এক প্রতিবাদীর সঙ্গে রাহুল দুবে। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া
জর্জ ফ্লয়েড হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভকারীদের গুলি করে মারার হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই প্রতিবাদীদেরই আশ্রয় দিয়েছিলেন এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্যবসায়ী। প্রায় ৭৫ জন প্রতিবাদীকে শুধু বাড়িতে থাকতে দেওয়াই নয়, তাঁদের খাবার-দাবার থেকে যাবতীয় দায়িত্ব নিয়েছিলেন রাহুল দুবে নামে ওই ব্যবসায়ী। আর সোমবার রাতের পর থেকেই রাহুল এখন প্রতিবাদীদের কাছে ‘হিরো’র মর্যাদা পাচ্ছেন।
গত প্রায় ১৭ বছর ধরে ওয়াশিংটনে বসবাস করছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত রাহুল দুবে। মার্কিন নাগরিকত্বও পেয়েছেন। জর্জ ফ্লয়েড কাণ্ডের পর সোমবার রাতে প্রতিবাদীদের অস্থায়ী আস্তানা হয়ে উঠেছিল এই ব্যবসায়ীর বাড়ি। কেউ ঘর পেয়েছিলেন, কেউ বারান্দা, কেউ সোফায় রাত কাটিয়েছিলেন। তাঁদের খাবার-দাবারের বন্দোবস্তও করেছিলেন রাহুল। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ঘটনা অনেকেই শেয়ার করার পর থেকেই মার্কিন মুলুকে খবরের শিরোনামে ‘আলভারেজ দুবে ট্রেডিং কোম্পানি’র মালিক রাহুল। সোশ্যাল মিডিয়াতেও প্রতিবাদীদের ব্যাপক সমর্থন ও প্রশংসা পাচ্ছেন তিনি।
একটি ম্যাগাজিনের সাক্ষাৎকারে রাহুল বলেছেন, ‘‘আমার বাড়িতে প্রায় ৭৫ জন ছিলেন। যে যেখানে জায়গা পেয়েছিলেন রাত কাটিয়েছিলেন। মা, বোন, এবং ছেলে-সহ আমারর পরিবার এখানে রয়েছে। আমার ছেলের কামরা ছেড়ে দিয়েছিলাম, যাতে ওঁরা স্বচ্ছন্দে থাকতে পারেন। এমনকি, বাথ টাবের কোনাতেও বসে সময় কাটিয়ে দিয়েছেন এক জন। কারও কোনও বিরক্তি নেই। ওঁরা ভাল আছেন।’’ কিন্তু পরক্ষণেই জর্জ ফ্লয়েড কাণ্ডের কথা মনে পড়ল হয়তো। বললেন, ‘‘না-না ভাল নেই। তবে নিরাপদে আছেন। ওঁরা প্রতিবাদ করছেন। একে অন্যকে সমর্থন করছেন।’’
কী ভাবে রাহুল দুবের বাড়িতে ছিলেন প্রতিবাদীরা, দেখুন ভিডিয়ো:
আরও পড়ুন: ট্রাম্প আমেরিকাকে ভাগ করে রাখতে চান, অভিযোগ পেন্টাগনের প্রাক্তন কর্তার
কিন্তু এই ভাবনা এল কোথা থেকে? শুরুটাই বা কী ভাবে হল? পুলিশ কার্যত গলা টিপে হত্যা করেছিল জর্জ ফ্লয়েডকে। সোমবারের ওই ঘটনার ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই ‘আই কান্ট ব্রিদ’ বিক্ষোভ শুরু হয় মিনিয়াপোলিস-এ। ক্রমেই তা ছড়িয়ে পড়ে মার্কিন মুলুকের সর্বত্র। একটি টিভি সাক্ষাৎকারে রাহুল দুবে জানিয়েছেন, সোমবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ বাড়ির সামনেই ছিলেন তিনি। পুলিশ প্রায় সব রাস্তায় ব্যারিকেড তৈরি করেছিল। সেই সময় কয়েকজন প্রতিবাদী তাঁর বাড়ির সামনে এসে মোবাইলের চার্জ দেওয়া এবং বাথরুম ব্যবহারের অনুমতি চান। তবে মঙ্গলবার সকালে কার্ফু উঠে যাওয়ার পরে প্রতিবাদীরা তাঁর বাড়ি ছেড়ে চলে যান।
"I hope that my 13-year-old son grows up to be just as amazing as they are."
— ABC 7 News - WJLA (@ABC7News) June 2, 2020
Rahul Dubey opened his home to nearly 70 strangers overnight and sheltered them during D.C.'s curfew. He says our country needs people like THEM.
FULL INTERVIEW: https://t.co/hucxiraHk9 pic.twitter.com/BKFMsTsSgk
আরও পড়ুন: সংক্রমণে ফের নয়া নজির! ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত ৯৩০৪ জন, মৃত্যু বেড়ে ৬০৭৫
ওই সাক্ষাৎকারেই তিনি বলেছেন, ‘‘সত্যি কথা বলতে কী, এ ছাড়া আমার আর কোনও উপায়ও ছিল না। পুরো ভিড়টা যেন ঝড়ের গতিতে আমার বাড়িতে চলে এল। শুধু দরজা খুলে রেখেছিলাম আর একের পর এক প্রতিবাদীরা এসে ঘরে ঢুকে পড়ল। ফলে কেউ যদি বাড়িতে ঢোকে, তাঁকে তো বাধা দিতে পারি না। তার পর পুলিশের একটা দল যখন বাড়ির সামনে দিয়ে যাচ্ছিল, তখন দরজা বন্ধ করতে পেরেছিলাম।’’
ফলে রাহুলের কথায় কার্যত এমনটাও মনে হয়েছে যে, তিনি এক প্রকার নিরুপায় হয়েই আশ্রয় দিয়েছিলেন। কিন্তু তাতেও প্রতিবাদীদের কাছে তিনি এখনও দেবদূতের মতো। এখনও তাঁকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় চর্চা চলছে। আশ্রয় নেওয়া অনেকেই সেই রাতের অভিজ্ঞতা ও রাহুলের মানবিক ব্যবহারের কথা টুইটার-ফেসবুকে শেয়ার করছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy