Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

ঝাঁপিয়ে পড়েছে ফ্রান্স, আইএস মারতে সংবিধান সংশোধনেরও প্রস্তাব

তা সে দেশেই হোক বা বিদেশে। প্যারিসে হামলার পর ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গিদের ওপর কার্যত, ঝাঁপিয়ে পড়েছে ফ্রান্স। হামলার পর আইএস জঙ্গিদের খোঁজে ইতিমধ্যেই ফরাসি পুলিশ প্যারিস ও আশপাশের অন্তত দু’শোটি এলাকায় কার্যত, বাড়িতে বাড়িতে চালিয়েছে চিরুনি তল্লাশি। তল্লাশি চালানো হয়েছে লি, লিয়ঁ, মার্সেই ও তুলুজ শহরগুলিতে।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০১৫ ১৫:১৩
Share: Save:

তা সে দেশেই হোক বা বিদেশে। প্যারিসে হামলার পর ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গিদের ওপর কার্যত, ঝাঁপিয়ে পড়েছে ফ্রান্স।

হামলার পর ৪৮ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই সিরিয়ায় ফরাসি যুদ্ধ বিমান যত বেশি বিধ্বংসী হয়ে উঠেছে, দেশেও জঙ্গিদের খোঁজে ততটাই হন্যে হয়ে তল্লাশি চালাচ্ছে ফরাসি পুলিশ। হামলার পর আইএস জঙ্গিদের খোঁজে ইতিমধ্যেই ফরাসি পুলিশ প্যারিস ও আশপাশের অন্তত দু’শোটি এলাকায় কার্যত, বাড়িতে বাড়িতে চালিয়েছে চিরুনি তল্লাশি। তল্লাশি চালানো হয়েছে লি, লিয়ঁ, মার্সেই ও তুলুজ শহরগুলিতে। জঙ্গিদের সঙ্গে যোগসাজশ সন্দেহে ২৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গৃহবন্দি করা হয়েছে ১০৪ জনকে।

যে কোনও ভাবে আইএস জঙ্গিদের নিকেশ করতে তিনি যে মরিয়া, তা বুঝিয়ে দিয়েছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁ। কাল তাঁর ঘোষণা ছিল, ‘ফ্রান্স যুদ্ধটা শুরু করে দিয়েছে।’ আর ঘরে ও বাইরে সেই লড়াইটাকে কার্যকরী করে তুলতে আজ ফরাসি প্রেসিডেন্ট জরুরি ভিত্তিতে দেশের সংবিধান সংশোধনে পার্লামেন্টের সহযোগিতা চেয়েছেন। প্রেসিডেন্ট ওলাঁ মনে করেন, আইএস জঙ্গিদের নিকেশ করার জন্য তল্লাশি অভিযান চালানো উচিত যুদ্ধকালীন তৎপরতায়। তার জন্য কোনও আগাম ওয়ারেন্ট ছাড়াই দেশের মধ্যে কাউকে গ্রেফতার করার অধিকার দিতে হবে ফরাসি পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে। হুট করে কারও বাড়িতে ঢুকে পড়ে তল্লাশি চালানোর অধিকারও দিতে হবে। সেটা কোনও তালেবরের বাড়ি হলেও পুলিশকে সেখানে আচমকা ঢুকে পড়ে তল্লাশি চালানোর অধিকার দিতে হবে। দিতে হবে কাউকে গৃহবন্দি করে রাখার অধিকারও। তার জন্য দেশের সংবিধান সংশোধন করা প্রয়োজন। আর যত তাড়াতাড়ি সেই সংবিধান সংশোধন করা যায়, ততই ভাল। সে জন্য আজ পার্লামেন্টের যৌথ অধিবেশনে শাসক বা বিরোধী দলের সব এমপি-রই সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি। সংবিধান সংশোধনের কাজটিকে অগ্রাধিকার দিতে যাবতীয় রক্ষণশীলতার খোলস ছেড়ে তিনি তাঁদের বেরিয়ে আসার অনুরোধ জানিয়েছেন। আর সেটা খুব দ্রুত করারও অনুরোধ জানিয়েছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট। এ সব ক্ষেত্রে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর হাতে আপৎকালীন ব্যবস্থা হিসেবে বাড়তি ক্ষমতা তুলে দেওয়া যায় কি না, তা নিয়ে ফরাসি প্রেসিডেন্ট আদালতের পরামর্শ নেবেন বলেও জানিয়েছেন।

আইএস জঙ্গিদের খোঁজে তল্লাশি অভিযান জোরদার করতে দেশে ইতিমধ্যেই জারি করা জরুরি অবস্থার মেয়াদ আরও তিন মাস বাড়াতে চান ফরাসি প্রেসিডেন্ট। তার জন্য আদালতের পরামর্শ নেওয়ার পাশাপাশি পার্লামেন্টেরও সহযোগিতা চেয়েছেন প্রেসিডেন্ট ওলাঁ। যে সব ফরাসি নাগরিকের নাম সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে জড়িত থাকার জন্য রয়েছে পুলিশের খাতায়, তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া যায় কি না, বা তাদের নাগরিক অধিকারগুলি খর্ব করা যায় কি না, ফরাসি প্রেসিডেন্ট সেই বিষয়টিও ভেবে দেখতে বলেছেন পার্লামেন্টকে।

গোটা বিশ্ব থেকে আইএস-কে নির্মূল করতে আশু কী কী করণীয়, ফরাসি প্রেসিডেন্ট সে সব নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দিন কয়েকের মধ্যেই কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট ওলাঁর কথায়, ‘‘আইএস জঙ্গিরা প্রজাতন্ত্রগুলিকে ধ্বংস করতে চাইছে। কিন্তু প্রজাতন্ত্রের শক্তি অনেক বেশি। সেই শক্তির কাছে জঙ্গিরাই শেষ হয়ে যাবে। আইএস জঙ্গিরা তাদের কার্যকলাপের দিক দিয়ে একেবারেই আন্তর্জাতিক। কোনও প্রজাতন্ত্রই তাদের বন্ধু নয়। তাই তারা সিরিয়ায় বসে হামলার ছক কষে, জোট বাঁধে বেলজিয়ামে আর হামলাটা চালায় এসে আমাদের দেশ ফ্রান্সে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE