ছবি রয়টার্স।
অতিসংক্রামক ডেল্টা স্ট্রেনের ভয়ে কাঁপছে গোটা বিশ্ব। এর মধ্যেই আশার আলো দেখাচ্ছে এক নয়া অনুসন্ধান। ‘নেচার’ পত্রিকায় প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, শক্তির শীর্ষে পৌঁছেছে করোনাভাইরাস। নিজের অস্ত্রে আর শান দেওয়ার ক্ষমতা নেই। আরও ধার দিতে গেলে ভাইরাসেরই ঢাল-তলোয়ার ভাঙবে!
গত দেড় বছরে ক্রমাগত মিউটেশন ঘটিয়েছে নভেল করোনাভাইরাস বা সার্স-কোভ-২। আলফা, বিটা, গামা, ডেল্টা— একাধিক ‘ভ্যারিয়্যান্ট অব কনসার্ন’ তৈরি করেছে। সম্প্রতি পেরুতে ল্যাম্বডা স্ট্রেনের সন্ধান মিলেছে। সেটিকে ‘ভ্যারিয়্যান্ট অব ইনটেরেস্ট’ তালিকায় নজরবন্দি রাখা হয়েছে। বিজ্ঞানীদের দাবি, এর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ডেল্টা। এর বেশি আর শক্তি বাড়াতে পারবে না ভাইরাস। সে-ও এ বার ক্লান্ত।
বিষয়টা এ রকম: গত দেড় বছরে সার্স-কোভ-২ তার ‘তলোয়ার’ বা স্পাইক প্রোটিনের সজ্জাবিন্যাস ও গঠন ক্রমাগত বদলেছে এবং নয়া মিউটেটেড স্ট্রেন তৈরি করেছে। আর এ ভাবেই মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে লাগাতার ধোঁকা দিয়েছে সে। নেচার-এ প্রকাশিত গবেষণাপত্রটির সঙ্গে যুক্ত অন্যতম বিজ্ঞানী তথা আমেরিকার স্ক্রিপস রিসার্চ ট্রান্সলেশনাল ইনস্টিটিউটের কর্তা এরিক টোপলের কথায়, ‘‘সব ক’টি স্ট্রেনের মধ্যে ডেল্টাই সবচেয়ে খতরনাক।’’ এ বিষয়ে সমর্থন জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-ও। কিন্তু এখানেই এর শেষ বলে মনে করছেন তাঁরা। এরিকের সঙ্গেই ওই গবেষণায় ছিলেন ইটালির ভাইরোলজিস্ট, পেনসিলভ্যানিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক রবার্টো বুরিয়োনি। তিনি বলেন, ‘‘আমরা গবেষণায় যা দেখছি, তাতে বলা যায়, সার্স-কোভ-২-এর ডেল্টা স্ট্রেন খুব সম্ভবত এমন অবস্থায় পৌঁছে গিয়েছে, তার স্পাইক প্রোটিনে আর মিউটেশন ঘটানো সম্ভব নয়। ছোটখাট বদলও নয়। এটাই হয়তো ভাইরাসের সর্বশেষ রূপ। বেশ কয়েক বছর পরে হয়তো সামান্য বদল হবে। যেমন ফ্লু ভাইরাসের ক্ষেত্রে হয়। তাই ফ্লু-এর টিকা নির্দিষ্ট সময় অন্তর আপডেট করতে হয়।’’
কিন্তু আপাতত চিন্তা ডেল্টা স্ট্রেনকে সামলানো। হু জানিয়েছে, অন্তত ৮৫টি দেশে ছড়িয়েছে ডেল্টা। আলফা স্ট্রেন মিলেছে ১৭০টি দেশে। বিটা পাওয়া গিয়েছে ১১৯টি দেশে, ৭১টি দেশে গামা। বিজ্ঞানীদের অনুমান, আপাতত বিশ্ব জুড়ে তাণ্ডব চালাবে ডেল্টাই। একে রুখতে হলে একমাত্র পথ টিকাকরণ। তাতেও হয়তো সংক্রমণ ঠেকানো যাবে না। কিন্তু মৃত্যুর মতো পরিণতির আশঙ্কা কম। টিকা নেওয়া থাকলে বাড়াবাড়ি কম হবে বলেই মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। দ্রুত টিকাকরণ সেরে ফেলার পরামর্শ দিচ্ছেন তাঁরা।
ও দিকে, করোনার উৎস সন্ধানে নেমে আমেরিকার বিজ্ঞানীরা দেখছেন অনেক তথ্যই উধাও। গোড়ার দিকে কিছু ভাইরাস নমুনা দিয়েছিলেন চিনা বিজ্ঞানীরা। দেখা যাচ্ছে, ডেটাবেস থেকে কেউ বা কারা সেগুলি মুছে দিয়েছে। সিয়াটলের ফ্রেড হাচিনসন ক্যানসার সেন্টারের বিজ্ঞানী জেস ব্লুম জানিয়েছেন, চিন থেকে সংগৃহীত গোড়ার দিকের নমুনাগুলি আমেরিকার ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেল্থ’-এর ডেটাবেসে ছিল। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে সেগুলি ডিলিট করে দেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy