ফাইল চিত্র।
একাধিক গুলিতে দেহ ঝাঁঝরা করে দেওয়ার পরেও তার উপর চালিয়ে দেওয়া হয়েছিল ভারী গাড়ি। যাতে মুখ থেকে ধড়— বিকৃত হয়ে যায় গোটা দেহ। ভারতীয় চিত্রসাংবাদিক দানিশ সিদ্দিকির দেহে এ ভাবেই অত্যাচার চালিয়েছিল তালিবানেরা। দানিশের দেহাবশেষের মেডিক্যাল রিপোর্ট উদ্ধৃত করে সোমবার একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘নিউজ ১৮’ এমনই জানিয়েছে। ওই রিপোর্টের প্রতিটি ছত্রে ফুটে উঠেছে তালিবানি নৃশংসতার ছবি।
১৬ জুলাই রাতে কন্দহর শহরের স্পিন বোল্দাকে আফগানিস্তান সেনা এবং তালিবান জঙ্গিদের সংঘর্ষে নিহত হয়েছিলেন ৩৮ বছরের দানিশ। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের চিত্রসাংবাদিক হিসাবে সে সময় আফগানিস্তানের সেনাবাহিনীর বিশেষ শাখা ‘আফগান স্পেশাল ফোর্সেস’-এর সঙ্গে খবর সংগ্রহের পাশাপাশি ছবি তোলার কাজ করছিলেন। সে কাজের সূত্রে দু’পক্ষের গুলিযুদ্ধের মধ্যে পড়ে তালিবানদের ১২টি গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে গিয়েছিলেন পুলিৎজার জয়ী দানিশ। তবে মৃত্যুর পরেও তাঁর নিথর দেহের উপর অত্যাচারের মাত্রা কমায়নি তালিবানরা।
দানিশের নিহত হওয়ার পর কেটে গিয়েছে প্রায় তিন সপ্তাহ। তবে সে ঘটনার রেশ এখনও কাটেনি। সোমবার একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘নিউজ ১৮’ জানিয়েছেন, দানিশের দেহাবশেষের মেডিক্যাল রিপোর্টে তাঁর দেহের উপর তালিবানদের অত্যাচার ফুটে উঠেছে। আফগান এবং ভারতীয় নিরাপত্তা এজেন্সির নানা সূত্র মারফত সে তথ্যাদির সমর্থন পেয়েছে তারা।
আফগান সূত্র জানিয়েছে, কন্দহরের গুলিযুদ্ধে প্রথমে স্প্নিন্টারের আঘাত লাগে দানিশের। তবে তাতেও থামেননি তিনি। গুলিযুদ্ধে এক সময় আফগান সেনাদের সঙ্গে একটি স্থানীয় মসজিদে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন। তালিবানরা সেখানে গুলি চালাতে শুরু করলে দানিশ চিৎকার করে নিজের পরিচয় জানান। পরিচয়পত্র দেখিয়েও তালিবানদের হাত থেকে রেহাই পাননি। সূত্রের দাবি, সেই পরিচয়পত্র কোয়েটাতে তালিবানদের সদর দফতরে পাঠায় জঙ্গিরা। এর পর ফেসবুক, টুইটারে দানিশের সমস্ত পোস্টও খতিয়ে দেখা হয়। তাতে আফগান বাহিনীর সঙ্গে ঘুরে ঘুরে দানিশের কাজকর্ম দেখার পর তাঁকে নিকেশ করে দেওয়ার নির্দেশ আসে। এর পর মসজিদ থেকে টেনে বার করে দানিশের বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট খুলে নেয় জঙ্গিরা। দেগে দেওয়া হয় পর পর ১২টি গুলি। ওই সূত্রের কথায়, ‘‘১২টি বুলেটে দানিশের দেহ ঝাঁঝরা করে দিয়েছিল। বুলেট ঢোকা ছাড়াও দেহ ফুঁড়ে তা বেরিয়ে যাওয়ার জন্যও বেশ কিছু ক্ষত হয়েছিল। ধড় ও পিঠ লক্ষ্য করেই দাগা হয়েছিল সব ক’টি বুলেট।’’ গুলি চালিয়েও ক্ষান্ত হয়নি তালিবানরা। ওই সূত্রের দাবি, ‘‘মৃত্যুর পরও দানিশের দেহ টেনেহিঁচ়ড়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এর পর একটি ভারী গাড়ির চাকার তলায় থেঁতলে দেওয়া হয়েছিল দানিশের মাথা-বুক। সে জন্য টায়ারের ছাপ বসে গিয়েছিল দানিশের মুখে-বুকে। মনে হয়, দেহ বিকৃত করার জন্য এইচইউএমভি বা এসইউভি জাতীয় কোনও ভারী গাড়ি ব্যবহার করেছিল তালিবানরা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy