মারিনা ওভসিয়ানিকোভা ছবি সংগৃহীত।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ইউক্রেনে সেনা অভিযানের প্রতিবাদ করেছিলেন তাঁর দেশেরই প্রাক্তন টিভি সাংবাদিক মারিনা ওভসিয়ানিকোভা। সেই ‘অপরাধে’ ১০ বছর কারাদণ্ডের মুখে তরুণী। মারিনার বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর বিষয়ে ভুয়ো তথ্য ছড়ানোর অভিযোগ আনা হয়েছে।
রাশিয়ার বাসিন্দা হলেও মারিনার জন্ম ইউক্রেনে। গোটা বিশ্বের নজরে তিনি আসেন, একটি ছোট্ট ঘটনার পরে। রাশিয়ার প্রথম সারির টিভি চ্যানেল, ‘চ্যানেল ওয়ান’-এ সরাসরি সংবাদ সম্প্রচার চলাকালীন মারিনা একটি যুদ্ধ-বিরোধী প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে স্টুডিয়ো ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে পড়েন।
মারিনার বিরুদ্ধে যে চার্জ গঠন হয়েছে, সেটির ভিত অবশ্য অন্য ঘটনা। টিভির ঘটনার পর থেকে বিভিন্ন ভাবে রুশ সরকারের বিরুদ্ধে নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি। মারিনার আইনজীবী জানিয়েছেন, গত মাসে মস্কোভা নদীর তীরে ক্রেমলিনের একেবারে উল্টো দিকের রাস্তায় হাতে যুদ্ধ-বিরোধী প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন মারিনা। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ছবি পোস্টও করেন তিনি। এর পরপরই এক দিন কুকুরদের নিয়ে হাঁটতে বেরোনোর সময়ে মারিনাকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। সেই সময়ে তাঁর বিরুদ্ধে কোনও চার্জ আনা হয়নি। কয়েক ঘণ্টা থানায় বসিয়ে রেখে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল শুধু। মারিনাও ছেড়ে দেয়নি। বিষয়টি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন। লেখেন, ‘‘কুকুরদের নিয়ে হাঁটতে বেরিয়েছিলাম। বাড়ি থেকে বেরোতেই, পুলিশ এসে ধরল।’’ মস্কো ডিস্ট্রিক্ট পুলিশকে উদ্দেশ্য করে তিনি লেখেন, ‘‘এখন ক্রাসনোসেলস্কিতে অভ্যন্তরীণ মন্ত্রকের দফতরে বসে রয়েছি।’’
এর পর থেকে একাধিক বার মারিনাকে আটক করা হয়েছে। রুশ সরকারের বিরোধিতা করায় বারবার জরিমানা করা হয়েছে। গত কাল মারিনা জানান, রুশ পুলিশ জোর করে তাঁর বাড়িতে ঢুকে তল্লাশি চালায়। তখন সকাল ছ’টা হবে। এর পরে তাঁকে ধরে নিয়ে যায়। এর পরেই চার্জ গঠন।
খুব কম লোককেই রাশিয়ায় থেকে ক্রেমলিনের বিরুদ্ধে গলা তুলতে দেখা যায় (ইউক্রেন প্রসঙ্গে তা-ও মস্কো, সেন্ট পিটার্সবার্গে একাধিক মিছিল হয়েছে)। মারিনাদের সংখ্যা খুবই কম। এ রকমই আর এক জন বরিস মিন্টস। রুশ ধনকুবের। তিনি গোড়া থেকেই ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন ও পুতিনের বিরোধিতা করে এসেছেন। এ দেশের হাই-প্রোফাইল ব্যক্তিত্বদের বেশির ভাগই চুপ। সে প্রসঙ্গে মিন্টস বলেন, ‘‘ওঁরা সবাই ভয় পেয়ে আছেন।’’ ৬৪ বছর বয়সি এই ধনকুবের একটি ব্রিটিশ দৈনিককে জানান, ব্যবসায়ীদের কেউ সরকারের বিরুদ্ধে অসহিষ্ণুতা প্রকাশ করলে, তাঁর সংস্থার বিরুদ্ধে ভুয়ো অপরাধমূলক মামলা সাজানো হয় রাশিয়ায়। এতে শুধু ওই ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হন না, তাঁর পরিবার, তাঁর সংস্থার কর্মীদেরও ভুগতে হয়। তিনি বলেন, ‘‘বিরোধিতাও করতে হবে না, কোনও ব্যবসায়ী যদি এ দেশে স্বাধীন ভাবে কাজ করেন, ধরেই নেওয়া হয় তিনি বিরোধী দলের তহবিলে অর্থ ঢালছেন। ধরে নেওয়া হয় তিনি পুতিনের শত্রু।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy