১৮০ ডিগ্রি ভোলবদল চিনের। মাত্র দিন পাঁচেক আগে বেজিং সদর্পে ঘোষণা করেছিল, নিউক্লিয়ার সাপ্লায়ার্স গ্রুপে (এনএসজি) ভারতের অন্তর্ভুক্তি কিছুতেই হতে দেবে না চিন। এনএসজি-র অনেক সদস্য দেশকেই ভারতের বিরোধিতা করার জন্য রাজি করানো হয়েছে বলেও বেজিং জানিয়েছিল। কিন্তু বুধবার চিনের বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে জানানো হয়েছে, এনএসজি-তে ভারতের প্রবেশে চিন কোনও বাধা দিচ্ছে না। বরং অন্য সদস্য দেশগুলির সঙ্গে আলোচনা করে চিন রফাসূত্র খোঁজার চেষ্টা করছে, যাতে ভারতের অন্তর্ভুক্তি সম্ভব হয়।
চিনের উপ-বিদেশমন্ত্রী লিউ ঝেনমিন বলেছেন, ‘‘চিন এনএসজি-তে ভারতের প্রবেশ রুখতে চাইছে, এমন খবর অসত্য। এনএসজি সদস্যপদের ইস্যু নতুন কিছু নয়। এনএসজি-র সব সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জটিলতা দূর করতে হবে।’’ এনএসজি-তে যে ৪৮টি সদস্য দেশ রয়েছে, সেই সবক’টি দেশই নন-প্রলিফারেশন ট্রিটি বা পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি সই করেছে। ভারত এই চুক্তিতে এখনও সই করেনি। তাই ভারতের এনএসজি-ভুক্তিতে কিছু বিধিসংক্রান্ত সমস্যা হচ্ছে। চিনের বিদেশ মন্ত্রক এ দিন জানিয়েছে, এই সমস্যা দূর করে যাতে রফাসূত্রে পৌঁছনো যায়, তার জন্যই অন্য সদস্য দেশগুলির সঙ্গে চিন আলোচনা চালাচ্ছে।
আরও পড়ুন:
ভারতের সঙ্গে তিক্ততা রুখতে মার্কিন রিপোর্টের কঠোর নিন্দায় চিন
মাত্র পাঁচ দিন আগে চিন জানিয়েছিল, ভারতকে এনএসজি-তে তারা ঢুকতে দেবে না। দ্রুত ১৮০ ডিগ্রি অবস্থান বদল এবং ভারতের অন্তর্ভুক্তির পক্ষে সওয়াল করা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা। দু’দিন আগেই চিন জানিয়েছিল, একটি মার্কিন রিপোর্টের তীব্র নিন্দা করে চিন বোঝাতে চেয়েছিল, ভারতের সঙ্গে চিনের সম্পর্ক তিক্ত করে তোলার চেষ্টা হচ্ছে। মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের ওই রিপোর্টে লেখা হয়েছিল, ভারতের সীমান্ত বরাবর প্রচুর সেনা মোতায়েন করছে চিন। এই রিপোর্টকে মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আখ্যা দেয় চিন। বেজিং জানায়, ভারতের সীমান্তে সৈন্যসংখ্যা মোটেই বাড়ানো হচ্ছে না। চিন কোনও দেশকে আগ বাড়িয়ে আক্রমণ করতে চায় না বলেও মন্তব্য করা হয় বেজিং-এর তরফে। এর পর চিন আবার শান্তির বার্তা দিল। এনএসজি-তে ভারতের অন্তর্ভুক্তির পথ মসৃণ করতেই চিন রফাসূত্রের খোঁজ চালাচ্ছে। প্রকারান্তরে এই বার্তাই দেওয়া হল চিনা বিদেশমন্ত্রকের তরফে। ওয়াকিবহাল মহল বলছে, চিন পাকিস্তানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াতেই, ভারত-আমেরিকা যে ভাবে দ্রুত কাছাকাছি আসতে শুরু করেছে, তা বেজিং-এর অস্বস্তির কারণ হচ্ছে। আমেরিকার প্রস্তাব মেনে নিয়ে এ বার ভারত মহসাগর তথা দক্ষিণ চিন সাগরে ভারতীয় নৌসেনা আমেরিকা ও জাপানের সঙ্গে হাত মিলিয়ে টহলদারি শুরু করলে চিনের উপর চাপ আরও বাড়বে। নিজেদের আশেপাশে সব শক্তিশালী দেশ আমেরিকার সঙ্গে হাত মেলাক, এমনটা চিন মোটেই চায় না। তাই দিল্লির উষ্মা আর একটুও বাড়তে দিতে চায় না বেজিং।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy