ম্যাঞ্চেস্টারের এক প্রতিবাদে রবিবার। এএফপি
বিক্ষোভ, সংঘর্ষ, লুটপাট, ধরপাকড়, কার্ফু। বর্ণবিদ্বেষ ও পুলিশি নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধে আমেরিকায় সপ্তাহভর প্রতিবাদের ছবি ছিল এটাই। কিন্তু জর্জ ফ্লয়েডের হত্যার দ্বাদশতম দিনে, ওয়াশিংটনে এ যাবৎ সবচেয়ে বড় প্রতিবাদটি ছিল শান্তিপূর্ণ। হাজার হাজার মানুষ তাতে শামিল হলেও সে মিছিলে ছিল উচ্ছ্বাস, উদ্যাপনের আনন্দ, এমনকি জয়ের সুরও। মিছিল হয় নিউ ইয়র্ক, শিকাগো, লস অ্যাঞ্জেলেস, সান ফ্রান্সিসকো, বস্টন থেকে শুরু করে ছোট ছোট প্রদেশগুলিতেও। আমেরিকা ছাড়িয়ে যা ছড়িয়ে পড়ে সিডনি থেকে লন্ডন।
শনিবার সকাল থেকেই উপচে পড়ে ওয়াশিংটনের লিঙ্কন মেমোরিয়াল ও হোয়াইট হাউসের সামনের রাস্তা, যার সদ্য নামকরণ হয়েছে ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার প্লাজ়া’। তবে হোয়াইট হাউসের দিকে এগোনোর সব পথই বন্ধ করেছিল নিরাপত্তা বাহিনী। যদিও তার প্রয়োজন ছিল না। প্রতিবাদ এতটাই শান্তিপূর্ণ ছিল, ওয়াশিংটনের ডেমোক্র্যাট মেয়র মুরিয়েল বাউসার শহর থেকে ন্যাশনাল গার্ড-সহ যাবতীয় রক্ষীবাহিনী তুলে নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। এ দিনের বিক্ষোভে শামিল হন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই কট্টর সমালোচকও। ন্যাশনাল গার্ড তুলে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাম্পও।
মেমোরিয়াল চত্বরে ছোট-বড়, সব বয়সের বিক্ষোভকারীদের হাতে ছিল প্ল্যাকার্ড। কোথাও লেখা ‘আমরা বিরক্ত’, কোথাও লেখা ‘কৃষ্ণাঙ্গের জীবনের দাম না-দিলে কারও জীবনের দাম নেই’। পুলিশ ছিল ঠিকই, তবে সংখ্যায় অনেক কম এবং ভঙ্গিও গত ১১ দিনের মতো আক্রমণাত্মক নয়। গায়ে বর্ম মাথায় হেলমেটের বদলে তারা ছিল সাধারণ পোশাকে। উত্তেজনা থিতিয়ে যেতে এ দিন বহু শহর থেকেই কার্ফু তুলে নেওয়া হয়েছে।
তবে অন্য ছবিও আছে। শনিবার পোর্টল্যান্ড ও ওরেগনে পুলিশের উপরে হামলার অভিযোগ উঠেছে। সেখানে গ্রেফতার হন ৫০ জন। সিয়াটলের ক্যাপিটল হিলে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘাতের সময়ে গ্রেনেড ছোড়ার অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। নিউ ইয়র্কের বাফেলোয় ৭৫ বছরের এক বিক্ষোভকারীকে মাটিতে ফেলে হেনস্থা করায় সাসপেন্ড করা হয়েছে দুই পুলিশকর্মীকে। যার প্রতিবাদে ৫৭ জন পুলিশকর্মী পদত্যাগ করেছেন।
ফ্লয়েড-হত্যার প্রতিবাদে এ দিন নিউ ইয়র্কের ব্রুকলিন ব্রিজ পেরিয়ে এগিয়ে যায় মিছিল। ‘বিচার বিনা শান্তি নেই’ স্লোগান তোলেন ফিলাডেলফিয়া শিল্প প্রদর্শশালায় জড়ো হওয়া বিক্ষোভকারীরা। সান ফ্রান্সিসকোতে গোল্ডেন গেট ব্রিজ অবরুদ্ধ করেন প্রতিবাদীরা। সংহতি জানাতে একযোগে বেজে ওঠে মোটরসাইকেলের হর্ন। মায়ামিতে ট্রাম্পের গল্ফ রিসর্টের বাইরে বিক্ষোভ দেখান শ’খানেক লোক। এ সবের মধ্যেই শনিবার নর্থ ক্যারোলাইনা অর্থাৎ জর্জ ফ্লয়েডের জন্মস্থানে তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে একটি গির্জায় জড়ো হন কয়েকশো মানুষ। আজ, রবিবার সকালে হিউস্টনে আনা হয়েছে ফ্লয়েডের মৃতদেহ। এখানেই তাঁর শেষকৃত্য হবে।
আমেরিকার প্রতিবাদীদের পাশে দাঁড়িয়ে শনিবার পথে নামে বিশ্বের আরও বহু দেশ। লন্ডনে বিক্ষোভ মোটের উপরে শান্তিপূর্ণ থাকলেও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের বাসভবনের সামনে পুলিশকে বোতল ছোড়ার অভিযোগ উঠেছে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে। আহত হয়েছেন ১৪ পুলিশকর্মী। রাস্তা আটকে বিক্ষোভ হয় মার্কিন দূতাবাসের সামনেও। বার্লিনে বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে গ্রেফতার হন ৯৩ জন। হামবুর্গে প্রতিবাদকারীদের উপরে পেপার স্প্রে করে পুলিশ। প্যারিসে মার্কিন দূতাবাস ও আইফেল টাওয়ারের কাছে বিক্ষোভ নিষিদ্ধ করে প্রশাসন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy