মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন সাংবাদিক ঝ্যাং। ছবি: সংগৃহীত।
চিনের উহান শহরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের খবর ছড়িয়ে পড়ার বার্তাটা পেয়েই খবর সংগ্রহে ছুটে গিয়েছিলেন সেখানে। করোনার সংক্রমণ প্রথম প্রকাশ্যে এনে সারা বিশ্বের নজর কেড়েছিলেন তিনি। কী ভাবে সেখানে করোনায়া আক্রান্ত মানুষের মৃত্যু হচ্ছে, প্রশাসনের উদাসীনতার ছবি তুলে ধরেছিলেন। সেটাই ছিল তাঁর ‘অপরাধ’। আর সেই অপরাধের জেরেই এখন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন বছর আটত্রিশের সাংবাদিক তথা প্রাক্তন আইনজীবী ঝ্যাং ঝান।
২০২০-র মে থেকে সাংহাইয়ের জেলে বন্দি ঝ্যাং। জেলের মধ্যেই প্রতিবাদে আমরণ অনশন শুরু করেন গ্রেফতার হওয়ার পর। এক বছরেরও বেশি সময় কেটে গিয়েছে। ঝ্যাংয়ের শারীরিক অবস্থা ক্রমেই অবনতি হচ্ছে। ওজন কমে গিয়েছে। তাঁকে জোর করে রাইলস টিউবের মাধ্যমে খাওয়ানোর চেষ্টা করেও লাভ হয়নি বলে তাঁর পরিবারের দাবি। তাঁর ভাই ঝ্যাং ঝু টুইটারে দাবি করেছেন, ‘ওর অবস্থা অত্যন্ত সঙ্কটজনক। আর বেশি দিন বাঁচবে না। হয়তো এই শীতেই তাঁর মৃত্যু হতে পারে।’
ঝু-এর সেই পোস্ট নতুন করে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে। কেন ঝ্যাং-কে ছাড়া হচ্ছে না। কেন তাঁর অনশন ভাঙার কোনও চেষ্টা করছে না প্রশাসন। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, ঝ্যাংয়ের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না। এমনকি তাঁকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা থেকেও বঞ্চিত করা হচ্ছে। ঝ্যাংয়ের পাশে দাঁড়িয়ে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল চিন সরকারের এই ভূমিকার নিন্দা করেছে। একই সঙ্গে তাঁকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য চিন প্রশাসনকে আর্জি জানিয়েছে তারা।
সাল ২০২০। ফেব্রুয়ারি মাস। উহানে প্রথম করোনার সংক্রমণ ছ়়ড়িয়ে পড়়ে। কী ভাবে সেই সংক্রমণ ছড়াল, কোথা থেকেই বা সেই ভাইরাসের আবির্ভাব তা এখনও রহস্যই থেকে গিয়েছে। সংক্রমণের খবর যখন ‘চাপা’ দেওয়ার চেষ্টা করছে প্রশাসন। সংক্রমণের সেই ভয়াবহতা বিশ্বের সামনে তুলে ধরেছিলেন ঝ্যাং। করোনার সংক্রমণের খবর প্রকাশ্যে আনায় চরম অস্বস্তিতে পড়েছিল চিন প্রশাসন। আর তার মাশুল হিসেবে তাঁকে পেতে হয়েছে চার বছরের জেলবন্দির সাজা। সেই থেকেই জেলবন্দি ঝ্যাং। আমরণ অনশনের ব্রত নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ চালিয়ে যাচ্ছেন। বিশ্বের দরবারে করোনার সংক্রমণের খবর প্রথম প্রকাশ্যে আনা সেই সাংবাদিকের জীবন আজ বিপন্ন। মৃত্যুর প্রহর গুনছেন।
শুধু ঝ্যাং নয়, উহানে খবর করতে যাওয়া আরও তিন সাংবাদিক চেন কুইশি, ফ্যাং বিন এবং লি জেহুয়াকেও আটক করেছিল প্রশাসন। করোনার সংক্রমণের খবর প্রথম প্রকাশ্যে আসার পর দেড় বছরের বেশি সময় কেটে গিয়েছে। সারা বিশ্বে ২২ কোটিরও বেশই মানুষ আক্রান্ত। মৃত্যু হয়েছে ৪৫ লক্ষেরও বেশি মানুষের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy