Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Jacob Zuma

Jacob Zuma Arrest: জ়ুমার গ্রেফতারে দক্ষিণ আফ্রিকা উত্তাল, মৃত ৭২

সোমবার রাতেই সোয়েটো শহরের একটি শপিং সেন্টারে লুটের ঘটনায় পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে কমপক্ষে ১০ জনের।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
কেপ টাউন শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০২১ ০৬:২৭
Share: Save:

প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জেকব জ়ুমার কারাবাসকে কেন্দ্র করে উত্তাল দক্ষিণ আফ্রিকা। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত শুক্রবার থেকে ছড়িয়ে পড়া হিংসায় মঙ্গলবার পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ৭২ জন।

এর মধ্যে সোমবার রাতেই সোয়েটো শহরের একটি শপিং সেন্টারে লুটের ঘটনায় পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে কমপক্ষে ১০ জনের। তবে শুধু এই শপিং সেন্টারই নয়, প্রশাসন সূত্রের খবর, ওই শহর জুড়ে কম করে ২০০টি শপিং সেন্টারে সোমবার লুটপাট চালায় দুষ্কৃতীরা। ভাঙা হয় বহু এটিএম। তাণ্ডবের শিকার হয়েছে একাধিক রেস্তরাঁ। লুটপাট চলে মদ এবং জামাকাপড়ের দোকানেও। এই হিংসায় উস্কানি দেওয়ার অভিযোগে এখনও পর্যন্ত ১২ জন সন্দেহভাজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। হিংসায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে কমপক্ষে ১২৩৪ জনকে।

২০০৯ থেকে ২০১৮। তাঁর শাসনকালের এই সময় জুড়ে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বিদ্ধ দেশের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জেকব জ়ুমার। সেই সূত্রে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তে নামে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রশাসন। আদালত তাঁকে সশরীরে হাজিরা দিতে নির্দেশ দিলেও তিনি তা করেননি। আদালতের অবমাননায় সম্প্রতি ১৫ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে তাঁকে। যার পরেই দেশ জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে এই হিংসা।

সপ্তাহান্ত জুড়ে লুটপাট চলে গৌটেং প্রদেশও। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের পর্দায় দেখা গিয়েছে, বিভিন্ন দোকানে ঢুকে মহিলা-পুরুষ নির্বিশেষে জিনিস লুট করে আনছে সকলে। যোগ দিচ্ছে শিশুরাও! জোহানেসবার্গের অ্যালেক্সান্দ্রা শহরতলির এক শপিং মলে
ঢুকে বিনা বাধায় মুদির জিনিসপত্র লুটের চিত্রও ধরা পড়েছে সংবাদমাধ্যমের পর্দায়। কয়েকটি জায়গায় ঘণ্টা তিনেক বাদে রবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দেখা গিয়েছে পুলিশকে। পরে এসে পৌঁছেছে সেনাবাহিনীও।

তবে জ়ুমাকে কেন্দ্র করে এই হিংসা ছড়ালেও সকলেই যে তাঁর হয়ে প্রশাসনের বিরুদ্ধে এই অবস্থান নিচ্ছেন, তা নয়। বেশির ভাগ মানুষই লুটে অংশ নিয়েছেন ‘পেটের দায়ে’। অন্তত তেমনটাই জানাচ্ছেন তাঁরা। যেমন গাড়ি ধোয়ার কাজ করা বছর তিরিশের এক যুবকের কথায়, ‘‘জ়ুমাকে নিয়ে আমার কোনও মাথাব্যথাই নেই। তিনি যদি দুর্নীতি করে থাকেন তা হলে তাঁর জেলে যাওয়াই উচিত।’’ তা হলে তিনি এই লুটে অংশ নিয়েছেন কেন? তাঁর উত্তর, ‘‘মায়ের জন্য। (হাতে থাকা বাটি দেখিয়ে) এ রকম স্টিলের বাটি মায়ের খুব পছন্দ। সঙ্গে মাংস এবং মুদির জিনিসও নিয়ে যাচ্ছি।’’

হিংসা রুখতে পুলিশকে সাহায্য করতে রাস্তায় নেমেছে ২৫০০ সেনা। যদিও তাতেও পরিস্থিতির খুব একটা বদল ঘটেনি। মঙ্গলবারও সমাজমাধ্যমে ছড়িয়েছে দারবান শহরের হিংসার ভয়াবহ চিত্র। যার মধ্যে একটিতে দেখা যাচ্ছে, লুটের পর একটি অ্যাপার্টমেন্টের নীচে থাকা দোকানগুলিতে আগুন ধরিয়ে দেয় দুষ্কৃতীরা। আতঙ্কিত হয়ে কোলের শিশুকে এক তলার বারান্দা থেকে ছুড়ে ফেলতে দেখা যায় তার মাকে! নীচে দাঁড়িয়ে থাকা জনতা অবশ্য শিশুটিকে ধরে ফেলে।

এই নৈরাজ্য রুখতে সোমবার রাতে জাতির উদ্দেশে বার্তায় দেশের বর্তমান প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা বলেন, ‘‘এই হিংসার আড়ালে আদতে লুটপাট এবং চুরির উদ্দেশ্য পূরণ করছে আসল অপরাধীরা।’’ রামাফোসার এই দাবিকে উড়িয়ে দিচ্ছেন না বিশেষজ্ঞদের একাংশও। তাঁদের দাবি, দক্ষিণ আফ্রিকায় ৭ কোটি মানুষ দারিদ্রসীমার নীচে। যার মধ্যে রোজগারের উপায় নেই ৩২ শতাংশের কাছে। অতিমারি, চাকরি হারানো এবং অর্থনৈতিক মন্দার জেরে বিধ্বস্ত জনতা। আদতে জ়ুমার গ্রেফতারি থেকে জন্ম নেওয়া এই হিংসা পরিস্থিতি তাদের ক্ষোভ প্রকাশের একটা মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

south africa Jacob Zuma
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy