বিজেপি বার বার দাবি করে এসেছে বাংলায় বেআইনি অস্ত্র কারবার হয়। এবার সেই অভিযোগেই গ্রেফতার হলেন এক বিজেপি নেতা। বিহার থেকে বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র আমদানি করে বাংলায় বিক্রি করতেন ওই নেতা। সোমবার রাতে পূর্ব বর্ধমান থেকে তাঁকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতকে মঙ্গলবার বর্ধমান আদালতে পেশ করা হলে বিচারক ধৃতের ১০ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন। বাংলায় বসে বিজেপি নেতার আগ্নেয়াস্ত্রের বেআইনি কারবার চালানোর ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই রাজনৈতিক মহলে জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সোমবার রাতে মেমারির কানাইডাঙা এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিজেপি নেতাকে বেআইনি অস্ত্র- সহ গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতের নাম গঙ্গাধর কর্মকার। ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলা পরিষদের আসনে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন বিজেরির প্রতীকে। ছিলেন বিজেপির মণ্ডল সভাপতিও। পুলিশ সূত্রে খবর, একটি সেভেন এম এম পিস্তল ও পাঁচ রাউন্ড কার্তুজ- সহ ওই বিজেপি নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জেরায় ধৃত স্বীকার করেছেন বেআইনি অস্ত্র কারবারে জড়িত থাকার কথা। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত বিজেপি নেতার বাড়ি গলসির সিমনোড়ি গ্রামে।
মেমারি থানা সূত্রে খবর, ওসি প্রীতম বিশ্বাস গোপন সূত্রে খবর পেয়েছিলেন, বিহারের মুঙ্গের থেকে বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র এনে তা পাচার করার জন্য মেমারির পালসিট সংলগ্ন কানাইডাঙা এলাকায় আসবেন গঙ্গাধর। ওসির নির্দেশ মতো মেমারি থানর সাব ইন্সপেক্টর সাবির আলি পুলিশের বিশেষ দল নিয়ে কাইনডাঙা এলাকায় উপস্থিত হন। রাতে বেআইনি অস্ত্র নিয়ে গঙ্গাধর এলাকায় পৌঁছাতেই পুলিশ তাঁকে হাতে নাতে পাকড়াও করে। বাজেয়াপ্ত করা হয় ওই আগ্নেয়াস্ত্রগুলি।
আরও পড়ুন:
এই প্রসঙ্গে বর্ধমান দক্ষিণের এসডিপিও অভিষেক মণ্ডল বলেন, ‘‘ধৃতকে হেফাজতে নিয়ে জানতে চাওয়া হবে তাঁর সঙ্গে মুঙ্গেরের অস্ত্র কারবারীদের যোগ কতটা গভীরে ও কতদিন ধরে আছে। তিনি বেআইনি আগ্নেআস্ত্রের কারবার কত দিন ধরে চালাচ্ছিলেন। সোমবার রাতে তিনি কাকে আগ্নেআস্ত্র পাচার করতে এসেছিলেন তা জানতেও জেরা করা হবে।
অন্য দিকে, বিজেপি নেতার আগ্নেয়াস্ত্র কারবারে জড়িত থাকার খবর পেয়েই সরব হয়েছে মেমারির তৃণমূল নেতৃত্ব । মেমারি- ১ ব্লক তৃণমূলে সভাপতি নিত্যানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,“এটাই বিজেপির আসল রূপ। তাই বাংলার মানুষ এদের কোনও দিনই গ্রহণ করবে না।’’ গঙ্গারামের গ্রেফতারিতে অস্বস্তিতে পড়েছে জেলা বিজেপি। বিজেপির সহ-সভাপতি মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন,“হ্যাঁ, একথা ঠিক ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপির প্রার্থী হয়ে গঙ্গাধর জেলাপরিষদ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। তবে বিজেপি করার জন্য গঙ্গাধর বাবুকে ফাঁসানো হয়েছে , না কি তিনি প্রকৃতই আগ্নেআস্ত্র কারবারে জড়িত ছিলেন তা নিয়ে যথাযথ তদন্ত হওয়া দরকার । যদি প্রমাণ হয় গঙ্গাধর সত্যিই বেআইনি আগ্নেআস্ত্র কারবারে জড়িত তবে আইন মোতাবেক তাঁকে শাস্তি ভোগ করতেই হবে।’’
গত সোমবার ছ’টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং আট রাউন্ড কার্তুজ- সহ শিয়ালদহ থেকে মালদার এক বাসিন্দাকে গ্রেফতার করেছিল কলকাতা পুলিশের এসটিএফ। পুলিশ সূত্রে খবর, বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্রগুলি তিনি বিহারের খগড়িয়া থেকে আমদানি করেছিলেন।