Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

সুস-এ হানার পিছনেও আইএস

সন্দেহের তির ছিল তাদের দিকেই। আর সেটাই সত্যি হল। তিউনিসার সৈকত শহর সুস শহরে জঙ্গি হামলার দায় স্বীকার করল ইসলামি জঙ্গি সংগঠন আইএস। সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমতো বিবৃতি দিয়ে তারা জানিয়েছে, কালকের হামলার পিছনে তাদের সংগঠনের এক জেহাদিরই হাত রয়েছে।

সংবাদ সংস্থা
তিউনি শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০১৫ ০২:৫০
Share: Save:

সন্দেহের তির ছিল তাদের দিকেই। আর সেটাই সত্যি হল। তিউনিসার সৈকত শহর সুস শহরে জঙ্গি হামলার দায় স্বীকার করল ইসলামি জঙ্গি সংগঠন আইএস। সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমতো বিবৃতি দিয়ে তারা জানিয়েছে, কালকের হামলার পিছনে তাদের সংগঠনের এক জেহাদিরই হাত রয়েছে।

আইএসের টুইটার অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা হয়েছে একটি ছবি। কাঁধে রাইফেল নিয়ে রাস্তা দিয়ে হাঁটছে এক যুবক। তার মুখ দেখা যাচ্ছে না। ছবির তলায় লেখা, ‘‘আমাদের ভাই...আবু ইহইয়া আল-কাইরৌনি তার লক্ষ্যে পৌঁছতে পেরেছে। ইম্পিরিয়াল হোটেলের আঁটোসাটো নিরাপত্তা সত্ত্বেও।’’ সুসের সৈকতের ধারে হোটেল আর রিসর্টগুলিকে কার্যত যৌনপল্লি আখ্যা দিয়েছে আইএস। আর ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, মোট ৪০ জনকে কাল হত্যা করেছে তাদের সঙ্গী। যদিও তিউনিসিয়ায় কালকের হত্যাকাণ্ডে সরকারি ভাবে নিহতের সংখ্যা ৩৯। আর আইএস তাদের বিবৃতিতে যে নামটি প্রকাশ করেছে, ধোঁয়াশা রয়েছে সেটি নিয়েও।

কালই সুসের হোটেলে হানা দেওয়া সেই বন্দুকবাজকে মেরে ফেলেছিল পুলিশ। সরকারি সূত্রে খবর, নিহত যুবকের নাম সেইফেদ্দিন রেজগুই। বছর তেইশের ওই যুবক কাইরৌয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিল। পর্যটকের বেশে একটা বড় ছাতার তলায় আগ্নেয়াস্ত্র লুকিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিল রেজগুই। বেছে বেছে খোলামেলা পোশাক পরা বিদেশি পর্যটকদেরই কাল নিশানা করেছিল সে। কালকের হামলায় নিহতদের মধ্যে ৮ জন ব্রিটিশ নাগরিক। বাকিরা জার্মানি, বেলজিয়াম আর আয়ার্ল্যান্ডের বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। তিউনিসিয়ার প্রধানমন্ত্রী হাবিব এসিদ জানিয়েছেন, কয়েক দিনের মধ্যে দেশের বেসরকারি প্রায় ৮০টি মসজিদ বন্ধ করতে চলেছে তাঁর সরকার। সেই সঙ্গে নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে দেশের প্রতিটি পর্যটন কেন্দ্র আর ঐতিহাসিক সৌধগুলিতেও। সুসের সৈকতে প্রতিটি হোটেল আর রিসর্টে থাকবে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে নিরাপত্তারক্ষীর দল।

তবে এসিদের এই আশ্বাসে চিড়ে তেমন ভিজছে না। কাল রাত থেকে দলে দলে দেশে ফিরতে শুরু করেছেন বিদেশি পর্যটকরা। যে সব ইউরোপীয় সংস্থা মূলত এই সব সফরের আয়োজন করে তারাই বিমানের টিকিটের ব্যবস্থা করে পর্যটকদের ফেরাতে সাহায্য করছে। কাল রাতেই প্রচুর ইউরোপীয় পর্যটক তিউনিসিয়া ছেড়েছেন। আজ সকালেও বিমানবন্দরে দেখা গিয়েছে সেই একই ছবি। আর গোটা বিষয়টাই দেশের পর্যটন শিল্পের জন্য বড় ধাক্কা বলে মনে করছেন সরকারি কর্তারা।

সরাসরি না হলেও আইএসের সঙ্গে যোগ রয়েছে ফ্রান্সের ঘটনারও। লিওঁর কাছে সঁ কোয়াতঁ ফ্যালভিয়ের এক মার্কিন গ্যাস কারখানা চত্বর থেকে কাল উদ্ধার হয়েছিল এক ব্যক্তির কাটা মুন্ডু। জোর করে সেই কারখানায় বিস্ফোরণের চেষ্টার জন্য কালই ধরা হয়েছিল ইয়াসিন সালহি নামে এক মুসলিম যুবককে। ফ্রান্সের কিছু দৈনিকে আজ প্রকাশিত হয়েছে, কাটা মুন্ডুটি আসলে ইয়াসিনের মালিকের। ফরাসি পুলিশ শুধু বলেছে জড়িত সন্দেহে চার জনকে আটক করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছেন সালহির স্ত্রী-বোনও। সালহির স্ত্রী জানান, তাঁর স্বামী যে গোটা ঘটনায় অভিযুক্ত তা তিনি বিশ্বাস করেন না। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা রোজ নিয়ম করে রোজা পালন করি। আমার স্বামী এমন কাজ করতেই পারে না।’’ পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, জঙ্গি কার্যকলাপে জড়িত থাকার সন্দেহে আগেও সালহিকে চিহ্নিত করা হয়েছিল। কিন্তু তার বিরুদ্ধে অপরাধমূলক কাজকর্মের প্রমাণ না থাকায় ২০০৮-এ সন্দেহের তালিকা থেকে মুক্ত করা হয়।

কুয়েত সিটির শিয়া মসজিদে কালকের আত্মঘাতী হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে মোট তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কুয়েত পুলিশ। যদিও তাদের নাম-পরিচয় নিয়ে বিশদ কিছু জানা যায়নি।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE