তেলের পাইপলাইন ধ্বংস করে দেবে ভারত। এই চিন্তায় রাতের ঘুম উড়ে যাওয়ার জোগাড় চিন আর পাকিস্তানের। চিনের কাশগড় থেকে পাকিস্তানের গোয়াদর পর্যন্ত অর্থনৈতিক করিডর গড়ে উঠছে বেজিং আর ইসলামাবাদের যৌথ উদ্যোগে। ভারতের প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা অনেক দিন ধরেই বলছেন, গোয়াদরে চিনা বন্দর আসলে বেজিং-এর সমরসজ্জার অঙ্গ। ভারতের টেনশন বাড়তে দেখে উল্লসিত ছিল দুই প্রতিবেশী দেশই। এ বার নিজেদের অর্থনৈতিক করিডরের নিরাপত্তা নিয়েই কপালে ভাঁজ চিন আর পাকিস্তানের।
দু’সপ্তাহ আগেই নিজেদের দেশের ২০০০ একর জমি চিনের হাতে তুলে দিয়েছে পাকিস্তান। পাকিস্তানের ইরান ঘেঁষা এলাকা গোয়াদরে বন্দর তৈরি করেছে চিন। তার জন্যই এই জমি হস্তান্তর। ভারত, আমেরিকা-সহ বিভিন্ন দেশের প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা প্রথম থেকেই বলছেন, আরব সাগরে তথা মধ্যপ্রাচ্যে নিজেদের স্থায়ী ঘাঁটি তৈরি করতেই গোয়াদরে বন্দর বানাচ্ছে চিন। বাণিজ্যিক কারণে বন্দর তৈরি হচ্ছে বলে দাবি করা হলেও আসলে চিন সেখানে যুদ্ধজাহাজের ঘাঁটি বানাবে, সন্দেহ আন্তর্জাতিক মহলের। চিনের দক্ষিণ-পশ্চিমাংশের কাশগড় থেকে পাকিস্তানের গোয়াদর পর্যন্ত সুদীর্ঘ সড়কও তৈরি হচ্ছে। তৈরি হচ্ছে তেলের পাইপলাইন।
গোয়াদরে তৈরি হচ্ছে চিনা বন্দর।
সেই অর্থনৈতিক করিডরে নাকি এখন ‘ভারতীয় নাশকতা’র আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। পাকিস্তান আর চিনের গোয়েন্দারা তা নিয়ে ঘোর চিন্তায় বলে সূত্রের খবর। যে সব এলাকার মধ্যে দিয়ে এই সড়ক এবং পাইপলাইন যাচ্ছে, সেখানে ভারত যখন তখন ‘নাশকতা’ চালাতে পারে বলে এখন চিন ও পাকিস্তানের গোয়ন্দারা আশঙ্কা করছেন। পাক সরকারকেও তাঁরা এ বিষয়ে সতর্ক করেছেন। পাকিস্তানের প্রতিবেশী আফগানিস্তানে ভারত প্রচুর সেনা মোতায়েন করে রেখেছে বলে ইসলামাবাদ দীর্ঘদিন ধরেই দাবি করছে। পাকিস্তানের আফগান সীমান্ত লাগোয়া প্রদেশ বালুচিস্তানে যত নাশকতা আর জঙ্গি কার্যকলাপ চলছে, আফগানিস্তানে বসে ভারতীয় বাহিনীই তাতে মদত দিচ্ছে বলে পাকিস্তানের অভিযোগ। ভারত অবশ্য বার বার সেই দাবি নস্যাৎ করেছে। উপজাতি প্রধান বালুচিস্তানকে পাকিস্তানের প্রশাসন কোনওকালেই খুব একটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে না। তাই নয়াদিল্লির দাবি, ভারত কোনওভাবেই বালুচিস্তানে জঙ্গি কার্যকলাপ বা নাশকতায় মদত দেয় না।পাক প্রশাসনের ব্যর্থতাতেই বালুচিস্তান তাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে।
আরও পড়ুন:
এ বার আরব সাগরে ঢুকছে চিন, ২০০০ একর জমি দিল পাকিস্তান
গোয়াদরের বন্দর কিন্তু এই উত্তপ্ত বালুচিস্তানের ভূমিতেই তৈরি হচ্ছে। কাশগড়-গোয়াদর করিডর তথা পাইপলাইনও এই বালুচিস্তানের মধ্যে দিয়েই যাচ্ছে। তার পর পাক অধিকৃত কাশ্মীরের গিলগিট-বাল্টিস্তান এলাকা হয়ে করিডর চিনে প্রবেশ করছে। পাকিস্তানের গোয়েন্দারা নাকি খবর পেয়েছেন, আফগানিস্তানে ঘাঁটি গেড়ে থাকা বিশাল ভারতীয় বাহিনী বালুচিস্তানে তেলের পাইপলাইনে নাশকতা ঘটাতে পারে। গিলগিট-
এই পথেই যাচ্ছে চিন-পাকিস্তান করিডর।
বাল্টিস্তানেও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এখন আন্দোলন তীব্র। সেখানেও ভারতের হাত দেখছে পাকিস্তান। তাই চিন-পাকিস্তান করিডর সেখানেও ‘ভারতীয় নাশকতা’র শিকার হতে পারে বলে পাক গোয়েন্দাদের আশঙ্কা। ইসলামাবাদের শীর্ষ কর্তাদের রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছে এই খবরে। কূটনৈতিক একটি সূত্রের খবর, চিনকেও পাকিস্তান এই নাশকতার বিষয়ে সতর্ক করেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy