—ফাইল চিত্র
আবারও একটি সুযোগ দেওয়া হল পাকিস্তানকে। আজ প্যারিসে পাঁচ দিনের ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স (এফএটিএফ)-এর শীর্ষ বৈঠকের শেষে ইসলামাবাদকে জানিয়ে দেওয়া হল, আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে জঙ্গিদের আর্থিক মদত দেওয়া বন্ধ করার ব্যাপারে নির্দেশিত পদক্ষেপগুলি করতে না পারলে তাদের কালো তালিকাভুক্ত করা হবে। যার অর্থ, আইএমএফ-সহ সমস্ত আন্তর্জাতিক সংস্থার অনুদান এবং ঋণের দরজা বন্ধ হয়ে যাবে ইমরান খান সরকারের মুখের উপর।
আপাতত ধূসর তালিকায় রয়েছে পাকিস্তান। সূত্রের খবর, আইএমএফ, বিশ্ব ব্যাঙ্ক, এডিবি, ইউরোপীয় ইউনিয়নকে বার্তা দেওয়া হয়েছে, ফেব্রুয়ারির দিকে নজর রেখে এখন থেকেই প্রস্তুতি শুরু করে দিতে। যদি সন্ত্রাসে পুঁজি জোগানের প্রশ্নে ওই সময়ের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ হয় ইসলামাবাদ, তা হলে দ্রুত নিষেধাজ্ঞা বহাল করতে হবে। সংশ্লিষ্ট এক কর্তার কথায়, ‘‘এফএটিএফ-এর পক্ষ থেকে পাকিস্তানকে বলা হয়েছে যে, আপাতত তাকে ধূসর তালিকাতেই রাখা হয়েছে। যদি ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্দেশিত লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে তারা ব্যর্থ হয়, তা হলে যা ব্যবস্থা নেওয়ার, নেওয়া হবে।’’ সংস্থাটির তরফে জানানো হয়েছে, যে ২৭টি পদক্ষেপ ইসলামাবাদকে করতে বলা হয়েছিল, তার মধ্যে মাত্র পাঁচটি করেছে তারা।
কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এ বারেই কালো তালিকার অন্তর্ভুক্ত করার কথা ছিল পাকিস্তানকে। অন্ততপক্ষে ‘আরও ধূসর তালিকা’য় (ধূসর এবং কালোর মধ্যবর্তী তালিকা) তাদের ঢোকানোর জন্য চাপ ছিল সদস্য রাষ্ট্রগুলির পক্ষ থেকে। কিন্তু মনে করা হচ্ছে, এ বারও চিন বাঁচিয়ে দিয়েছে পাকিস্তানকে। কিন্তু তাদের এটাও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, এ ভাবে আর বেশি দিন আড়াল করা যাবে না। তা হলে আন্তর্জাতিক স্তরে প্রবল চাপে পড়বে বেজিং, যার চড়া দাম দিতে এই মুহূর্তে রাজি নয় তারা।
পাক অর্থনীতির হাল খুবই খারাপ। নজর ঘোরাতে কাশ্মীর নিয়ে আবেগকে চড়ায় তুলে মুসলিম রাষ্ট্রগুলিকে পাশে টানার এবং পশ্চিমের সহানুভূতি আদায়ের জন্য গত দেড় মাস ধরে লড়ছেন পাক প্রধানমন্ত্রী। একাধিক বার ভারতের বিরুদ্ধে পরমাণু যুদ্ধের প্রচ্ছন্ন হুমকিও দিয়েছেন। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি বলেই মনে করছে কূটনৈতিক শিবির। আইএমএফ-এর একটি বড় অঙ্কের ঋণের জন্য অপেক্ষায় রয়েছে ইসলামাবাদ। ওই টাকা পেলে সাময়িক ভাবে হলেও দেশকে চাঙ্গা করা সম্ভব। কিন্তু কালো তালিকায় ঢুকে গেলে তা আর হবে না।
তবে প্রশ্ন উঠছে যে, মমল্লপুরমে চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং-এর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সন্ত্রাসবাদে অর্থ জোগান বন্ধ নিয়ে বিস্তারিত কথা বলার পরেও এবং এফএটিএফ-কে পাক-বিরোধী সংশ্লিষ্ট বহু তথ্য ভারত দেওয়ার পরেও ২০১৯-এর মধ্যে কেন পাকিস্তানকে কালো তালিকায় আনা গেল না? তুরস্ক এবং মালয়েশিয়া বাদে এফএটিএফ-র অধিকাংশ রাষ্ট্রই যেখানে ভারতের পাশে ছিল।
চিন এই বিষয়টি নিয়ে প্যারিসের ওই শীর্ষ বৈঠকে কী কৌশল নিয়েছে, সে দিকে সতর্ক নজর রাখছে সাউথ ব্লক। আর এই চার মাসের মধ্যে জইশ বা লস্করদের কী ভাবে পুঁজি জোগাচ্ছে পাক সরকার, তা নিয়ে আরও তথ্য এফএটিএফ-কে পাঠানো হবে বলে জানা গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy