বুধবার, ভারতীয় সময় ভোর ৩টে ২৭ মিনিট। ন’মাস পর পৃথিবীতে পা রাখার কথা সুনীতা উইলিয়ামস এবং নভশ্চর বুচ উইলমোরের। মহাশূন্যে কেটে গিয়েছে এতগুলি দিন। আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (আইএসএস) বন্দি মাসের পর মাস। পৃথিবী থেকে তাঁদের দিকে নজর ছিল সকলের। কেমন আছেন সুনীতা, কী খাচ্ছেন, কী ভাবে মাধ্যাকর্ষণহীন জীবন যাপন করছেন, কৌতূহলের সীমা নেই মানুষের। এর মাঝেই সুনীতার ভিডিয়ো বা ছবি প্রকাশ পেলেই অনেকের চোখ আটকে যেত তাঁর চুলের দিকে।
মাধ্যাকর্ষণের অভাবে ঊর্ধ্বমুখী চুল। ভেসে বেড়ায় মাথার চার ধারে। এই নিয়ে কৌতূহলী আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও। সম্প্রতি সুনীতাকে নিয়ে কথা বলার সময়ে তাঁকে সম্বোধন করেছেন, ‘বন্য চুলের নারী’ বলে। তার পরেই যদিও তাঁর চুলের প্রশংসা করতেও ভোলেননি তিনি।

মাধ্যাকর্ষণের অভাবে ঊর্ধ্বমুখী চুল। ভেসে বেড়ায় মাথার চার ধারে —ফাইল ছবি।
সুনীতার মতো মহিলা মহাকাশচারীদের দেখে বিশ্ববাসীর মনে প্রশ্ন জাগে, চুল সামলানোর জন্য বেঁধে রাখেন না কেন তাঁরা?
নেপথ্যে রয়েছে একাধিক বৈজ্ঞানিক কারণ।
বাঁধার প্রয়োজন নেই: মাধ্যাকর্ষণ শক্তি নেই বলে মাথার চুল নীচের দিকে টান অনুভব করে না। এর ফলে ঘাড়ের কাছে উৎপাত করা অথবা চোখে-মুখে লেগে বিরক্তি উৎপাদনের মতো ঘটনা ঘটে না। তাই, চুল পিছন দিকে বেঁধে রাখার কোনও বাস্তবিক কারণই নেই।
সহজে ধোয়া যায়: মহাকাশচারীরা ড্রাই শ্যাম্পু এবং তোয়ালে ব্যবহার করেন। ফলে ছেড়ে রাখাই চুলের স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। তাতে সুবিধাও হয়। বেঁধে রাখলে সহজে ধোয়া যেত না।
বায়ুচলাচল ব্যবস্থায় শুকতে সাহায্য করে: আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের ভিতরে বায়ুর চলাচলে আর্দ্রতা বাষ্পীভূত হয়ে যায়। ফলে খুব তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যায় চুল। ব্লো ড্রায়ারের প্রয়োজন পড়ে না। চুল বেঁধে রাখলে বায়ু চলাচল হবে না গোটা মাথায়।
আরও পড়ুন:
ব্যক্তিগত পছন্দ: কিছু মহাকাশচারী তাঁদের চুল খোলা রাখতে পছন্দ করেন, কেউ করেন না। কিন্তু সামগ্রিক ভাবে চুল খোলা রাখতেই দেখা যায় অধিকাংশ মহাকাশচারীকে। পৃথিবীর মতো যেখানে সেখানে চলাফেরা করতে পারে না চুল। তাই অস্বস্তি হয় না কারও। বাকিটা ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দের উপর নির্ভর করে।
যদিও আবার চুল বেঁধে রাখার সময় এসে গেল। মাধ্যাকর্ষণের দুনিয়ায় ফিরছেন সুনীতা। পৃথিবী ছুঁয়ে ফেললেই চুল আর আগের মতো ঊর্ধ্বমুখী হবে না।
রুদ্ধশ্বাসে ঘড়ির কাঁটার দিকে নজর রাখছে গোটা পৃথিবী। স্পেসএক্সের ড্রাগন যানে চেপে নিজের গ্রহের দিকে রওনা দিয়েছেন সুনীতা ও বুচ। সকলের প্রার্থনা, ঘরের ছেলে-মেয়ে যেন সুস্থ ভাবে ঘরে ফেরেন।