Advertisement
৩০ অক্টোবর ২০২৪
Israel Hamas Conflict

‘একটাও কুয়ো অবশিষ্ট নেই’, এক ফোঁটা পানীয় জলের খোঁজে ধ্বংসস্তূপ হাতড়ে বেড়াচ্ছেন গাজ়াবাসী

যুদ্ধবিধ্বস্ত প্যালেস্টাইনে দেখা দিয়েছে চরম জলসংকট। কোথাও পানীয় জল নেই। দিনে এক বার মাত্র জলের ট্যাঙ্ক আসে। সেই জলের জন্য দীর্ঘ লাইনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে শিশুরা।

গাজ়ার ধ্বংসস্তূপে জলের আশায় শিশুরা।

গাজ়ার ধ্বংসস্তূপে জলের আশায় শিশুরা। ছবি: রয়টার্স।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০২৪ ১৬:৩৩
Share: Save:

পরিবারকে দৈনন্দিন কাজের জন্য প্রয়োজনীয় জল এনে দেওয়ার জন্য রোজ দীর্ঘ পথ পাড়ি দেন শানবারি। কিন্তু উত্তর গাজ়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চল চষে ফেলেও কোনও কোনও দিন খালি হাতে ফিরতে হয় তাঁকে। কখনো ধ্বংসস্তূপ হাতড়েও মেলে না এক ফোঁটা জল।

পুরো নাম আহমদ আল শানবারি। তিন সন্তানের বাবা তিনি। সংবাদ সংস্থাকে শানবারি জানাচ্ছেন, জাবালিয়া উদ্বাস্তু ক্যাম্পের কাছে ইজ়রায়েল একটাও পানীয় জলের কুয়ো অবশিষ্ট রাখেনি। একটুখানি পানীয় জলের জন্য তাই হন্যে হয়ে ঘুরতে হচ্ছে তাঁদের।

অবশ্য গোটা শহর জুড়েই আর বিশেষ কিছু অবশিষ্ট নেই। ধ্বংসস্তূপের মতো মাথা তুলে দাঁড়িয়ে রয়েছে গা‌জ়া নগরী। এই জুলাইয়ের তীব্র গরমেও একটু পানীয় জলের খোঁজে সেই ধ্বংসস্তূপে হাতড়ে বেড়ায় শিশুরা। কোনও কোনও দিন খুঁজতে খুঁজতে চার ঘণ্টা কেটে যায়। তবু মেলে না পর্যাপ্ত জলের জোগান।

ভোর থাকতে তিন সন্তানকে নিয়ে বালতি হাতে জলের খোঁজে বেরোন শানবারি। দু’হাতে ভাঙা দেওয়াল, পাথর, সুড়কি সরিয়ে খুঁজে চলেন জল। ভাগ্য প্রসন্ন থাকলে অক্ষত অবস্থায় মিলতে পারে কোনও জলের কল কিংবা হোস পাইপ! দিনে এক বার মাত্র ভ্রমমাণ ট্যাঙ্ক থেকে জল সংগ্রহের সুযোগ পাওয়া যায়। সেই জলের জন্য হাতের কাছে যা পাত্র পাওয়া যায়, তা নিয়েই দীর্ঘ লাইনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে শিশুরা।

যদিও সমীক্ষা বলছে, গাজ়ায় যুদ্ধ-পরিস্থিতির আগে থেকেই ছিল জল-সঙ্কট। গাজ়ায় ভূস্তরীয় জলের ৯৭ শতাংশ দূষিত এবং পানের অযোগ্য। বিগত ১০ মাস ধরে ইজ়রায়েলের হানায় সেই পরিস্থিতি এখন চরমে পৌঁছেছে।

গত বছরের অক্টোবর থেকে গাজ়া ভূখণ্ডে লাগাতার বোমাবর্ষণ করে চলেছে ইজ়রায়েল। গাজ়া নগরী কার্যত পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তূপে। হিসাব বলছে, ইজ়রায়েলি সেনার বোমা-গোলা-ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে চার কোটি টন কংক্রিট আর ইস্পাতের স্তূপ জমেছে গাজ়ায়। রাষ্ট্রপুঞ্জের সাম্প্রতিক রিপোর্ট বলছে, এখনই যদি হামলা বন্ধ হয়, তা হলেও ওই ধ্বংসস্তূপ সরাতে প্রায় ১৫ বছর সময় লেগে যাবে! আল জ়াজ়িরার হিসাবে মৃতের সংখ্যা ৩৯,০০৬। আহত প্রায় ৮৯,৮১৮। অন্যান্য সূত্রের মতে, নিহতের সংখ্যা ইতিমধ্যেই ১,৮৭,০০০ ছাড়িয়ে থাকতে পারে। কবে থামবে এই মৃত্যুমিছিল, তার কোনও উত্তর নেই।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE