ইয়েমেনের হুথি-নিয়ন্ত্রিত বন্দরে ইজ়রায়েলের হানা। ছবি: রয়টার্স।
ইরান সমর্থিত ইয়েমেনি বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুথি শুক্রবারই ইরানের তেল আভিভে ড্রোন হামলা চালিয়েছিল। হামলায় মৃত্যু হয়েছিল এক ইজ়রায়েলি নাগরিকের। এ বার পাল্টা দিল ইজ়রায়েলও। হুথি গোষ্ঠী নিয়ন্ত্রিত ইয়েমেনি বন্দর হোদেইদায় জবাবি হামলা চালাল ইজ়রায়েলের বোমারু বিমান। আকাশ পথে অতর্কিত হানায় তিন জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
সংবাদ সংস্থা এএফপির রিপোর্টে প্রকাশ, হোদাইয়া বন্দরে বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গিয়েছে। পরক্ষণেই গোটা বন্দর ধোঁয়ায় ঢেকে যায়। হুথি গোষ্ঠী সমর্থিত আল-মাসিরা টেলিভিশনে দেখানো হয়েছে, হামলার পর বেশ কয়েক জন আহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যাঁরা আহত হয়েছেন, তাঁদের অনেকেই বন্দরের কর্মী বলে দাবি করা হচ্ছে। বন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সংস্থা জানিয়েছে, হামলার সময় চারটি জাহাজ বন্দরে ছিল। আরও আটটি জাহাজ বন্দরের অদূরেই নোঙর করা ছিল। যদিও জাহাজগুলিতে কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলেই জানাচ্ছে ওই সংস্থা।
শনিবার হোদাইয়া বন্দরে এই হামলার নিন্দা করে সমাজমাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে হুথি নেতা মহম্মদ আবদুলসালাম লিখেছেন, “ইয়েমেনের বিরুদ্ধে নৃশংস ইজরায়েলি আগ্রাসন।” তাঁর দাবি, বন্দরের জ্বালানি মজুতের ঘরে এবং একটি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে ইজ়রায়েল। গাজ়া যুদ্ধে প্যালেস্টাইনকে সমর্থন করা থেকে ইয়েমেনকে বিরত রাখতেই, চাপ তৈরির জন্য এই বোমারু হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি হুথি নেতার।
শনিবার ইয়েমেনের বন্দরে বোমারু বিমানের হামলার পর মুখ খুলেছেন ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুও। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে সম্প্রচারিত এক ভিডিয়োবার্তায় ইজ়রায়েলের ‘শত্রুদের’ হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন তিনি। নেতানিয়াহু বলেছেন, “ইজ়রায়েলের শত্রুদের উদ্দেশে আমার খুব সাধারণ একটি বার্তা রয়েছে। ইজ়রায়েল নিজের প্রতিরক্ষায় কী করতে পারে, তা নিয়ে মনে কোনও সংশয় রাখবেন না। যারাই আমাদের ক্ষতি করার চেষ্টা করবে, আগ্রাসনের চেষ্টা করবে, তাদের সেই মূল্য চোকাতে হবে।”
ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, হোদাইয়া কোনও সাধারণ বন্দর নয়। ইরানের পাঠানো অস্ত্র হুথিদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য, একটি প্রবেশদ্বার হিসেবে কাজ করে এই বন্দর।
উল্লেখ্য, লোহিত সাগরে সম্প্রতি হুথি বিদ্রোহী গোষ্ঠী একের পর এক বাণিজ্যিক জাহাজকে কব্জা করেছে। যার জেরে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আমেরিকা এবং ব্রিটেন উভয় দেশই আকাশ পথে একাধিক হামলা চালিয়েছে হুথি গোষ্ঠীর উপর। তবে শনিবার ইয়েমেনের বন্দরে হামলার নেপথ্যে ওয়াশিংটনের কোনও যোগ নেই বলেই জানিয়েছেন আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের এক মুখপাত্র। তিনি জানিয়েছেন, “ইয়েমেনে হামলার সঙ্গে আমেরিকা কোনও ভাবে যুক্ত নয়। ইজ়রায়েলকে বোমারু হামলায় কোনও রকম সাহায্যও করেনি আমেরিকা। তবে ইজ়রায়েলের তেল আভিভে হামলার ঘটনার পর থেকে আমরা সে দেশের সঙ্গে অবিরাম যোগাযোগ রাখছি। ইজ়রায়েলেও আত্মরক্ষার পূর্ণ অধিকার রয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy