সংসদে সম্প্রতি আরএসপির সাংসদ এন কে প্রেমচন্দ্রন দাবি করেছিলেন, প্রভিডেন্ট ফান্ডের অধীনে বেশি পেনশন দিতে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেওয়ার পরেও সিংহভাগ আবেদনকারী এখনও তা পাননি। তাই অবিলম্বে তাঁদের প্রাপ্য দেওয়া হোক। এর এক দিন যেতে না যেতেই বুধবার পিএফ কর্তৃপক্ষের (ইপিএফও) ঘোষণা, বেশি পরিমাণে পিএফের পেনশন পেতে আবেদন করেছেন যে সব কর্মী, আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত তাঁদের আয়ের খতিয়ান জমা দিতে পারবে নিয়োগকারী সংস্থা। অন্য দিকে যে সমস্ত আবেদনের ক্ষেত্রে ইপিএফও বাড়তি তথ্য চেয়েছে, তা জমা দেওয়া যাবে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত। শ্রম মন্ত্রক জানিয়েছে, এ জন্য অনলাইন ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, পিএফ আইন অনুযায়ী এর আওতাভুক্ত কর্মীদের সর্বোচ্চ ১৫,০০০ টাকা পর্যন্ত বেতনের ৮.৩৩% টাকা পেনশন অ্যাকাউন্টে জমা পড়ে। শুধু নিয়োগকারীর দেয় টাকা (বেতনের ১২%) থেকেই তা কাটা হয়। বেতন বেশি হলেও, হিসাব হয় ১৫,০০০ টাকার উপরে। নিয়োগকারীর দেয় বাকি টাকা এবং কর্মীর ভাগের টাকার পুরোটা (বেতনের ১২%) জমা পড়ে পিএফ অ্যাকাউন্টে। তবে বেশ কিছু সংস্থার কর্মী স্বেচ্ছায় নিজেদের পুরো বেতনে (১৫,০০০ টাকার বেশি) পিএফের টাকা কাটাতেন। ফলে তাঁরা পুরো বেতনের উপর পেনশন দাবি করেন। ২০২২-এর ৪ নভেম্বরে তাঁদের আবেদন মঞ্জুর করে সুপ্রিম কোর্ট। পরিসংখ্যানে প্রকাশ, তার পর থেকে গত অগস্ট পর্যন্ত বেশি পেনশন পাওয়ার ১৭,৪৮,৭৭৫টি আবেদন জমা পড়েছে। তার মধ্যে মাত্র ৮৪০১টির আবেদন মঞ্জুর করেছেন পিএফ কর্তৃপক্ষ।
তবে পরিসংখ্যান এটাও তুলে ধরেছে, একাধিকবার সময় দেওয়া হলেও এখনও ৩.১ লক্ষের বেশি আবেদনের কাজ শেষ হয়নি। জমা পড়েনি বেতনের খতিয়ানের মতো তথ্য। এই পরিস্থিতিতে সমস্ত পক্ষের কথা মাথায় রেখে ৩১ জানুয়ারি, ২০২৫ পর্যন্ত বাকি থাকা আবেদন অনলাইনে তোলার জন্য চূড়ান্ত সময় দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, প্রায় ৪.৬৬ লক্ষ আবেদনের ক্ষেত্রে বাড়তি তথ্য চেয়েছিল ইপিএফও। বেশ কিছু তথ্যের বিস্তারিত বিবরণও চাওয়া হয়। সেগুলি দেওয়ার জন্যও ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, পিএফে যাঁরা বেশি পেনশন চাইবেন, তাঁদের ১৫,০০০ টাকার বেশি বেতনের উপরেও ৮.৩৩% টাকা নিজেদের পকেট থেকে জমা দিতে হবে। কারণ, নিয়োগকারী সংস্থা ১৫,০০০ টাকার বেশি বেতনের উপর পিএফের টাকা দেব না। যাঁরা অবসর নিয়েছেন এবং পুরো বেতনের উপর পেনশন দাবি করেছেন, তাঁদের অবসরের সময় সর্বোচ্চ সীমার উপরে বেশি যে বেতন ছিল, তার উপর ভিত্তি করেই পেনশন অ্যাকাউন্টের টাকা (৮.৩৩%) নিজেদের পকেট থেকে জমা দিতে হবে। কারণ, সেই টাকা অবসরের সময় পিএফ খাতে তাঁরা তুলে নিয়েছেন। যাঁরা চাকরিতে আছেন, তাঁদের পুরো বেতনের উপর পেনশন খাতে টাকা কাটাতে হবে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)