বালোচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ), তেহরিক-এ-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি)-এর পর পাকিস্তানের উদ্বেগ বৃদ্ধি করছে এক নতুন জঙ্গি সংগঠন। নাম দেওয়া হয়েছে ‘হরকত ইনকিলাব ইসলামি পাকিস্তান (আইআইপি)। সম্প্রতি একটি ভিডিয়ো জারি করে আইআইপি তাদের সংগঠনের কথা ঘোষণা করেছে বলে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর। উর্দু এবং পশতো দু’ভাষাতে আইআইপি তাদের ভিডিয়ো জারি করে পাকিস্তানকেই তাদের জন্ম এবং কর্মস্থান হিসাবে ঘোষণা করেছে। (যদিও সেই সব ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম।)
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলির প্রতিবেদন অনুযায়ী, নতুন সংগঠন তৈরি করেই আইআইপি ঘোষণা করে, পাকিস্তান থেকেই এই সংগঠন পরিচালনা করা হবে। শুধু তা-ই নয়, সরাসরি পাক সেনার বিরুদ্ধে যে তারা নামতে চলছে এবং পাক সেনাই যে তাদের নিশানা, তা-ও হুঁশিয়ারি দিয়েছে এই জঙ্গি সংগঠন। একেই বালোচ বিদ্রোহী এবং টিটিপি নিয়ে নাস্তানাবুদ পাকিস্তান, তার উপর আরও এক নতুন জঙ্গি সংগঠনের জন্ম পাকিস্তানের উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে।
আরও পড়ুন:
আইআইপি দাবি করেছে, পুরো পাকিস্তানে শরিয়তি আইন এবং কট্টর ইসলামীয় পন্থা চালু করবে তারা। সূত্রের খবর, গাজী শাহবুদ্দিনকে নতুন এই জঙ্গি সংগঠনের মুখও বেছে নেওয়া হয়েছে। গাজীর দাবি, অত্যাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত তাঁদের সদস্যরা। অত্যন্ত প্রশিক্ষিতও। শুধু তা-ই নয়, নিজেদের লক্ষ্যপূরণের জন্য পাকিস্তানের অন্য জঙ্গি সংগঠনগুলির সঙ্গেও হাত মেলাতে প্রস্তুত তাঁরা। মনে করা হচ্ছে, অন্য জঙ্গি সংগঠনগুলির সঙ্গে আইআইপি হাত মেলালে তাতে পাকিস্তানের বিপদ যে আরও বাড়বে তা বলাই বাহুল্য। একে বালোচ এবং টিটিপি-তে রক্ষা নেই, তার উপর আইআইপির মাথাচাড়া দেওয়া পাকিস্তানের পক্ষে খুব একটা যে শুভ সঙ্কেত নয়, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে।
উল্লেখ্য, পাকিস্তানে এমন অনেক জঙ্গি সংগঠন রয়েছে যেগুলির মধ্যে বেশ কিছু ভারতে সন্ত্রাসবাদী কর্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত বলে বার বারই অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু সে দেশে এমনও জঙ্গি সংগঠন রয়েছে যেগুলির নিশানা পাক সরকারই। তার মধ্যে একটি হল টিটিপি। এ ছাড়াও পাক সরকারের বিরুদ্ধে দীর্ঘ দিন ধরে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে বিএলএ। পঞ্জাব প্রদেশে একের পর এক টিটিপি-র হামলা, মূলত সেনাদের নিশানা বানানোর মতো ঘটনা বার বার প্রকাশ্যে এসেছে। সম্প্রতি বালোচিস্তানের বোলানে জাফর এক্সপ্রেস অপহরণের ঘটনায় বালোচ বিদ্রোহীরা দায় স্বীকার করেছেন। অভ্যন্তরীণ জঙ্গি সংগঠনগুলিকে সামলাতে যখন হিমশিম পাক সরকার, সেই সময় আরও এক জঙ্গি সংগঠনের আত্মপ্রকাশ পাক সরকারের বিপদ আরও বৃদ্ধি করবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।