ছবি: রয়টার্স।
ভয়াবহ আগুনের গ্রাসে এর আগেও পুড়েছে তাঁর ঘরবাড়ি। নতুন করে সব কিছু তৈরি করে ফের শুরু হয়েছিল পথ চলা। কিন্তু আরও এক বার স্বামী-সন্তান আর পোষ্যদের নিয়ে বাড়ি ছাড়তে হয়েছে মধ্যবয়সি অলিভারকে। আশ্রয় নিতে হয়েছে অস্থায়ী শিবিরে। করোনা-আতঙ্কের মধ্যেও আপাতত সেখানেই থাকতে বাধ্য হচ্ছেন ওরেগনের এই বাসিন্দা। কারণ সেই সর্বগ্রাসী দাবানল। আশ্রয় শিবিরে বসেই অলিভার বললেন, ‘‘এক বার করে সব কিছু ধ্বংস হবে, আবার নতুন করে শুরু করতে হবে। সত্যিই খুব ক্লান্ত লাগছে এ বার।’’
ওরেগন, ওয়াশিংটন আর ক্যালিফর্নিয়া— আমেরিকার পশ্চিম অংশের এই তিন প্রদেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলই এখন ভয়াবহ দাবানলের কবলে। গত কয়েক দিনে পুড়ে খাক হয়ে গিয়েছে প্রচুর সম্পত্তি। আপাতত তিন প্রদেশ মিলিয়ে মারা গিয়েছেন মোট ৩১ জন। যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর খবর এসেছে ক্যালিফর্নিয়া থেকে। ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে সেখানে। ওয়াশিংটনে মারা গিয়েছেন এক জন। বাকি সব মৃত্যুই ওরেগনের।
বাড়ি থেকে শেষ মুহূর্তে বেরোতে না পেরেই পুড়ে মারা গিয়েছেন অনেকে। কিন্তু মৃত্যুর থেকেও প্রশাসনকে এখন বেশি ভাবাচ্ছে নিখোঁজের সংখ্যা। ওরেগনেই এখনও পর্যন্ত খোঁজ নেই বহু বাসিন্দার। ফলে মৃতের সংখ্যা হু হু করে বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। টানা ক’দিনের আগুনে বাতাস বিষাক্ত। স্বাভাবিক ভাবে শ্বাস নিতে পারছেন না বহু মানুষ। ওরেগনের বিভিন্ন এলাকায় দরজায় মোটা তোয়ালে ভিজিয়ে রেখে ধোঁয়া আটকাতে হচ্ছে।
ওরেগনের পোর্টল্যান্ড-সহ বেশ কয়েকটি শহরে মোট ৪০ হাজার মানুষ ঘরছাড়া। গভর্নর কেট ব্রাউন জানাচ্ছেন, যে কোনও সময়ে বাড়ি খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আরও ৫ লক্ষ বাসিন্দাকে। কারণ রিভারসাইড এবং বিচি ক্রিকের আগুন একে অপরের দিকে এগোচ্ছে। দু’টি মিশে গেলে তার পরণতি ভয়াবহ হতে পারে।
হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, আগামী কাল ক্যালিফর্নিয়া গিয়ে নিজে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত দু’দিনে সেখানে ৪ থেকে বেড়ে দাবানলের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে মোট ২৮টি। ৪,৩৭৫ বর্গ মাইল এলাকা জ্বলে পুড়ে নষ্ট হয়ে গিয়েছে সেখানে। মোট ১৬ হাজার দমকলকর্মী নিজেদের প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে আগুন নেভাতে ব্যস্ত। উদ্ধারকারী দলগুলি অবশ্য জানাচ্ছে, দু’দিন আগে ক্যালিফর্নিয়ায় আকাশে যে কমলা আভা দেখা দিয়েছিল, তার জেরে বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেড়েছে। যা আগুন আয়ত্তে আনতে সাহায্য করছে অনেকখানি।
ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী জো বাইডেন-সহ এই তিন প্রদেশের তিন ডেমোক্র্যাট গভর্নরই এই বিধ্বংসী দাবানলের জন্য বিশ্ব উষ্ণায়নকেই দায়ী করেছেন। বাইডেন বলেছেন, ‘‘যা করার এখনই করতে হবে। এখন থেকে সতর্ক না হলে পশ্চিমাংশের মতোই অবস্থা হবে গোটা দেশের। প্রচুর পরিবার পথে এসে দাঁড়াবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy