দেবেশ ও কুমুদা। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া।
এক ভারতীয় বংশোদ্ভুত মার্কিন দম্পতির হাত ধরে খুব কম দামের ভেন্টিলেটর পেতে পারে ভারতের মতো বেশ কিছু দেশ। আইসিইউ-তে যে ভেন্টিলেটর ব্যবহার হয় এটি তেমন নয়, তবে করোনার চিকিৎসায় এটি উপযুক্ত। আর এর দাম বর্তমানে যে ভেন্টিলেটর ব্যবহার হয়, তার থেকে বেশ কয়েক গুণ কম।
আমেরিকার ‘জর্জিয়া টেক জর্জ ডব্লু উড্রফ স্কুল অফ মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং’-এর অধ্যাপক দেবেশ রঞ্জন ও তাঁর স্ত্রী আটলান্টায় কর্মরত গৃহচিকিৎসক কুমুদা রঞ্জন এই ভেন্টিলেটর তৈরি করেছেন। তাঁরা মাত্র তিন সপ্তাহে এই পরিকল্পনাটিকে বাস্তবের রূপ দেখান।
দেবেশ রঞ্জন সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে জানিয়েছেন, প্রচুর পরিমাণে যদি এই ভেন্টিলেটর তৈরি করা হয়, তবে এক একটির উৎপাদন খরচ ১০০ মার্কিন ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় সাড়ে সাত হাজার টাকা) পড়তে পারে। সেক্ষেত্রে যদি বাজারে তা ৫০০ মার্কিন ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৩৭ হাজার ৭০০ টাকা)-এ বিক্রি হয়, তা হলেও অনেক সস্তা পড়বে। যারা উৎপাদন করবে তারাও প্রচুর মুনাফা রাখতে পারে। আমেরিকায় এখন এই রকম ভেন্টিলেটরের দাম প্রায় ১০ হাজার মার্কিন ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৭ লাখ ৫৪ হাজার টাকা)। ফলে নতুন এই ভেন্টিলেটর বাজারে এলে তা ভারত, ভিয়েতনাম, শ্রীলঙ্কা, কম্বোডিয়া বা আফ্রিকার দেশগুলিতে করোনার প্রকোপ থেকে অনেক মানুষকে বাঁচাতে পারে।
আরও পড়ুন: রাস্তায় গাড়ি থেকে ফেলে প্রতিশোধ নিল মহিষ, ক্যামেরায় ধরা পড়ল সেই দৃশ্য
করোনার মতো রোগে ফুসফুস যখন ঠিক মতো কাজ করতে পারে না তখন ভেন্টিলেটরের সাহায্য নেওয়া হয়। নতুন সস্তার এই ভেন্টিলেটর আইসিইউ ভেন্টিলেটরের মতো নয়, যেগুলি অনেকটা দামি হয়। নতুন এই ভেন্টিলেটরকে বলা হয় ‘ওপেন-এয়ার ভেন্টজিটি’। জর্জিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনলজির তৈরি এই ভেন্টিলেটরে ইলেক্ট্রনিক সেন্সর ও কম্পিউটার নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে শ্বাস-প্রশ্বাস ঠিক রাখার চেষ্টা হয়।
দেবেশ রঞ্জন জানিয়েছেন, জর্জিয়া টেক-এর এই টিম, যারা এই ভেন্টিলেটরের প্রটোটাইপ তৈরি করেছে, তাদের সঙ্গে ভারত ও ঘানার মতো দেশ থেকে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তনীরা যোগাযোগ করেন। তাঁরা বিভিন্ন সংস্থা, প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এই ভেন্টিলেটর দেশেই তৈরি করতে চান। রঞ্জন জানিয়েছেন, ভারতের মতো দেশে বর্তমান যে পরিকাঠামো রয়েছে তার সাহায্যেই এই ভেন্টিলেটর তৈরি করা যাবে।
আরও পড়ুন: আত্মহ্ত্যা নয় খুন, তেলঙ্গানায় কুয়ো থেকে ন’টি দেহ উদ্ধারের ঘটনায় নয়া মোড়
বর্তমানে সিঙ্গাপুরে রিনিউ গ্রুপ নামে একটি সংস্থা এই ভেন্টিলেটরের ব্যবহারযোগ্য প্রটোটাইপ তৈরি করছে। এই সংস্থার মাথায় রয়েছেন উত্তরাখণ্ডের রবি সাজওয়ান, যিনি বর্তমানে মার্কিন নাগরিক। তিনি জানিয়েছেন, তাঁরা বিশ্ব জুড়ে বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে হাত মিলিয়ে এই ভেন্টিলেটর তৈরির উদ্যোগ নিয়েছেন। এর ফলে কম খরচে চিকিৎসা ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকা দেশগুলিতে করোনার প্রকোপ থেকে অনেক মানুষকে বাঁচানো যাবে।
দেবেশ রঞ্জন পটনায় জন্মগ্রহণ করেন। ত্রিচির রিজিওনাল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে ডিগ্রি লাভের পর স্নাতকোত্তর ও গবেষণার জন্য আমেরিকা পাড়ি দেন। গত ছ’ বছর ধরে তিনি জর্জিয়া টেক-এ পড়াচ্ছেন। কুমুদা রঞ্জন যখন মাত্র ছ’বছরের ছিলেন তখন বাবা মায়ের সঙ্গে নিউ জার্সিতে বসবাস শুরু করেন। তার আগে তাঁরা রাঁচিতে থাকতেন।
দেশে পুরো দমে এর উৎপাদন শুরু হলে করোনার চিকিৎসায় ভেন্টিলেটরের সমস্যা অনেকখানি মিটে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy