দীর্ঘ ন’মাস আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে থাকার পর পৃথিবীর উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন সুনীতা উইলিয়ামসরা। সব কিছু পরিকল্পনামাফিক এগোলে স্থানীয় সময় অনুযায়ী মঙ্গলবার বিকেল ৫টা ৫৭ মিনিটে আমেরিকার ফ্লরিডা উপকূলে নামবেন সুনীতা-সহ চার মহাকাশচারী। ভারতীয় সময় অনুযায়ী বুধবার ভোর সাড়ে ৩টে। গোটা সফর শেষ করতে সময় লাগার কথা ১৭ ঘণ্টা।
নাসা জানিয়েছে, স্পেসএক্সের ড্রাগন যানের সওয়ারি সুনীতারা সেখানেই খাবার খাবেন। প্রয়োজনে বিশ্রামও নিতে পারেন তাঁরা। ঘুমের যাতে কোনও ব্যাঘাত না-ঘটে, তার জন্য সুনীতাদের কাছে ‘ডু নট ডিসটার্ব’ লেখা সুইচও থাকছে।
সুনীতাদের ফেরাতে রবিবার সকালে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (আইএসএস) পৌঁছোয় স্পেসএক্সের ড্রাগন যান। তাতে ছিলেন নাসার অ্যান ম্যাক্লেন, নিকোল আইয়ার্স, জাপানের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা জাক্সার প্রতিনিধি টাকুয়া ওনিশি এবং রাশিয়ার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা রসকসমসের প্রতিনিধি কিরিল পেসকভ। তাঁদের মহাকাশ স্টেশনের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে পৃথিবীতে ফিরছেন সুনীতা এবং বুচ।
আরও পড়ুন:
আগেই আইএসএস-এ সুষ্ঠু ভাবে যানটির ডকিং প্রক্রিয়া (অবতরণ) সম্পন্ন হয়েছিল। মঙ্গলবার ভারতীয় সময় সকাল ১০টা ৩৫ মিনিট নাগাদ আন ডকিং প্রক্রিয়া শেষ হয়। অর্থাৎ, সুনীতাদের নিয়ে আইএসএস থেকে বিচ্ছিন্ন হয় মহাকাশযানটি।
গত বছরের জুন মাসে আট দিনের সফরে মহাকাশে গিয়েছিলেন সুনীতা এবং বুচ। কিন্তু তাঁদের বাহক বোয়িং স্টারলাইনারে যান্ত্রিক ত্রুটি ধরা পড়ে। ফলে সুনীতাদের ঘরে ফেরা আটকে যায়। তার পর থেকে বার বার তাঁদের ফেরানোর চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু বার বার নিরাপত্তাজনিত কারণে তা পিছিয়ে গিয়েছে। আট দিনের সফর ন’মাস দীর্ঘায়িত হয়েছে। অবশেষে মাস্কের সংস্থার মহাকাশযান তাঁদের নিয়ে পৃথিবীতে ফিরছে।
পৃথিবীতে অবতরণের পরেও সুনীতাদের পরীক্ষা শেষ হচ্ছে না। এত দিন মহাকাশে থাকার পর পৃথিবীতে ফিরলে নানা শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে নভশ্চরদের। বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, দীর্ঘ দিন ধরে মহাকাশে শূন্য মাধ্যাকর্ষণে থাকার কারণে নানা শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ায় হেরফের ঘটে। মহাকাশের ‘মাইক্রোগ্র্যাভিটি’ পরিস্থিতি শরীরের মধ্যস্থ তরল ও রক্তচাপের উপর প্রভাব ফেলে। যার ফলে মস্তিষ্কে তরল জমা হতে থাকে। শরীরের রোগ প্রতিরোধশক্তিও দুর্বল হয়ে পড়ে। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কমতে থাকে ওজন। তা ছাড়া, দীর্ঘ কাল আইএসএস-এর শূন্য মাধ্যাকর্ষণে ভাসমান অবস্থায় থাকার কারণে পা মাটির সংস্পর্শে আসে না। ফলে পায়ের তলা নরম হতে হতে শিশুদের পায়ের মতো সংবেদনশীল হয়ে যায়। চিকিৎসাবিজ্ঞানের পরিভাষায় একে ‘বেবি ফিট’ বলা হয়। এর ফলে পৃথিবীতে ফেরার পর প্রথম কয়েক দিন হাঁটাচলা করতে বেশ বেগ পেতে হতে পারে নভশ্চরদের।
- গত বছরের জুন মাসে মহাকাশে পাড়ি দিয়েছিলেন সুনীতা এবং বুচ। আট দিন পরেই তাঁদের পৃথিবীতে ফিরে আসার কথা ছিল। কিন্তু যে যানে চড়ে তাঁরা গিয়েছিলেন, সেই বোয়িং স্টারলাইনারে যান্ত্রিক ত্রুটি ধরা পড়ে। মহাকাশেই তাঁরা আটকে পড়েন। আট দিনের মহাকাশ সফর ন’মাসে দীর্ঘায়িত হয়।
- ন’মাস পরে পৃথিবীতে ফিরছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকান মহাকাশচারী সুনীতা উইলিয়ামস এবং তাঁর সঙ্গী বুচ উইলমোর।আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (আইএসএস) থেকে তাঁদের বাহক ইলন মাস্কের সংস্থা স্পেসএক্সের মহাকাশযান। নাসার তথ্য অনুযায়ী, স্থানীয় সময় মঙ্গলবার বিকেল ৫টা ৫৭ মিনিটে ফ্লরিডা উপকূলে নামবেন তাঁরা। ভারতে তখন বুধবার ভোর সাড়ে ৩টে।
-
হাতে চ্যানেল নিয়ে নাসার দফতরে সুনীতা, থাকতে হবে অন্তত ৪৫ দিন! কেমন আছেন? নিভৃতবাসের ঠিকানা কোথায়?
-
‘সুনীতারাই অনুপ্রেরণা জোগান’, ভারতীয় বংশোদ্ভূত মহাকাশচারীর সাফল্যে উচ্ছ্বসিত তারকারাও
-
‘পৃথিবী তোমাদের মিস্ করেছে’, সুনীতাদের শুভেচ্ছাবার্তায় লিখলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী
-
ন’মাস মহাকাশে কাটিয়ে অবশেষে পৃথিবীতে সুনীতারা, এ বার লড়াই মাধ্যাকর্ষণের সঙ্গে
-
সমতল ভূমির বদলে কেন সুনীতাদের নিয়ে জলে অবতরণ করল স্পেসএক্স-এর ড্রাগন মহাকাশযান