গাজ়া ভূখণ্ডে নতুন করে হামলা চালাল ইজ়রায়েলি বাহিনী। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স সূত্রে খবর, ইজ়রায়েলি হানায় শতাধিক প্যালেস্তাইনি নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে রয়েছে শিশু এবং মহিলাও। গাজ়ার প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, মৃতের সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে। প্যালেস্টাইনপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে ইজ়রায়েলের প্রথম দফার যুদ্ধবিরতির পর থেকে এটিই গাজ়ায় সবচেয়ে বড় হামলা বলে মনে করা হচ্ছে। ইজ়রায়েলি হানা শুরু হওয়ার পর থেকে গাজ়ায় মৃতের সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ইজ়রায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী জানিয়েছে, গাজ়া ভূখণ্ডে হামাস গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে থাকা অঞ্চলগুলিতে তারা হামলা চালাচ্ছে। রাজনৈতিক নেতৃত্বের অনুমোদনেই এই হামলা শুরু হয়েছে বলে দাবি ইজ়রায়েলি বাহিনীর। বস্তুত, গত ১৫ জানুয়ারি কাতার, আমেরিকা এবং মিশরের উদ্যোগে ইজ়রায়েল এবং হামাস সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে তা কার্যকর হয়। প্রথম দফার যুদ্ধবিরতির মেয়াদ ফুরিয়েছে ১ মার্চ। দ্বিতীয় দফার যুদ্ধবিরতি নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও আলোচনা হয়নি দুই পক্ষের। ইজ়রায়েল ইতিমধ্যে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বৃদ্ধি করার জন্য হামাস গোষ্ঠীর উপর চাপ বৃদ্ধি করতে শুরু করেছে। কখনও গাজ়ায় ত্রাণ পাঠানো বন্ধ করেছে, কখনও বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করেছে। এ বার গাজ়ায় নতুন করে হামলাও শুরু করে দিল ইজ়রায়েলি সেনা।
সংবাদ সংস্থা এপি জানিয়েছে, মঙ্গলবার ভোরের দিকে আকাশপথে গাজ়া ভূখণ্ডের উপর পর পর হামলা চালিয়েছে ইজ়রায়েল। হামাস গোষ্ঠীর কাছে গুরুত্বপূর্ণ প্রায় কয়েক ডজন নিশানায় হামলা হয়েছে। এপির প্রতিবেদন অনুসারে, যুদ্ধবিরতি নিয়ে পরবর্তী আলোচনায় কোনও অগ্রগতি না-হওয়াতেই এই হামলার নির্দেশ দিয়েছেন ইজ়রায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। তাঁর দফতর থেকে বলা হয়েছে, ইজ়রায়েল এখন থেকে আরও বেশি সামরিক শক্তি নিয়ে হামাসের বিরুদ্ধে হামলা চালাবে। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, গাজ়া ভূখণ্ডের গাজ়া সিটি, দের-আল-বালাহ, খান ইউনূস এবং রাফাহ-সহ বেশ কিছু জায়গায় হামলা চালিয়েছে ইজ়রায়েলি বাহিনী। সংবাদ সংস্থা এএফপিকে ইজ়রায়েলের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, যত ক্ষণ প্রয়োজন, তত ক্ষণ হামলা চালিয়ে যাবে তারা।
আরও পড়ুন:
ইজ়রায়েলি হানায় গাজ়া ভূখণ্ডে প্রচুর ঘরবাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, ঘরবাড়ির ধ্বংসস্তূপের নীচে অনেকে চাপা পড়ে গিয়েছেন। তাঁদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে গাজ়ার প্রশাসন। মুহুর্মুহু গোলাবারুদ বর্ষণের শব্দে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন গাজ়ার সাধারণ মানুষেরা। আহতদের দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।