২০২২ সালে দুই থেকে আড়াই হাজার রুশ মহিলা আর্জেন্টিনা এসেছেন। তাঁদের বেশির ভাগই ছিলেন অন্তঃসত্ত্বা। প্রতীকী ছবি।
সন্তানের জন্ম দিতে অন্য কোনও দেশে যাওয়া ও সদ্যোজাতের জন্য সে দেশের দ্বিতীয় নাগরিকত্ব নেওয়ার প্রচলন রুশদের মধ্যে আছেই। বিষয়টি রুশ সমাজে বেশ চেনা ঘটনা। কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এই হিড়িক আরও বেড়েছে। যুদ্ধ শুরু হওয়া ইস্তক বহু দেশ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে রুশদের উপরে। পশ্চিমের কোনও দেশে যাওয়া কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এই অবস্থায় পথ দেখাচ্ছে আর্জেন্টিনা।
জানুয়ারিতে ১১ মাসে পড়েছে ইউক্রেনের যুদ্ধ। বছর ঘুরতে আর বেশি দেরি নেই। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে আর্জেন্টিনায় ‘রাশিয়ান বার্থ টুরিজ়ম’ শুরু হয়েছে। আর্জেন্টিনা এত পছন্দের দেশ কারণ এখানে যেতে রুশদের ভিসা লাগে না। একটানা ৯০ দিন থাকা যায়। থাকার জন্য অনুমতিপত্র পাওয়াও বেশ সহজ।
বুয়েনস আইরেসের একটি হাসপাতালের মাতৃত্বকালীন ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন পোলিনা চেরেপোভিৎস্কায়া। তরুণী বলেন, ‘‘দারুণ ব্যাপার কিন্তু। আমার আগে আরও অন্তত ৮ জন লাইনে রয়েছেন।’’ এই জানুয়ারিতেই সন্তানের জন্ম দিয়েছেন পোলিনা। প্রশাসনের তরফে জানা যাচ্ছে, তিনি ছাড়াও এ মাসে আরও কয়েকশো রুশ মহিলা মা হয়েছেন এ দেশে। এই সব শিশু আর্জেন্টিনার নাগরিকত্ব পাবে।
পশ্চিমের দেশগুলি রাশিয়াকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে রেখেছে। কিন্তু দক্ষিণ আমেরিকার দেশ আর্জেন্টিয়ায় প্রবেশে রুশদের জন্য ভিসার প্রয়োজন নেই। আর্জেন্টিনার রুশ দূতাবাসের এক শীর্ষস্থানীয় আধিকারিক জর্জি পোলিন জানিয়েছেন, ২০২২ সালে দুই থেকে আড়াই হাজার রুশ মহিলা আর্জেন্টিনা এসেছেন। তাঁদের বেশির ভাগই ছিলেন অন্তঃসত্ত্বা। সন্তানের জন্ম দিতেই এসেছিলেন তাঁরা। পোলিন জানিয়েছেন, তাঁর অনুমান সঠিক হলে ২০২৩-এ এই সংখ্যাটা ১০ হাজার ছাড়িয়ে যাবে।
এই ‘আর্জেন্টিনিয়ান’ বাচ্চাদের অনেকের বাবা-মাও এখন আর্জেন্টিনার নাগরিকত্ব চেয়ে আবেদন জানানোর কথা ভাবছেন। এর অনেক কারণ রয়েছে। প্রথমত, এ দেশের নাগরিকত্ব নিতে হলে রুশ নাগরিকত্ব ছাড়তে হয় না। দ্বৈত নাগরিকত্ব বৈধ। আর্জেন্টিনিয়ান পাসপোর্টে ১৭১টি দেশে স্বল্পমেয়াদি সফরের জন্য ভিসা লাগে না। এর মধ্যে রয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সব দেশ, ব্রিটেন, জাপান। তা ছাড়া, আর্জেন্টিনার পাসপোর্টে আমেরিকার দীর্ঘমেয়াদি ভিসা পাওয়া তুলনায় কম কঠিন।
ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ শুরুর আগে রুশদের জন্য পৃথিবীর ৮০টি দেশ ভিসা-মুক্ত ছিল। কিন্তু বর্তমানে যা পরিস্থিতি, তাতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরোধী অর্ধেক বিশ্ব। রুশদের জন্য বিদেশ সফর কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় আর্জেন্টিনার পাসপোর্ট জাদুকাঠির কাজ করছে। শোনা যাচ্ছে, আবেদনের দু’বছরের মাথাতেই কোনও ব্যক্তি নাগরিকত্ব পেয়ে যেতে পারেন। অতএব আর্জেন্টিনা পাড়ি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy