Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪

একা থেকে এক লক্ষ, গ্রেটার জন্য জনসমুদ্র

দিন গড়াতেই ম্যানহাটনের রাস্তায় জনসমুদ্র। কাতারে কাতারে লোক। ছোটদের সঙ্গে সমান তালে পা মেলালো বড়রাও। পুরোভাগে অবশ্যই গ্রেটা।

পরিবর্তন: গ্রেটার কথা শুনতে ম্যানহাটনের রাস্তায় উপচে পড়েছে ভিড়। ছবি: রয়টার্স

পরিবর্তন: গ্রেটার কথা শুনতে ম্যানহাটনের রাস্তায় উপচে পড়েছে ভিড়। ছবি: রয়টার্স

সংবাদ সংস্থা
নিউ ইয়র্ক শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:৪৬
Share: Save:

সিডনি যখন গত কাল কচিকাঁচাদের বিক্ষোভে উত্তাল, নিউ ইয়র্ক তখনও ঘুমিয়ে। যদিও চোখে ঘুম নেই গ্রেটা থুনবার্গের। ১৬ বছর বয়সি সুইডিশ পরিবেশ আন্দোলনকারী গ্রেটা এখন নিউ ইয়র্কে। সিডনির ছবি দেখে উত্তেজনায় একের পর এক পোস্ট করে গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। আর জানিয়েছে, ‘শুক্রবার ভোর হওয়ার অপেক্ষা’।

দিন গড়াতেই ম্যানহাটনের রাস্তায় জনসমুদ্র। কাতারে কাতারে লোক। ছোটদের সঙ্গে সমান তালে পা মেলালো বড়রাও। পুরোভাগে অবশ্যই গ্রেটা। সামনের সপ্তাহে নিউ ইয়র্কে শুরু হচ্ছে রাষ্ট্রপুঞ্জের পরিবেশ সম্মেলন। তার আগে রাষ্ট্রনেতাদের কাছে বার্তা পৌঁছে দিতে চান আন্দোলনকারীরা, সরকার জলবায়ু পরিবর্তনকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া না পর্যন্ত, এই লড়াই চলবে। পড়ুয়ারা বলছে, ‘‘দেখিয়ে দেব আমরা, ছোটরাও বড় পরিবর্তন আনতে পারে।’’

গ্রেটাই তা দেখিয়ে দিয়েছে। গত বছর অগস্ট মাসে কেউ চিনত না সুইডিশ কিশোরীটিকে। প্রথম সংবাদ শিরোনামে আসে সে, যখন খবর হয়, সুইডিশ পার্লামেন্টের বাইরে একটি বাচ্চা মেয়ে রোজ প্ল্যাকার্ড হাতে বসে থাকে। তাতে লেখা, ‘পরিবেশের জন্য স্কুল বন্‌ধ’। কেউ তার পরিবেশ আন্দোলন নিয়ে প্রশ্ন তুললে গ্রেটা বলত, ‘‘আমার কথা শুনতে হবে না, বিজ্ঞানীদের কথা শুনুন।’’ এক-এক করে সে পাশে পায় তারই মতো আরও কিছু পড়ুয়াকে। শুক্রবার সেই সংখ্যাটা লক্ষ ছাড়িয়েছে। গোটা বিশ্বের দেড়শোরও বেশি দেশের পড়ুয়ারা একযোগে স্কুল না গিয়ে বিক্ষোভে শামিল হয়েছে গত কাল। পথে নেমেছে বড়রাও। সান ফ্রান্সিসকো ও সিয়াটলে গুগল, আমাজ়ন ও অন্য বেশ কিছু প্রযুক্তি সংস্থার বিরুদ্ধে রাস্তায় নামে তাদের কর্মীরাই। তাঁদের বক্তব্য, বিশ্ব উষ্ণায়ন নিয়ে উদাসীন মালিকপক্ষ।

গত বছর অগস্ট মাসে সুইডিশ পার্লামেন্টের বাইরে প্ল্যাকার্ড নিয়ে একা বসে রয়েছে গ্রেটা। ফাইল চিত্র

একটি সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে গ্রেটা আজ বলে, ‘‘এমন কিছু হতে পারে, কল্পনাও করিনি। তাও এত তাড়াতাড়ি, মাত্র ১৫ মাসে!’’ সরকারি ভাবে এখনও বিক্ষোভকারীদের সংখ্যা ঘোষণা করা হয়নি। গ্রেটার কথায়, ‘‘সংখ্যাটা জানতে অধীর অপেক্ষায় রয়েছি।’’

ম্যানহাটনের আজকের জনসমাবেশে শিক্ষা মন্ত্রক কোনও বাধা দেয়নি। মা-বাবারাও সম্মতি দিয়েছিল। ফলে অস্ট্রেলিয়ার মতো বাধার সম্মুখীন হতে হয়নি পড়ুয়াদের। বৃহস্পতিবার অস্ট্রেলীয় অর্থমন্ত্রী ম্যাথিয়াস করম্যান বলেছিলেন, ‘‘বাচ্চাদের ক্লাসেই মানায়, মিছিলে নয়।’’

এ পর্যন্ত ২১ জন কিশোর-কিশোরী মার্কিন সরকারের বিরুদ্ধে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে মামলা করেছে। তার মধ্যে রয়েছে গ্রেটাও। নিউ ইয়র্কের ভিড়ের উদ্দেশে গ্রেটা আজ দাবি তোলে, বিজ্ঞানীদের দেওয়া তথ্যপ্রমাণ শুনতে হবে সরকারকে। সমুদ্রের তাপমাত্রা বাড়ছে, এতে হারিকেনের সংখ্যা বাড়বে। সম্প্রতি বাহামাকে যে ভাবে ঝঞ্ঝার মুখোমুখি হতে হয়েছে, গোটা পৃথিবীকে সেই রকম ধাক্কা সামলাতে হবে। সমুদ্রের জলস্তর বাড়ছে। তাতে ডুবে যাচ্ছে বহু দ্বীপ। রাষ্ট্রনেতারা এ সব উপেক্ষা করতে পারেন না।

আজ ফোলি স্কোয়ার থেকে মাইল খানেক হেঁটে মিছিল ব্রডওয়ে হয়ে ব্যাটেরি পার্কে পৌঁছয়। বন্ধুদের সঙ্গে হেঁটেছে সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়া সুয়ানা ক্রেসপোইল। সে বলে, ‘‘স্কুল কামাই করতে হত না আমাকে, এটা এমনিই হওয়া উচিত ছিল। যদি নেতারা তাঁদের কাজটা করতেন।’’ আর এক পড়ুয়ারও হুঙ্কার, ‘‘বড়রা কিছু করছে না বলেই ছোটদের হাল ধরতে হচ্ছে!’’

অন্য বিষয়গুলি:

Activist Climate Change Greta Thunberg New York
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy