্ত্রপাতি বাঁচাতে গিয়ে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান অংশুমান। চলতি বছরের ৫ জুলাই তাঁর মরণোত্তর সম্মান ‘কীর্তি চক্র’ তুলে দেওয়া হয়েছিল অংশুমানের মা এবং স্ত্রীর হাতে। দিয়েছিলেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। সেই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন পরেই ক্যাপ্টেনের বাবা এবং মা দাবি করেন, ‘কীর্তি চক্র’ নিজের সঙ্গে নিয়ে বাপের বাড়ি চলে গিয়েছেন তাঁদের পুত্রবধূ। পাল্টে ফেলেছেন নিজের ঠিকানা। সেই সঙ্গে নিয়ে গিয়েছেন অংশুমানের পোশাক, ছবি, যাবতীয় নথিও। পুত্রের ছবি ছাড়া আর কোনও স্মৃতিই তাঁদের কাছে নেই বলে জানান সন্তানহারা দম্পতি।

এর পরেই অংশুমানের বাবা-মা ভারতীয় সেনায় পেনশনের নিয়মে বদল আনার দাবি তোলেন। কথা বলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সঙ্গেও। সেনার বর্তমান আইন অনুযায়ী অবিবাহিত কোনও সেনার ‘পরিজন’ বলতে বাবা-মাকে বোঝালেও বিয়ের পরে বোঝায় স্ত্রীকেই। ফলে আইনত কোনও জওয়ানের মৃত্যুর পর তাঁর সব কিছু তাঁর স্ত্রীরই প্রাপ্য। সেনা অবিবাহিত হলে সেক্ষেত্রে পেনশন পাবে তাঁর পরিবার। এছাড়া পিএফ, গ্র্যাচুইটি, বিমার অর্থ যাবে সংশ্লিষ্ট কর্মীর পূর্বঘোষণা মতোই। এ বার সেই নিয়মেই বদল আসতে চলেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE