প্রত্যাবর্তন। (বাঁ দিকে) প্রায় দেড় শতক আগের নজির ছুঁলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। গ্রোভার ক্লিভল্যান্ড (ডান দিকে)। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
এ ভাবেও ফিরে আসা যায়! রাজনৈতিক প্রত্যাবর্তনের এক অনন্যপ্রায় নজির গড়লেন দু’বছর পরে আশির কোঠায় পা দিতে চলা ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে আমেরিকার ইতিহাসে এই ঘটনাকে পুরোপুরি নজিরবিহীন বলা যাবে না। আধুনিক আমেরিকার ইতিহাস খুঁজলে দেখা যাবে, অতীতে মাত্র এক বারই এক প্রেসিডেন্ট ভোটে পরাজিত হয়েও পরের নির্বাচনে জয়ী হয়ে হোয়াইট হাউসে গিয়েছিলেন। সে অবশ্য ১৩২ বছর আগের ঘটনা। দেড় শতক পরে আমেরিকার দ্বিতীয় প্রেসিডেন্ট হিসাবে ‘পরাজিত হইয়াও বিজয়ী’ হলেন ডোনাল্ড।
ফ্লরিডায় বিজয়-ভাষণ দিতে উঠে ট্রাম্পকে পাশে নিয়ে আমেরিকার হবু ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স বলেন, “দেশের ইতিহাসে আমরা সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক প্রত্যাবর্তনের সাক্ষী রইলাম।” ‘অভূতপূর্ব’ জয়ে উচ্ছ্বসিত ট্রাম্পও বললেন, “আমরা আমাদের সমালোচকদের ভুল প্রমাণিত করতে পেরেছি।”
আট বছর আগে, ২০১৬ সালে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারি ক্লিন্টনকে হারিয়ে প্রথম বারের জন্য হোয়াইট হাউসে ঢোকার ছাড়পত্র পেয়েছিলেন ট্রাম্প। কিন্তু চার বছর পরে, ২০২০ সালে ডেমোক্র্যাট জো বাইডেনের কাছে হার মানতে হয়েছিল তাঁকে। তার পর বিতর্কবিদ্ধ হয়ে, একের পর এক মামলায় অভিযুক্ত হয়েও পুনরায় লড়াইয়ের ময়দানে নামার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। রিপাবলিকান পার্টিতে অন্য প্রতিদ্বন্দ্বীদের সরিয়ে ডেমোক্র্যাটদের মুখোমুখি হন তিনি। ভোটযুদ্ধের চূড়ান্ত পর্বেও ডেমোক্র্যাট প্রার্থী তথা যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলাকে হারিয়ে জয়ী হলেন ট্রাম্প। অন্তত খান পাঁচেক সমীক্ষাকে ভুল প্রমাণিত করে দ্বিতীয় বারের জন্য আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন তিনি।
ট্রাম্পের রাজনৈতিক জীবনের রেখচিত্র অন্য অনেকের মতো খুব একটা মসৃণ নয়। ব্যবসার চেনা অঙ্গন ছেড়ে রাজনীতির আনকোরা ময়দানে পা রেখেছিলেন তিনি। সঙ্গে ছিল অতীত জীবনের নানা বিতর্ক। ২০১৬ সালের নির্বাচনে অনেককে খানিক চমকে দিয়েই প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন তিনি। ২০২০ সালে বাইডেনের কাছে হার মানতে হয় তাঁকে। তবে এই পরাজয় সহজে মেনে নিতে পারেননি তিনি। চার বছর পরে ফের জয়ের স্বাদ পেলেন তিনি। এক কথায়, উত্থানের পর পতন, তার পর আবার উত্থানের সাম্প্রতিকতম উদাহরণ হয়ে রইলেন সোনালি চুল, নীল স্যুট, লাল টাইয়ের এই রাজনীতিক।
ট্রাম্পের আগে আমেরিকায় প্রত্যাবর্তনের নজিরটি যিনি গড়েছিলেন, তাঁর নাম গ্রোভার ক্লিভল্যান্ড। নিউ ইয়র্কের এই ডেমোক্র্যাট ১৮৮৪ সালে খুব অল্প ব্যবধানে জয়ী হয়ে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন। ১৮৮৮ সালে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোট (পপুলার ভোট) বেশি পেয়েও হেরে যান তিনি। কিন্তু তার পর রাজনীতি থেকে নিজেকে সরিয়ে নেননি তিনি। ১৮৯২ সালে রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দ্বী বেঞ্জামিন হ্যারিসনকে হারিয়ে পুনরায় জয়ী হন তিনি। ১৩২ বছর আগে ডেমোক্র্যাট ক্লিভল্যান্ড যে নজির গড়েছিলেন, এ বার সেই একই নজির গড়লেন রিপাবলিকান ট্রাম্প। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল যাই হোক, অন্তত এ ক্ষেত্রে যুযুধান দুই দলের ফল ‘টাই’ হল।
গত সাড়ে তিন দশকে জর্জ বুশ (সিনিয়র), বিল ক্লিন্টন, জর্জ বুশ (জুনিয়র), এবং বারাক ওবামা প্রেসিডেন্ট হিসাবে সর্বোচ্চ আট বছরের মেয়াদ পূরণ করেছেন। ২০২৮ পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট পদে থাকলে ট্রাম্পও ছুঁয়ে ফেলবেন তাঁদের। তবে টানা ক্ষমতায় থাকা হল না তাঁর। চার বছরের বিরতি নিয়ে ফের বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত সাদা বাড়িতে ফিরতে চলেছেন ট্রাম্প।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy