ছবি: রয়টার্স।
এ মাসেই ব্রিটেনে হওয়ার কথা জি-৭ সম্মেলন। তার আগে আজ বিশ্বের সাতটি ধনী দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রীদের নিয়ে বৈঠক বসল অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে। যোগ দিয়েছে কিছু অতিথি দেশও। ৩ এবং ৪ জুন, দু’দিন ধরে চলবে জি-৭-এর এই বৈঠক। আলোচনার প্রধান বিষয়বস্তু— করোনা অতিমারি এবং প্রতিষেধকের সমবণ্টন।
অতিমারি পরিস্থিতিতেও অনলাইন না-করে মুখোমুখি বৈঠক। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ দেশের একাংশ। এর আগে জি-৭-এর বিদেশমন্ত্রীদের বৈঠক বসেছিল লন্ডনে। তাতে অতিথি হিসেবে আমন্ত্রিত ছিলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও তাঁর দল। দুই ভারতীয় কর্তার লন্ডনে পৌঁছে কোভিড পজ়িটিভ ধরা পড়ে। অতিমারির দ্বিতীয় ঢেউয়ে ভয়াবহ ভাবে আক্রান্ত ভারত থেকে কেন আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, এই প্রশ্ন তুলে প্রবল উত্তেজনা ছড়ায় ব্রিটেনে। এ বারে ভারতকে তাই ভার্চুয়ালি যোগ দিতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। কিন্তু ব্রিটেনে একাংশের দাবি, পুরো সম্মেলনই অনলাইন করা যেত। বৈঠকে থাকছেন ব্রিটেন, আমেরিকা, কানাডা, জাপান, ফ্রান্স, জার্মানি, ইটালি ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রতিনিধিরা।
গোড়া থেকেই অতিমারি রোধে অন্যতম ভূমিকা নিয়েছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানেই সম্মেলনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। দু’দিনের বৈঠকে আলোচনা হবে স্বাস্থ্য সুরক্ষা, অনুজীবী রোধে ব্যবস্থা, ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল, ডিজিটাল হেল্থ। তবে বৈঠকের অন্যতম বিষয়বস্তু, কোভিড টিকা নিয়ে ধনী ও গরিব দেশগুলোর মধ্যে যে ব্যবধান করা হচ্ছে, তা যতটা সম্ভব মেটানো।
প্রতিষেধক সংক্রান্ত প্রচারকারী গোষ্ঠী ‘দ্য পিপল’স ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স’-এর বক্তব্য, গত ফেব্রুয়ারিতে জি-৭-এর শেষ বৈঠকে নেতারা বলেছিলেন যে করেই হোক বিশ্বে টিকা উৎপাদন ও সরবরাহ বাড়াতে হবে। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। এর মধ্যে ১০ লক্ষেরও বেশি মানুষ মারা গিয়েছেন। প্রচারকারী দলটিতে রয়েছে ‘অক্সফ্যাম’, ‘হেল্থ জাস্টিস ইনিশিয়েটিভ’-এর মতো বেসরকারি সংস্থা। তাদের দাবি, জি-৭ এর অন্তর্ভূক্ত ধনী দেশগুলো টিকাকরণে অন্তত ৭৭ গুণ বেশি সুবিধা ভোগ করছে। এই সব দেশে মে মাসে এক দিনে ৪৬ লক্ষ বাসিন্দাকে টিকা দেওয়া হয়েছে। তাদের কথায়, ‘‘টিকাকরণের হার দেখে স্পষ্ট, আগামী বছর জানুয়ারির মাসের মধ্যে এই দেশগুলির সমস্ত বাসিন্দা টিকা পেয়ে যাবেন। অথচ গরিব দেশগুলোর যা অবস্থা, তাতে আগামী ৫৭ বছরে টিকাকরণ শেষ হবে কি না, তার ঠিক নেই।’’
ব্রিটেনের স্বাস্থ্য ও সামাজিক পরিষেবা দফতর জানিয়েছে, বৈঠকে আমেরিকা, ব্রিটেন, জাপান একে অপরকে আসন্ন বিপদগুলি সংক্রান্ত তথ্য ভাগ করে নেবে। ব্রিটেনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক বলেন, ‘‘তথ্য সংগ্রহ, বিশ্লেষণ, স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্য— এ সব কাজ আরও জোরদার করা দরকার। এই অতিমারির থেকে আমাদের অনেক কিছু শিখতে হবে। যেমন, একজোটে কী ভাবে নিজের দেশবাসীর সঙ্গে -সঙ্গে বিশ্ববাসীর স্বাস্থ্য সুরক্ষিত করা যায়।’’
আগামী ১১ জুন ব্রিটেনে জি-৭-এর রাষ্ট্রনেতাদের সম্মেলন হওয়ার কথা। সেখানেও অতিমারি হবে আলোচনার মূল বিষয়। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের মুখে শোনা গিয়েছে, ভবিষ্যতে ফের অতিমারির আশঙ্কা ও প্রতিরোধ নিয়ে আলোচনা হবে। এর মধ্যে আমেরিকান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আজ জানিয়েছেন, যে ভাবে তাঁর দেশে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় টিকাকরণ চলছে, সেই গতিতেই গোটা বিশ্বের সবদেশে টিকাকরণ করা প্রয়োজন। নিজের দেশের মানুষের স্বার্থের কথা তুলে ধরেই বলেছেন, পৃথিবীর কোথাও ভাইরাসটি থেকে গেলে আমেরিকার মানুষদের আবার বিপদে পড়তে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy