ফাইল চিত্র।
টিভিতে ছেলেকে দেখে প্রথমে বিশ্বাস হয়নি বাবা জারাওয়ার খানের। ভেবেছিলেন, ভুল হচ্ছে কোথাও। কিন্তু পরে নিশ্চিত হন, সীমান্ত পেরনোর অপরাধে যাঁকে ভারতীয় জেলে আটকে রাখা হয়েছে, সেই বছর একুশের যুবক আদতে তাঁর ছেলে আবদুল্লা। এর পরেই তিনি পাক মানবাধিকার কমিশনের কাছে ছেলেকে দেশে ফেরানোর আর্জি জানান।
কিন্তু হঠাত্ কেন পাক-ভারত সীমান্ত পেরতে গেলেন ওই যুবক?
জারাওয়ারের দাবি, তাঁর ছেলে বলিউডের নায়ক-নায়িকা অন্ত প্রাণ। তাঁদের নিয়ে সকল সময় মাতামাতি করেন। প্রিয় সেই তারকাদের সঙ্গে দেখা করতেই হয়তো আবদুল্লা সীমান্ত পেরিয়েছেন। কিন্তু, শুধু সেই টানেই কি পাসপোর্ট-ভিসা ছাড়া সীমান্ত পেরনো যায়? জারাওয়ার জানিয়েছেন, আবদুল্লা মানসিক ভাবে খুব একটা স্বাভাবিক নন। তাই এমন কাণ্ড করে ফেলাটা তাঁর কাছে অস্বাভাবিক নয়।
পাকিস্তানের সোয়াট প্রদেশে আবদুল্লাদের বাড়ি। গত ২৪ মে বাড়ির কাউকে কিছু না বলে বেরিয়ে পড়েছিলেন তিনি। অনেকটা রাত হয়ে গেলেও ছেলে বাড়ি না ফেরায় পরিবারের লোকজন তাঁর খোঁজ শুরু করেন। কিন্তু, কোথাও পাওয়া যায়নি। এর পরের দিন স্থানীয় একটি টিভি চ্যানেলের খবরে দেখা যায়, বৈধ কাগজপত্র ছাড়া ওয়াঘা সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ঢোকার অপরাধে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে আপাতত তাঁর ঠিকানা অমৃতসর জেল।
কিন্তু, ওয়াঘার মতো হেভিওয়েট সীমান্ত বৈধ কোনও কাগজপত্র ছাড়াই কী ভাবে পেরোলেন ওই যুবক?
আরও পড়ুন: জোট-সরকার গঠনে বাধা বিরোধীদের
ওয়াঘা সীমান্তে প্রতি দিন সন্ধ্যায় দু’দেশের বাহিনীই সৌজন্য-প্যারেড করে। সেই অনুষ্ঠান দেখতে প্রচুর দর্শক হাজির হন। তাঁদের বসার জন্য গ্যালারি জাতীয় বিশেষ আসনের ব্যবস্থাও থাকে। অমৃতসর পুলিশের দাবি, ওই গ্যালারির পিছন দিক দিয়ে কোনও ভাবে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ঢুকে পড়ে আবদুল্লা। কিন্তু, বেশি দূর এগনোর আগেই তিনি নিরাপত্তারক্ষীদের হাতে ধরা পড়ে যান। ২৫ মে ওই যুবককে গ্রেফতার করার পরে দিন তাঁকে আদালতে তোলা হয়। সেখানে বিচারক তাঁকে জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। এর পর থেকেই অমৃতসর জেলই আবদুল্লার ঠিকানা। অমৃতসরের ঘারিন্ডা থানার পুলিশ আধিকারিক সুখরাজ সিংহ ধিলোন জানান, ওই যুবকের সঙ্গে কথাবার্তা বলে তাঁর মনে হয়েছে, আবদুল্লা মানসিক ভাবে অসুস্থ এবং খুবই সাধাসিধে। তাঁকে ওই যুবক জানিয়েছেন, বলিউড তারকাদের সঙ্গে দেখা করতেই তিনি সীমান্ত পেরিয়ে ছিলেন। যদিও বিএসএফ এ প্রসঙ্গে এখনও পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করেনি।
ছেলের মুক্তির আর্জি জানিয়ে গত শনিবার সাংবাদিক বৈঠক করেন জারওয়ার। ওই বৈঠকে তিনি জানান, আবদুল্লা কোনও অসত্ উদ্দেশ্য নিয়ে সীমান্ত পেরোননি। মানসিক ভাবে অস্বাভাবিক আবদুল্লাকে দেশে ফেরানোর আর্জি জানিয়ে পাক মানবাধিকার কমিশনের কাছে তিনি ইতিমধ্যেই চিঠি লিখেছেন। তবে ‘বলি-পাগল’ আবদুল্লার মুক্তি এ ভাবে মিলবে কি না তা নিয়ে চিন্তায় পাক-প্রশাসন। যদিও সরকারি ভাবে কোনও বিবৃতি তারা এখনও দেয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy