ব্যাঙ্ককে মেয়ের স্কুলে শুক্রবার সকালে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ছিল। সেখানেই গিয়েছিলেন প্রবাসী ভারতীয় প্রেমকিশোর মহান্তি। দুপুর নাগাদ আচমকাই মাথাটা ঘুরে যায় ৪৪ বছরের মহান্তির। ধপ করে চেয়ারে বসে পড়েন তিনি। পায়ের নীচের মাটি কেঁপে ওঠে। তার পরেই শুরু হয় স্কুল কর্তৃপক্ষের ঘোষণা। এখনও শুক্রবার দুপুরের কথা ভাবলে চমকে উঠছেন মহান্তি। একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে নিজের সেই অভিজ্ঞতার কথা শুনিয়েছেন তিনি।
মেয়ের স্কুলে প্রত্যেক ক্রীড়া প্রতিযোগিতাতেই তিনি যান। শুক্রবারও তেমনই গিয়েছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘হঠাৎ মাথাটা ঘুরে গেল। বাধ্য হয়ে চেয়ারে বসে পড়লাম। দেখি মাথার উপর আলোগুলো দুলছে। চেয়ারগুলো কাঁপছে।’’ কিছু বোঝার আগেই স্কুল কর্তৃপক্ষ ঘোষণা শুরু করেন। বাচ্চাদের নিয়ে অভিভাবকদের মাঠে চলে যেতে বলেন। তবে হুঁশিয়ারি দেন, ভুলেও সামনের রাস্তায় যাওয়া চলবে না। কারণ সেই রাস্তার ও পারে রয়েছে বহুতল। মহান্তি জানান, রাস্তার ও পারে বহুতলের দিকে তাকিয়ে ভয়টা বেড়ে গিয়েছিল তাঁর। তাইল্যান্ডে প্রায় সব বহুতলের মাথায় থাকে সুইমিং পুল। ভূমিকম্পের জেরে সেই পুল থেকেই ছলকে পড়ছে জল। মহান্তির কথায়, ‘‘জলপ্রপাতের মতো বহুতলের মাথা থেকে লাফিয়ে পড়ছে জল।’’
ব্যাঙ্ককের সুখুমভিতে পাঁচ বছরের কন্যা এবং ৪২ বছরের স্ত্রীকে নিয়ে থাকেন মহান্তি। তিনি জানিয়েছেন, এখন তাঁরা সকলেই ঠিক আছেন। ভূমিকম্পের পরেই বহুতলগুলি খালি করে দেয় প্রশাসন। মানুষজনকে সিঁড়ি দিয়ে রাস্তায় নেমে আসতে বলা হয়। মহান্তি জানান, আফটারশকের উপর নজর রাখতে বলা হয় তাঁদের। শেষ পর্যন্ত বিপন্মুক্ত বুঝে প্রশাসনের কর্তারা বহুতলগুলি পরখ করেন। তার পরেই যে যার ফ্ল্যাটে ফিরে যান। প্রবাসী ভারতীয় যুবক জানিয়েছেন, ব্যাঙ্ককে ছোট বাড়িগুলিতে তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। উঁচু বহুতলগুলিতে ফাটল দেখা দিয়েছে। কিছু বহুতলের পাইপ ফেটে গিয়েছে।
তাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাঙ্ককেও ‘জরুরি অবস্থা’ ঘোষণা করা হয়েছে শুক্রবার। ওই শহরে একটি নির্মীয়মাণ বাড়ি ভেঙে পড়ে আট জনের মৃত্যু হয়েছে। সেখানে আটকে পড়েছিলেন শতাধিক মানুষ। ব্যাঙ্ককে মেট্রো এবং রেল পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে।