Advertisement
২৪ ডিসেম্বর ২০২৪
Narendra Modi

‘দাতা’র দর্পচূর্ণ, বিদেশে ভারত এখন ‘নরক’

‘ইকনমিস্ট’, ‘দ্য গার্ডিয়ান’, ‘টাইম’-এ সরাসরি মোদীকে দোষারোপ করা হয়েছে।

ছবি পিটিআই

ছবি পিটিআই

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০২১ ০৮:৪১
Share: Save:

ঠিক ১২ দিন আগেও আন্তর্জাতিক মঞ্চ— রাইসিনা আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সগর্বে জানিযেছিলেন, ৮০টি দেশকে ভারত প্রতিষেধক ইতিমধ্যেই পাঠিয়েছে। চাহিদার তুলনায় এই রফতানি অত্যন্ত কম, এই আফশোস করতেও শোনা যায় মোদীকে। বলেন, ‘‘ভারত তার সম্পদ (মেড ইন ইন্ডিয়া প্রতিষেধক) বিশ্বের সঙ্গে ভাগ করে নিতে চায়।’’

দু’সপ্তাহের মধ্যেই নরেন্দ্র মোদীর সরকার দাতার আসনচ্যুত হয়ে বিশ্বের দরবারে হাত পাতছে। অক্সিজেন, প্রতিষেধকের কাঁচামাল, ওষুধ, পিপিই কিট, অক্সিজেন কনসেনট্রেটর, ভেন্টিলেটর— সব কিছুর জন্যই আমেরিকার মুখাপেক্ষী ভারত। সহায়তা নিতে হচ্ছে চিনের থেকেও। অক্সিজেন আনতে হচ্ছে দুবাই থেকে। পরিস্থিতি এমন যে অমৃতসরের কংগ্রেস সাংসদ গুরজিত সিংহ প্রধানমন্ত্রীকে একটি চিঠিতে লিখেছেন, ওয়াঘা সীমান্ত বরাবর পাকিস্তান থেকে অক্সিজেন নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হোক। প্রসঙ্গত, এর আগে পাকিস্তান এই সঙ্কটে ভারতের পাশে থাকার বার্তা দিযেছেন। শ্রীলঙ্কায় চিনা দূতাবাস থেকে টুইট করে জানানো হয়েছে, হংকং থেকে ৮০০টি অক্সিজেন কনসেনট্রেটর দিল্লি
পাঠানো হয়েছে। এই সপ্তাহে আরও ১০ হাজার যাবে।

সবচেযে বড় কথা, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের জেরে তৈরি হওয়া পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর বহু বিজ্ঞাপিত প্রতিষেধক-কূটনীতি স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোদী সরকার। বাংলাদেশ-সহ সার্কভুক্ত বেশ কিছু দেশ (নেপাল, শ্রীলঙ্কা) ভারতীয় প্রতিষেধকের উপর নির্ভর করে দ্বিতীয় ডোজ়-এর দিন গুনছে। প্রথম ডোজ় ভারত থেকেই পাঠানো হযেছিল, কিছুটা সৌজন্য উপহার, কিছুটা দু’দেশের বাণিজ্যিক সংস্থার মধ্যে
চুক্তি এবং কিছুটা আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক প্রোটোকলের নিয়ম অনুসারে। কিন্তু আপাতত কোনও দেশকেই পাঠানো হচ্ছে না প্রতিষেধক। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রককে ‘নোট ভার্বাল’ দিয়ে জানানো হয়েছে, সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া এবং বাংলাদেশের ওষুধ সংস্থা বেক্সিমো-র বাণিজ্যিক চুক্তি হলেও প্রতিষেধক আপাতত পাঠানো যাচ্ছে না। এ ব্যাপারে আমেরিকা থেকে কাঁচামাল না আসা এবং দেশের অভূতপূর্ব সঙ্কটের কথাই বলা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

গত কয়েক মাস বিভিন্ন মঞ্চে প্রতিষেধক কূটনীতিকে কাজে লাগিয়ে আঞ্চলিক প্রভাব বাড়ানোর চেষ্টা করে গিয়েছেন মোদী, এমনটাই মনে করছে কূটনৈতিক শিবির। কিন্তু দ্বিতীয় ঢেউ-এর জেরে যে ভাবে নড়ে গিয়েছে ভারতের অভ্যন্তরীণ স্বাস্থ্য পরিকাঠামো এবং তা যে ভাবে প্রকাশ্যে চলে এসেছে, তাতে কূটনৈতিক ভাবেও মুখ পুড়ছে কেন্দ্রের, এমনটাও মনে করা হচ্ছে। আজ বিভিন্ন দেশের সংবাদমাধ্যমে মোদী সরকারের ব্যর্থতা শিরোনামে এসেছে। ‘ইকনমিস্ট’, ‘দ্য গার্ডিয়ান’, ‘টাইম’-এ সরাসরি মোদীকে দোষারোপ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘ভারত এখন নরকের নামান্তর, ধ্বংসের মুখে এবং এর জন্য মোদীর নীতিই দায়ী।’

অন্য বিষয়গুলি:

Narendra Modi COVID Vaccine COVID 19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy