গ্লাসগোর জলবায়ু সম্মেলনে গিয়ে মুখোমুখি ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেস। তিন জনেই মাস্কহীন। ফাইল চিত্র
গত দেড় বছরে অতিমারি চিনেছে মানুষ। দীর্ঘ সময় জুড়ে বিভিন্ন খেলার টুর্নামেন্ট থেকে মিউজ়িক কনসার্ট, যে কোনও বড় জমায়েত বন্ধ রেখেছিল রাষ্ট্রগুলো। অলিম্পিক পিছিয়ে গিয়েছিল। আন্তর্জাতিক সম্মেলন ভার্চুয়ালি হয়েছে। ২০২১-এ এসে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার চেষ্টায় সকলে। আন্তর্জাতিক সম্মেলনগুলোও ‘অফ-লাইন’ হওয়া শুরু হয়েছে। এ ভাবেই জি২০-র পরে গ্লাসগোয় জলবায়ু সম্মেলনেও যোগ দিয়েছেন দু’শোর বেশি দেশের প্রতিনিধিরা। সেই সঙ্গে উপস্থিতি ছিলেন পরিবেশ আন্দোলন কর্মী ও বিশেষজ্ঞেরা। পরিণতি— এ পর্যন্ত গ্লাসগো ফেরত ৩০০-র কাছাকাছি অংশগ্রহণকারীর শরীরে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে।
স্কটল্যান্ডের ফার্স্ট মিনিস্টার নিকোলা স্টারজিয়ন জানিয়েছেন, সংক্রমিতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। ইউরোপ এই মুহূর্তে করোনা সংক্রমণের ভরকেন্দ্র হয়ে রয়েছে। সম্প্রতি এক দিনে ২০ লক্ষ মানুষের শরীরে সংক্রমণ ধরা পড়েছে ইউরোপে। এর মধ্যে গ্লাসগো থেকে সংক্রমণের খবর প্রকাশ্যে আসতেই সন্ত্রস্ত স্কটল্যান্ডের সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞেরা। অস্বস্তিতে প্রশাসন।
নিকোলা জানিয়েছেন, সংক্রমণ যাতে আরও না-বাড়ে, তাই কড়া বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে। গ্লাসগো সম্মেলনে যোগ দেওয়া প্রত্যেককের (সাধারণ কর্মী থেকে বিশেষজ্ঞ) করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। সম্মেলন শুরুর আগেও সকলের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছিল। রিপোর্ট নেগেটিভ দেখেই যোগদানে অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। এ ছাড়া, মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক ছিল সম্মেলনে। ২ সপ্তাহব্যাপী সম্মেলনে নিয়মিত সাফাই-পর্বও চলেছে। তার পরেও এই সংক্রমণ! বিশেষজ্ঞদের অনুমান, অনুষ্ঠানে যোগদানকারী অন্তত ৯২ জনের রিপোর্ট নেগেটিভ ছিল ঠিকই, কিন্তু তাঁরা হয়তো সংক্রমিত ছিলেন। পরীক্ষায় সংক্রমণ ধরা পড়েনি। এবং এ-ও সত্য, বিভিন্ন ছবিতে রাষ্ট্রনেতাদেরই মাস্ক ছাড়া দেখা গিয়েছে সম্মেলনে।
পাবলিক হেল্থ স্কটল্যান্ড (পিএইচএস) জানিয়েছে, সম্মেলনের অংশগ্রহণকারীদের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছিল ‘ল্যাটেরাল ফ্লো ডিভাইস’ বা এলএফডি-র সাহায্যে। বিশেষজ্ঞদের অনুমান, পিসিআর-টেস্টের থেকে হয়তো এটির সংক্রমণ ধরার ক্ষমতা কম। হয়তো উপসর্গহীন বা সদ্য সংক্রমিতদের শরীরে ভাইরাসের উপস্থিতি টের পায়নি এই পরীক্ষাটি। তাতেই এই কাণ্ড।
স্কটল্যান্ডের স্বাস্থ্য বিষয়ক সরকারি সংস্থাটি জানিয়েছে, সিওপি২৬-এ যোগ দেওয়া প্রতি হাজার জনের মধ্যে চার জনের করোনা-পজ়িটিভ ধরা পড়েছে। এটা শুধু সম্মেলনের ছবি। এ বাদ দিয়ে গ্লাসগো সম্মেলন চলাকালীন একাধিক বিক্ষোভ, জমায়েত হয়েছে অনুষ্ঠানস্থলের বাইরে। সেখানেও বহু মানুষ ভিড় করেছেন। পিএইচএস-এর বক্তব্য, পরিস্থিতি আরও খতিয়ে দেখা দরকার। ডিসেম্বরের শেষে তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy