বাংলাদেশে ধৃত হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাস। —ফাইল চিত্র।
রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে বাংলাদেশে ধৃত হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাস সম্পর্কে রাত পেরোতেই নতুন বার্তা দিল ইসকন। বৃহস্পতিবার বলা হয়েছিল, চিন্ময়ের কোনও কাজের দায় ইসকন নেবে না। কারণ, তিনি ইসকনের কেউ নন। শুক্রবার সকালে বাংলাদেশ ইসকনের তরফে নতুন বিবৃতি দিয়ে জানানো হল, চিন্ময়কৃষ্ণকে তারা সমর্থন করে। আদৌ তাঁর সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করা হয়নি। বরং তাঁর সম্পর্কে কিছু কথা ‘স্পষ্ট’ করে দেওয়া হয়েছে।
ইসকনের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘চিন্ময়কৃষ্ণের অধিকার, বাংলাদেশে হিন্দুদের এবং তাদের ধর্মীয় স্থানগুলি রক্ষার জন্য তাঁর প্রচেষ্টাকে সমর্থন করে ইসকন। তাঁর থেকে দূরত্ব তৈরি করা হয়নি। আমরা শুধু একটা জিনিস স্পষ্ট করে দিয়েছি যে, তিনি ইসকনের সদস্য নন। বাংলাদেশের ইসকনের প্রতিনিধিত্ব তিনি করছেন না। গত কয়েক মাসে এই কথা একাধিক বার আমরা বলেছি।’’
বৃহস্পতিবার দুপুরে ইসকনের সাধারণ সম্পাদক চারুচন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী বলেন, ‘‘মাস কয়েক আগেই শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের অধ্যক্ষ লীলারাজ গৌর দাস, সদস্য গৌরাঙ্গ দাস এবং চট্টগ্রামের পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে সাংগঠনিক শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে বহিষ্কার করেছে ইসকন বাংলাদেশ। তাই তাঁর কোনও রকম বক্তব্য কিংবা কার্যকলাপের দায় ইসকনের নয়।’’ তার পর শুক্রবার সকালে সংগঠনের তরফে চিন্ময়কৃষ্ণ প্রসঙ্গে অবস্থান আবার স্পষ্ট করা হল।
উল্লেখ্য, চিন্ময়কৃষ্ণকে গত সোমবার গ্রেফতার করা হয় বাংলাদেশে। তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনা হয়েছে। আদালতে তাঁর জামিনও খারিজ হয়ে গিয়েছে। চিন্ময়কৃষ্ণের গ্রেফতারির পর থেকে বাংলাদেশের একাংশ উত্তাল। চট্টগ্রাম, রংপুরের মতো জায়গায় সংখ্যালঘুরা প্রতিবাদে পথে নেমেছেন। পুলিশের সঙ্গে তাঁদের সংঘর্ষও হয়েছে। সংখ্যালঘুদের সঙ্গে বাংলাদেশের আইনরক্ষা বাহিনীর সংঘর্ষে মঙ্গলবার চট্টগ্রামে এক আইনজীবীর মৃত্যুও হয়েছে। পরিস্থিতি ক্রমে জটিল হয়ে উঠছে। এর মাঝেই ইসকনকে নিষিদ্ধ করতে চেয়ে মামলা হয় বাংলাদেশের হাই কোর্টে। বাংলাদেশ সরকার আদালতে ইসকনকে ‘ধর্মীয় মৌলবাদী সংগঠন’ বলেও উল্লেখ করেছে। তবে ইসকনকে নিষিদ্ধ করার আবেদন আদালতে খারিজ হয়ে গিয়েছে। এর পরেই চিন্ময়কৃষ্ণের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করে বার্তা দিয়েছিল ইসকন। এক দিনের মধ্যে সেই অবস্থান বদল করা হল।
হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশজোড়া অশান্তির আবহে বেশ কিছু ধর্মীয় সংগঠন মিলে তৈরি করে সনাতনী জাগরণ মঞ্চ। মঞ্চের মুখপাত্র নির্বাচিত হয়েছিলেন চিন্ময়। তাঁরই ডাকে বাংলাদেশের শহিদ মিনার, চট্টগ্রাম ইত্যাদি নানা এলাকায় সমাবেশে অংশ নেন হাজার হাজার সংখ্যালঘু। চট্টগ্রামে সমাবেশের পর তাঁর বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের মামলা করেছিলেন স্থানীয় এক বিএনপি নেতা। ওই মামলাতেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। চিন্ময়কৃষ্ণের গ্রেফতারির পর বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে নয়াদিল্লি।
গত ৫ অগস্ট বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকেই দেশ জুড়ে সংখ্যালঘুদের উপরে নির্যাতনের একের পর এক অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছে। অভিযোগ, দেশের নানা প্রান্তে সংখ্যালঘুদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। ভাঙচুর চালানো হয় ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলিতেও। ইউনূস-পরিচালিত অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পরেও পরিস্থিতি বদলায়নি বলে অভিযোগ। তবে ইউনূস সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা ও ধর্মীয় অধিকার সুনিশ্চিত করার আশ্বাস দিয়েছেন বার বার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy