জনহীন ঢাকার রাস্তায় পুলিশের কড়া নজরদারি। ছবি: এএফপি
প্রথম করোনাভাইরাস আক্রান্তের সন্ধান মিলেছিল ৮ মার্চ। তার পর থেকে গত ১৮ দিনে বাংলাদেশে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৪৪। করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা পাঁচ। বৃহস্পতিবার নতুন করে সংক্রমণ নিশ্চিত হয়েছে আরও পাঁচ জনের। সংক্রমণ ক্রমেই বেড়ে চলায় রাজধানী ঢাকা-সহ সারা বাংলাদেশেই জমায়েতের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। সব জেলায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে চলছে সশস্ত্র বাহিনীর টহলদারি। চলছে প্রচারও। তবে আশার কথা গত ২৪ ঘণ্টায় চার জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
বৃহস্পতিবার ঢাকার রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) অনলাইন প্রেস বিফ্রিংয়ে এই তথ্য দিয়েছে। আইইডিসিআর-এর পরিচালক মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা জানিয়েছেন, নতুন আক্রান্ত পাঁচজনের মধ্যে এক জন বিদেশ থেকে বাংলাদেশে এসেছিলেন। অন্য তিন জন আগের আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে ছিলেন। এক জনের বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা চলছে। তিনি আরও জানিয়েছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১২৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত সারা দেশে সর্বমোট ৯২০ জনের নমুন পরীক্ষা করা হলো।
সংক্রমণ বাড়তে থাকায় নমুনা পরীক্ষার চাহিদাও বাড়ছে লাফিয়ে। তাই শুধুমাত্র ঢাকায় সীমাবদ্ধ না রেখে গোটা দেশেই কোভিড-১৯ সংক্রমণের পরিকাঠামো তৈরির কাজ চলছে দ্রুত, জানিয়েছেন ফ্লোরা। তিনি জানান, আইইডিসিআর ছাড়াও এখন জনস্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান ও ঢাকা শিশু হাসপাতালেও নমুনা পরীক্ষা করা শুরু হয়েছে। চট্টগ্রামেও চলছে এই পরীক্ষা। এছাড়া সব বিভাগেই করোনাভাইরাসের পরীক্ষা সম্প্রসারণের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে।
আরও পড়ুন: ভিন্রাজ্যে আটক বাঙালিদের জন্য সক্রিয় মমতা, চিঠি ১৮ মুখ্যমন্ত্রীকে
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে বৃহস্পতিবার আরও আট হাজার ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম বা পার্সোনাল প্রটেকশন ইউনিট(পিপিই)স্বাস্থ্য দফতরে পাঠিয়েছে চট্টগ্রামের স্মার্ট গ্রুপ। এ নিয়ে চাহিদামতো এক লক্ষের মধ্যে ৫৮ হাজার পিপিই তৈরি করে পাঠাল ওই সংস্থা।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সারা বাংলাদেশের অঘোষিত’ ‘লকডাউন’ অবস্থা চলছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা শক্ত অবস্থান নিয়েছেন। অহেতুক ভিড় ঠেকাতে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বরিশাল থেকে শুরু করে মফস্বল শহরতলীর মোড়েও চলছে কঠোর পাহারা। সামাজিক দূরত্ব রাখা ও ঘরে অবস্থান নিশ্চিত করতে ঢাকার রাস্তার চলাচল নিয়ন্ত্রণ করছে পুলিশ। সকাল থেকেই জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কাউকে রাস্তায় দেখলে তাকে পড়তে হচ্ছে প্রশ্নের মুখে। অন্য দিকে গতকাল বুধবার থেকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে কাজ শুরু করেছে সশস্ত্র বাহিনী। রাজধানী ঢাকা সহ বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে নাগরিকদের সঙ্গনিরোধ নিশ্চিত করেছে তারা। তা ছাড়া বিদেশ থেকে এলে তাঁদের হোম কোয়রান্টিনের ভারও এই বাহিনীর উপর বর্তেছে।
আরও পড়ুন: ভারত তাড়াতাড়িই করোনা-যুদ্ধে জয়ী হবে, সাহায্যের হাত বাড়িয়ে বার্তা চিনের
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কোচিং সেন্টার আগামী ৯ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধের ঘোষণা করেছে বাংলাদেশের সরকার। এই সময় পড়ুয়াদের বাড়িতে থাকতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার এই সময় টেলিভিশনে শিক্ষকদের রেকর্ডিং করা ক্লাসগুলো দেখানো হবে।
বাংলাদেশে লঞ্চ, রেল ও বিমান চলাচল আগে থেকেই বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। চলছে শুধুমাত্র শুধু বিমানের ঢাকা-লন্ডন-সিলেট-ঢাকা এবং ঢাকা-ম্যানচেস্টার-সিলেট-ঢাকা রুটের ফ্লাইট। তার সঙ্গে গতকাল বুধবার থেকে সব ধরনের গণ পরিবহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বুধবার থেকে সারা দেশে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। আজ সকাল থেকে কোনও ধরণের পরিবহন চলাচল করছে না। ঢাকার রাস্তাগুলিও জনশূন্য। ঢাকা ও সারা বাংলাদেশের প্রায় সব জেলায় রাস্তায় সাধারণ মানুষের সংখ্যাও হাতে গোনা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy