কাঠগড়ায় উহান ল্যাবের ভূমিকা। —ফাইল চিত্র
উহানের ল্যাবে কৃত্রিম ভাবে করোনাভাইরাস তৈরি হয়েছিল কি না, সেই জল্পনা এখনও উস্কে চলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে বাদুড় জাতীয় কোনও প্রাণী থেকে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছিলেন উহানের কোনও মানুষ এবং তাঁর থেকেই গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে এই ভাইরাস— এমন তত্ত্বও ছড়িয়েছে। যদিও তা প্রমাণিত হয়নি। তবে বাদুড় থেকে ছড়ানোর সম্ভাবনা আরও জোরদার হল সম্প্রতি একটি তথ্য প্রকাশ্যে আসায়। জানা গিয়েছে, সাত বছর আগেই করোনার মতো একটি ভাইরাসের নমুনা চিনের উহান ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজিতে পাঠানো হয়েছিল চিনেরই ইউনান প্রদেশ থেকে। কিন্তু তখন বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।
ব্রিটিশ দৈনিক ‘সানডে টাইমস’-এ এই সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পরেই নতুন করে তোলপাড় শুরু হয়েছে বিজ্ঞানী ও গবেষক মহলে। কী হয়েছিল সাত বছর আগে? ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৩ সালে ইউনান প্রদেশের একটি পরিত্যক্ত খনিতে বাদুড়ের উৎপাত প্রচণ্ড বেড়ে গিয়েছিল। সেই খনি থেকে বাদুড়ের মল পরিষ্কার করেছিলেন কয়েকজন কর্মী। তাঁদের মধ্যে ছ’জন তীব্র নিউমোনিয়া রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন এবং তিন জন মারা গিয়েছিলেন।
ওই সময় আক্রান্ত খনিকর্মীদের চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা চিকিৎসককে উদ্ধৃত করে সানডে টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আক্রান্ত ও মৃত্যু হওয়ার অন্যতম কারণ হিসেবে বলা হয়েছিল, বাদুড়ের দেহ থেকে করোনা জাতীয় কোনও ভাইরাস ওই কর্মীদের শরীরে প্রবেশ করার ফলেই তাঁরা আক্রান্ত হয়েছিলেন। সেই সময় ওই ভাইরাসের ‘ফ্রোজেন’ নমুনা উহানের ল্যাবে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু তখন বা তার পরে সেই ভাইরাস নিয়ে গবেষণা আর খুব বেশি এগোয়নি।
আরও পড়ুন: ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ২৪২৪৮, সংক্রমণে রাশিয়াকে টপকে বিশ্বে তৃতীয় ভারত
চিনেরই সার্স প্রজাতির ভাইরাস বিশেষজ্ঞ শি ঝেংলি পরবর্তীকালে ওই খনিতে অনুসন্ধান ও গবেষণা করেন। বাদুড় থেকে ছড়ানো ভাইরাসের উপর গবেষণা এবং বাদুড় অধ্যুষিত এলাকায় অনুসন্ধানের জন্য এই শি ঝেংলি ‘ব্যাট ওম্যান’ নামে পরিচিত। এ বছর উহানে যখন করোনার সংক্রমণ ব্যাপক হারে ছড়িয়েছিল, সেই সময় এই শি ঝেংলি বলেছিলেন, বর্তমানের এই করোনাভাইরাসের সঙ্গে র্যাটজি১৩ ভাইরাসের ৯৬.২ শতাংশ মিল রয়েছে। আবার সানডে টাইমস ওই প্রতিবেদনে দাবি করেছে, এটা প্রায় নিশ্চিত যে ইউনানের পরিত্যক্ত খনিতে পাওয়া ওই ভাইরাসই র্যাটজি১৩।
আরও পড়ুন: করোনার সঙ্কটের মধ্যেই বিউবোনিক প্লেগ, ফের মহামারি সতর্কতা চিনে
কিন্তু দুঃখের বিষয়, উহান ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজির ডিরেক্টর গত মে মাসেই জানিয়েছিলেন যে, র্যাটজি১৩ ভাইরাসের আর কোনও জীবন্ত ‘কপি’ ল্যাবে নেই। তাই এটা বলা কঠিন যে, র্যাটজি১৩ ভাইরাসের সঙ্গে বর্তমানে অতিমারির আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের কোনও মিল আছে কি নেই। অন্য দিকে উহান থেকেই যে বর্তমানের করোনাভাইরাস ছড়িয়েছে, এমন প্রমাণও তাঁদের কাছে নেই বলেও দাবি করেছিলেন তিনি। যদিও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একাধিক বার বলেছেন, উহানের ল্যাবে কৃত্রিম ভাবে এই ভাইরাস তৈরি হয়েছিল কি না, তা তদন্ত করে দেখা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy