Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
United Nations

ইমরানের বক্তৃতা প্ররোচনামূলক, ঘৃণায় ভরা, কড়া প্রতিক্রিয়া ভারতের

ভারতের বিদেশমন্ত্রকের ফার্স্ট সেক্রেটারি বিদিশা মৈত্র রাষ্ট্রপুঞ্জে ইমরানের ভাষণ প্রসঙ্গে বলেন, “এটা সত্যিই দুর্ভগ্যজনক যে, পাক প্রধানমন্ত্রী গোটা বিশ্বকে আড়াআড়ি ভাবে ভাগ করে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। আমরা-ওরা, ধনী-গরিব, উত্তর-দক্ষিণ, উন্নত-উন্নয়নশীল এবং মুসলিম-অন্যান্য। তাঁর এই ভাষণ প্ররোচনামূলক। ঘৃণায় ভরা।”

রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতের বিদেশমন্ত্রকের ফার্স্ট সেক্রেটারি বিদিশা মৈত্র। (ডান দিকে) পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।

রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতের বিদেশমন্ত্রকের ফার্স্ট সেক্রেটারি বিদিশা মৈত্র। (ডান দিকে) পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।

সংবাদ সংস্থা
রাষ্ট্রপুঞ্জ শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১১:৫৩
Share: Save:

প্রত্যাশিত ছিলই রাষ্ট্রপুঞ্জের মঞ্চ থেকে ভারতের বিরুদ্ধে তিনি সুর চড়াবেন। কিন্তু সেই আন্তর্জাতিক মঞ্চে দাঁড়িয়ে পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান যে ভাষায় ভারতকে আক্রমণ করলেন, তা এক জন রাষ্ট্রনেতার পক্ষে কোনও ভাবেই শোভন নয়। এ ধরনের মন্তব্য তাঁকে ধ্বংসের মুখে টেনে নিয়ে যেতে পারে। পাল্টা কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়ে এমনটাই জানাল ভারত।

ভারতের বিদেশমন্ত্রকের ফার্স্ট সেক্রেটারি বিদিশা মৈত্র রাষ্ট্রপুঞ্জে ইমরানের ভাষণ প্রসঙ্গে বলেন, “এটা সত্যিই দুর্ভগ্যজনক যে, পাক প্রধানমন্ত্রী গোটা বিশ্বকে আড়াআড়ি ভাবে ভাগ করে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। আমরা-ওরা, ধনী-গরিব, উত্তর-দক্ষিণ, উন্নত-উন্নয়নশীল এবং মুসলিম-অন্যান্য। তাঁর এই ভাষণ প্ররোচনামূলক। ঘৃণায় ভরা।”

পাশাপাশি তাঁর অভিযোগ, রাষ্ট্রপুঞ্জের মঞ্চকে অন্যায় ভাবে ব্যবহার করার চেষ্টা করেছেন ইমরান। যে ধরনের শব্দ ইমরান প্রয়োগ করেছেন, তার মধ্য দিয়েই তাঁর মধ্যযুগীয় মানসিকতার প্রতিফলন ঘটেছে। যা একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে একেবারেই অনভিপ্রেত।

আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারত-বিদ্বেষে ঠাসা বক্তৃতায় ইমরানের মুখে পরমাণু যুদ্ধ

ইমরান দাবি করেছেন, পাকিস্তানে কোনও জঙ্গি সংগঠন নেই! এ প্রসঙ্গে ইমরানকে কটাক্ষ করে বিদিশা বলেন, “রাষ্ট্রপুঞ্জের তালিকাভুক্ত ১৩০ জন জঙ্গি যে তাদের দেশে নেই, পাকিস্তান এটা অস্বীকার করতে পারবে? ওসামা বিন লাদেনকে যারা আশ্রয় দেয়, তাদের মুখে এই দাবি মানায় না।”

রাষ্ট্রপুঞ্জের মঞ্চে দাঁড়িয়ে আরও এক বার ভারতের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলেন ইমরান। কাশ্মীরের প্রসঙ্গ তুলে আন্তর্জাতিক মঞ্চের সহানুভূতি আদায়ের চেষ্টা করেন। কিন্তু ভারতের বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগের হাতিয়ারেই বিদ্ধ হয়েছেন ইমরান। পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিয়ে ভারত জানিয়েছে, যে দেশে সংখ্যালঘুদের অবস্থা শোচনীয়, তারা যেন ভারতকে মানবাধিকারের পাঠ পড়াতে না আসে।

আরও পড়ুন: ‘যুদ্ধ নয়, ভারত বুদ্ধ দিয়েছে’, রাষ্ট্রপুঞ্জের মঞ্চে নতুন ভারতের স্বপ্ন বিপণন মোদীর

কাশ্মীর নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে বার বার দরবার করেও যখন কোনও লাভ হয়নি, তখন রাষ্টরপুঞ্জের এই মঞ্চটাকেই যে কাজে লাগানোর চেষ্টা করবেন ইমরান, সেটা ভারত বুঝতেই পেরেছিল। কিন্তু এক জন রাষ্ট্রনেতা হিসেবে যে ভাবে তাঁর গলায় আক্রমণের সুর শোনা গিয়েছে তাতে স্তম্ভিত গোটা বিশ্ব। শুক্রবার রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় দাঁড়িয়ে আন্তর্জাতিক মহলকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন ইমরান। তিনি বলেন, “আমি কোনও হুমকি দিচ্ছি না। কিন্তু আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীকেও ভাবতে হবে ,তারা ১৩০ কোটি মানুষের ভারতীয় বাজারকে তোষণ করবে, না কি নিরাপরাধ নির্যাতিত মানুষের ন্যায়ের জন্য লড়বে। তা না হলে ভাল আশা আপনারা করতেই পারেন, কিন্তু খারাপের জন্যও তৈরি থাকুন।” এখানেই থামেননি ইমরান। শুধু আন্তর্জাতিক মঞ্চই নয়, রাষ্ট্রপুঞ্জকেও চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে তাঁর মন্তব্য, “প্রথাগত যুদ্ধ শুরু হলে যা কিছু হতে পারে। যখন দুটো পরমাণু শক্তিধর দেশ পরস্পরের মুখোমুখি এসে দাঁড়ায়, তখন ফলাফল সীমান্তেই আটকে থাকে না। এখন এটা রাষ্ট্রপুঞ্জের কাছে পরীক্ষা, তারা কী চাইছে!”

নরেন্দ্র মোদীকেও আক্রমণ করতে ছাড়েননি ইমরান। গুজরাত দাঙ্গা থেকে শুরু করে মোদীকে ফাসিস্তদের সঙ্গেও তুলনা করেছেন। ভারতে মুসলিমদের অবস্থা শোচনীয় এমনও দাবি করতে শোনা গিয়েছে ইমরানকে। আরএসএস-এর প্রসঙ্গও টেনে আনেন তিনি।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE