Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪
China

ইরান-সৌদিকে মিলিয়ে আধিপত্য বাড়াল চিন

কূটনৈতিক শিবির বলছে, বহু বছর ধরেই চিন অন্য দু’টি দেশের সংঘাতে নাক না গলানোর কথা মুখে বলে। কিন্তু সম্প্রতি চিনের নীতিতে বিভিন্ন অঞ্চলে প্রভাব বাড়ানোর চেষ্টাই বেশি দেখা যাচ্ছে।

Xi Jinping.

শি জিনপিং। ফাইল চিত্র।

অগ্নি রায়
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০২৩ ০৬:৪২
Share: Save:

পশ্চিম এশিয়া ছিল মোদী সরকারের বিদেশনীতির ঘোষিত কোহিনুর। কিন্তু সম্প্রতি প্রায় সবার অলক্ষে সেই রত্ন আপাতত হলেও বেজিং-এর হাতে গেল। শি জিনপিং তৃতীয় দফায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার দু’সপ্তাহের মধ্যে ইরান এবং সৌদি আরবের দীর্ঘদিনের সংঘাত চিন মেটানোর পরে এমনই মনে করছেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞেরা।

সাত বছর আগে শিয়া ধর্মগুরু নিমর-আল-নিমরকে ফাঁসি দেয় সুন্নি প্রধান সৌদি আরব। এই ঘটনার প্রতিবাদে তেহরানে সৌদি কূটনৈতিক প্রতিনিধিদলের উপর হামলা চালান ইরানের বিক্ষোভকারীরা। এরপর ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে সৌদি আরব। দুই দেশের তিক্ততা তীব্র হয়। সম্প্রতি বিবদমান এই দুই দেশের প্রতিনিধিদের বৈঠক করায় বেজিং, তাদের মাটিতে। এরপর আবার কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে রাজি হয়েছে শিয়া এবং সুন্নি প্রধান দুই দেশ। দু’মাসের মধ্যে দূতাবাস খুলতেও তারা রাজি।

ভারতের বিদেশ মন্ত্রক প্রাথমিক ভাবে জানিয়েছে তারা সংলাপ এবং কূটনীতিকেই সেরা পথ বলে মনে করে। সেই সঙ্গে এই সত্যও সামনে চলে আসছে যে, এই আপাত অসাধ্য কাজটি করে দেখিয়ে (নিজেদের অমিত অর্থনৈতিক এবং সামরিক বিক্রমকে সহায়তার টোপ হিসাবে ব্যবহার করে হলেও) পশ্চিম এশিয়ায় প্রভাব আপাতত বহুগুণ বাড়িয়ে ফেলল চিন। বিষয়টি ইরানের প্রতি শত্রুভাবাপন্ন আমেরিকার জন্য চরম অস্বস্তিকর তো বটেই। আমেরিকাকে বার্তা দেওয়া বেজিংয়ের লক্ষ্য ঠিকই, তবে এ ক্ষেত্রে আমেরিকার কৌশলগত মিত্র সাউথ ব্লকের অস্বস্তিও কম নয়। কূটনৈতিক সূত্রের মতে, আমেরিকার নিষেধাজ্ঞার কারণে গত তিন বছর তেহরানের সঙ্গে জ্বালানি-সম্পর্ক ঘুচিয়েছে মোদী সরকার। পশ্চিম এশিয়ার অন্য দেশগুলির সঙ্গে (সৌদি-সহ) সম্পর্ক আগের তুলনায় অনেকটাই ঘনিষ্ঠ হলেও দিল্লি হারিয়েছে ইরানের বন্ধুত্ব। ফলে চিন এই তেলসমৃদ্ধ রাষ্ট্রটির অভিভাবক হয়ে দাঁড়াক, তা আদৌ কাম্য নয় নয়াদিল্লির কাছে। পাশাপাশি সৌদির কাছেও পৌঁছে গিয়েছে চিন।

কূটনৈতিক শিবির বলছে, বহু বছর ধরেই চিন অন্য দু’টি দেশের সংঘাতে নাক না গলানোর কথা মুখে বলে। কিন্তু সম্প্রতি চিনের নীতিতে বিভিন্ন অঞ্চলে প্রভাব বাড়ানোর চেষ্টাই বেশি দেখা যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক সংঘাতে সক্রিয় মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকাও পালন করতে দেখা যাচ্ছে তাদের। এক কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞের কথায়, চিন পশ্চিম এশিয়াকে এই বার্তা দিতে চাইছে যে তারা আমেরিকার পরিবর্ত নীতি দিতে পারবে। তাদের বিরুদ্ধে অগণতান্ত্রিক, একনায়কতন্ত্রের যে অভিযোগ পশ্চিম থেকে ওঠে, তারও মোকাবিলা করতে এই ‘শান্তির পৌরোহিত্য’ কাজে আসবে বেজিংয়ের।

অন্য বিষয়গুলি:

China Diplomacy asia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE