Advertisement
E-Paper

ছাত্র লীগ কর্মীরা সরকারি চাকরি পাবেন না, ঘোষণা

গণবিক্ষোভে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পরে তাঁর দল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উপরে নির্যাতন ও হামলার বহু ঘটনা ঘটছে।

মুহাম্মদ ইউনূস।

মুহাম্মদ ইউনূস। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০২৪ ০৯:২৬
Share
Save

নিষিদ্ধ ঘোষিত বাংলাদেশ ছাত্র লীগের কোনও সদস্য বা কর্মী সরকারি চাকরি পাবেন না। অন্তর্বর্তী সরকারের ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া বৃহস্পতিবার এই ঘোষণা করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, যে সব নিয়োগ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে, সেখান থেকেও ‘নিষিদ্ধ সংগঠনের কর্মীদের’ বাদ দেওয়া হবে। ভুঁইয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক। এই সংগঠনের দাবিতেই আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্র লীগকে বুধবার নিষিদ্ধ করে মুহাম্মদ ইউনূস সরকার।

গণবিক্ষোভে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পরে তাঁর দল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উপরে নির্যাতন ও হামলার বহু ঘটনা ঘটছে। শুধুমাত্র আওয়ামী লীগ বা তার শাখা সংগঠনের সদস্য হওয়ার কারণে বেশ কয়েক জনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। পাশাপাশি ওই সংগঠনগুলির প্রায় সব নেতার বিরুদ্ধে খুন, খুনের চেষ্টা ও গণহত্যার মামলা করেছে ইউনূস সরকার। এই পরিস্থিতিতে ছাত্র লীগের কর্মীরা দেশের বিভিন্ন স্থানে সরকারের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে প্রতিবাদ মিছিল করেছেন। বুধবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ঝটিকা মিছিল করে ছাত্র লীগ। এর পরেই দুপুর থেকে এই সংগঠনকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে সরব হন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লা। রাতে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে ছাত্র লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। এর পরে বৃহস্পতিবার কাকভোরে প্রশাসনের চোখ এড়িয়ে শেখ মুজিবুর রহমানের বাসভবন, ৩২ নম্বর ধানমন্ডি রোডের পুড়িয়ে দেওয়া বাড়ির সামনে থেকে ঝটিকা মিছিল করে ছাত্র লীগ। সংগঠনের অনেক প্রথম সারির নেতাকে এই মিছিলে দেখা যায়। মিছিলটি প্রায় আধ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে ফের ৩২ নম্বর বাড়ির সামনে শেষ হয়। দিনের আলো ফোটার সময়ে হওয়া এই মিছিলের ছবি সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এর পরে ছাত্র লীগ ফেসবুকে একটি বিবৃতি পোস্ট করে নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদ জানায়। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছেন, ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধ, বাংলাদেশ গঠনের পরে সেনাশাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে বরাবর প্রথম সারিতে থেকেছে ছাত্র লীগ। তাদের নিষিদ্ধ করার বিষয়টি ‘ঘৃণ্য ও জঘন্য কর্মকাণ্ড’।

তবে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপ্পুকে অপসারণে কোটা-বিরোধী ছাত্ররা যে সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল, ঐক্যমত্যের অভাবে তাতে জটিলতা দেখা দিয়েছে। এ দিন প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসের নেতৃত্বে বিষয়টি নিয়ে বৈঠকে বসে উপদেষ্টা পরিষদ। সেখানে অনেকে জানান, রাষ্ট্রপতিকে সরাতে তাঁরা নীতিগত ভাবে রাজি থাকলেও পদ্ধতিগত সমস্যা রয়েছে, যার ফলে সাংবিধানিক সঙ্কট হতে পারে। রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যেও ঐকমত্য নেই। বিএনপি নেতৃত্ব বুধবার সকালে ইউনূসের সঙ্গে দেখা করে জানিয়ে এসেছেন, রাষ্ট্রপতিকে সরানো হলে সাংবিধানিক জটিলতা দেখা দেবে। এর ফলে নির্বাচন পিছিয়ে যেতে পারে। বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন আহমেদ জানান, তাঁরা দ্রুত নির্বাচন চান।

জামায়াতে ইসলামী নেতৃত্বও শেখ হাসিনার আমলে নিযুক্ত রাষ্ট্রপতি চুপ্পুর বিরোধিতা করলেও তাঁকে অপসারণের বিষয়ে চুপ। এই পরিস্থিতিতে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ঠিক হয়েছে, সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। শুক্রবার সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানও আমেরিকা ও কানাডা সফর সেরে ঢাকায় ফিরবেন। অনেকের দাবি, সেনাপ্রধান প্রবাসে থাকার মধ্যেই রাষ্ট্রপতিকে ইস্তফা দিতে বাধ্য করার কৌশল ছিল ইউনূস ও তাঁর সমর্থক ছাত্রদের। তবে তা সফল হল না।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Bangladesh

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}