মাক্রঁ-পত্নী ব্রিজিত মারি-ক্লদ।
নব্বইয়ের গোড়ার দিক। তিনি তখন চল্লিশের শিক্ষিকা। স্বামী, তিন সন্তান নিয়ে ঘোরতর সংসারী। ব্রিজিত মারি-ক্লদ মাক্রঁ। চেক বংশোদ্ভূত ফরাসি লেখক মিলান কুন্দেরার নাটক ‘জাক অ্যান্ড হিজ মাস্টার’ মঞ্চস্থ হবে। ছাত্র-ছাত্রীদের শেখানোর ভার পড়েছিল তাঁর উপর। বছর পনেরোর কিশোরটি তখন তাঁর কাছে সটান চলে এসেছিল সাহায্য চাইতে। ইমানুয়েল মাক্রঁ-র মেধা দেখে উচ্ছ্বসিত হয়েছিলেন শিক্ষিকা।
উচ্ছ্বসিত ছাত্রটিও। ঠিক দু’বছর পরে প্রস্তাবটা আসে তার কাছ থেকেই। মুগ্ধতা তত দিনে প্রেমে বদলেছে। শিক্ষিকা ২৫ বছরের বড়। কিন্তু ইমানুয়েল রাখঢাক না করেই বলেছিল, ‘‘তুমি যা-ই করো না কেন, আমি তোমাকেই বিয়ে করব।’’ প্রথমে তেমন আমল না-দিলেও ইমানুয়েলের জেদের কাছে শেষমেশ হার মানতে হয়েছিল ব্রিজিতকে। ২০০৬ সালে ব্যাঙ্কার স্বামীকে ডিভোর্স করে মাক্রঁ-র হাত ধরলেন। সেই থেকে প্রতিটি পদক্ষেপেই সঙ্গে তিনি। আর কয়েক দিন পরে হবেন ফার্স্ট লেডিও।
মাস খানেক আগে ভোটের প্রচারপর্ব তখন তুঙ্গে। একটি পত্রিকায় খোলামেলা সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন ব্রিজিত। সেখানে বলেন, ‘‘একদম প্রথমে বিষয়টাকে ছেলেমানুষি ভেবেছিলাম। স্কুল শেষ করে উচ্চশিক্ষার জন্য প্যারিস এসেছিল ইমানুয়েল। পড়া শেষে ফিরে এসেছিল আমার কাছে। একটা সময় আমিও আর ফেরাতে পারিনি ওকে।’’ ব্রিজিতের আগের পক্ষের তিন সন্তানই প্রতিষ্ঠিত এখন। তাঁদের বহু দিন আগেই দত্তক নিয়েছেন মাক্রঁ।
স্ত্রীরা যখন বড়
সচিন তেন্ডুলকর ও অঞ্জলি বয়সের তফাত ৬
সইফ আলি খান ও অমৃতা সিংহ (পরে বিচ্ছিন্ন)। তফাত ১২ বছর
টিনা টার্নার ও আরউইন বাখ বয়সের তফাত ১৬
ইভা মেন্ডেস ও রায়ান গসলিং বয়সের তফাত ৬
শাকিরা ও জেরার্দ পিকে বয়সের তফাত ১০
তফাত যখন বেশি
রিচার্ড গ্যেয়ার ও আলেহান্দ্রা সিলভা। বয়সের তফাত ৩৪
রুপার্ট মার্ডক ও জেরি হল বয়সের তফাত ২৫
মাইকেল ডগলাস ও ক্যাথরিন জিটা-জোনস। তফাত ২৫ বছর
ডোনাল্ড ট্রাম্প ও মেলানিয়া বয়সের তফাত ২৪
দিলীপ কুমার ও সায়রা বানু বয়সের তফাত ২৩
এই অসমবয়সি প্রেম আর বিয়ে নিয়ে অবশ্য ফরাসি সংবাদমাধ্যমে এক সময় কম হাসাহাসি হয়নি। কিন্তু সেই সংবাদমাধ্যমই এখন বলছে, এত বছর ধরে ব্রিজিতের সঙ্গে সম্পর্কের রসায়নই প্রতিদ্বন্দ্বী মারিন ল্য পেনের থেকে এগিয়ে রেখেছিল মাক্রঁকে। ব্রিজিতের বক্তব্য, বিষয়টা উল্টো হলে এত কথা হত না। ডোনাল্ড ট্রাম্প আর মেলানিয়ারও বয়সের তফাত এতটাই। কিন্তু ট্রাম্প পুরুষ বলে কোনও কথা হয় না। তিনি মহিলা, তাই সব তির্যক মন্তব্য তাঁকে ঘিরেই।
ভোটের ফল বেরনোর পরে স্বামীর পাশেই ব্রিজিতকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছে সংবাদমাধ্যম। এত দিন স্বামীর প্রতিটি প্রচার পর্ব তিনি সামলেছেন সুষ্ঠু ভাবে। কখনও বক্তৃতা ঠিক করে দিয়েছেন। কখনও প্রচারকৌশল বাতলেছেন। ৩৯ বছরের হবু ফরাসি প্রেসিডেন্ট জানিয়ে দিয়েছেন, খুব শীঘ্রই স্ত্রীকে প্রশাসনিক পদ দেবেন তিনি। বিনা পারিশ্রমিকে দেশের সেবা করবেন ব্রিজিত।
নতুন পদ পেলে কী করবেন? একটুও না ভেবে ৬৪ বছরের হবু ফার্স্ট লেডি বললেন, ‘‘বঞ্চিত তরুণ প্রজন্মের জন্য কিছু করতে চাই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy