Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
International

তিন লক্ষ সৈন্যকে ছাঁটাই করছে চিন, পরিবর্তে প্রযুক্তিতে জোর

সেনাবাহিনীর আকার কমাচ্ছে চিন। সৈন্যসংখ্যা কমিয়ে প্রযুক্তিতে জোর দিতে চান প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। ফলে তিন লক্ষ কর্মীকে বসিয়ে দিচ্ছে চিনের পিপল’স লিবারেশন আর্মি।

আচমকা যতটা কমানো হচ্ছে বাহিনীর আকার, তাতে চিনা সেনা সম্পর্কে বিশ্বের সমীহ কমবে না তো? —ফাইল চিত্র।

আচমকা যতটা কমানো হচ্ছে বাহিনীর আকার, তাতে চিনা সেনা সম্পর্কে বিশ্বের সমীহ কমবে না তো? —ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০১৬ ১৮:২০
Share: Save:

সেনাবাহিনীর আকার কমাচ্ছে চিন। সৈন্যসংখ্যা কমিয়ে প্রযুক্তিতে জোর দিতে চান প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। ফলে তিন লক্ষ কর্মীকে বসিয়ে দিচ্ছে চিনের পিপল’স লিবারেশন আর্মি।

প্রেসিডেন্ট জিনপিং-এর এই সিদ্ধান্তকে ঘিরে জোড়া আতঙ্ক চিনের সামরিক বাহিনীতে। যাঁদের ইতিমধ্যেই বসিয়ে দেওয়া হয়েছে সেনা থেকে, অবসরকালীন সুযোগ-সুবিধা কম পাওয়ার আতঙ্কে ভুগছেন তাঁরা। আর যাঁরা এখনও চাকরি করছেন, তাঁদের অনেকেই ছাঁটাই হওয়ার আশঙ্কায় ভুগছেন।

পরিস্থিতি এমনই যে সেনার মুখপত্রে প্রতিবেদন প্রকাশ করে বিভ্রান্তি কাটানোর চেষ্টা করতে হয়েছে পিপল’স লিবারেশন আর্মিকে।

প্রায় ২৩ লক্ষ সদস্য চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মিতে। সেপ্টেম্বরেই চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ঘোষণা করেন, বাহিনী থেকে ৩ লক্ষ সদস্যকে ছেঁটে ফেলা হবে। অর্থাৎ প্রায় ১৩ শতাংশ কমবে বাহিনীর আকার। সোভিয়েত যুগে মস্কো বিরাট সৈন্যদল তৈরি করে গোটা বিশ্বের সমীহ আদায় করার যে রণকৌশল প্রবর্তন করেছিল, সে রণকৌশল এ যুগে অচল বলে মনে করছে বেজিং। তাই সৈন্যসংখ্যা কমিয়ে প্রযুক্তির ব্যবহারের উপর জোর দিতে চান শি জিনপিং।

চিনা প্রেসিডেন্ট ঠিক কী চাইছেন? তিনি চান, আরও বেশি করে অ্যান্টি-স্যাটেলাইট মিসাইল বা উপগ্রহ বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করতে। যুদ্ধ হলে প্রথমেই ওই ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে প্রতিপক্ষের সব কৃত্রিম উপগ্রহ ধ্বংস করে করে দেওয়ার নীতি নেবে চিন। তাতে প্রতিপক্ষের বিভিন্ন স্বয়ংক্রিয় সামরিক পরিকাঠামো অকেজো হয়ে পড়বে। এ ছাড়াও, চিন চায় অনেক বেশি পরিমাণে স্টেল্থ ফাইটার তৈরি করতে। রেডারকে ফাঁকি দিয়ে প্রতিপক্ষের আকাশসীমায় ঢুকে বিধ্বংসী হামলা চালানোর জন্যই স্টেল্থ ফাইটার তৈরির উপর বেশি করে জোর দিতে চায় বেজিং। তাই বিপুল সংখ্যক কর্মীকে বেতন দেওয়ার বদলে, কর্মী কমিয়ে প্রযুক্তিগত উন্নয়নে বরাদ্দ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন: ওদের দ্রুত দমাও! পাকিস্তানকে ফের কড়া বার্তা আমেরিকার

চিনের আর্থিক বৃদ্ধির হার আগের চেয়ে অনেক কমে গিয়েছে। পরিস্থিতির মোকাবিলায় দেশের কমিউনিস্ট নেতৃত্ব কঠোর ব্যয় সংকোচন নীতি নিতে বাধ্য হয়েছেন। তার অঙ্গ হিসেবেই সেনাবাহিনীর আকার কমানো শুরু হয়েছে। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত বাহিনীতে কিছুটা আতঙ্কের পরিবেশ চারিয়ে দিয়েছে। অনেকেই ছাঁটাই হওয়ার আতঙ্কে ভুগছেন। আর যাঁরা ইতিমধ্যেই ছাঁটাই হয়েছেন, তাঁদের আশঙ্কা এই যে সরকার তাঁদের অবসরকালীন সুযোগ-সুবিধাও ছেঁটে দেবে। মঙ্গলবার কয়েকশো ছাঁটাই হওয়া সেনাকর্মী বেজিংয়ে বিক্ষোভও দেখিয়েছেন।

পিপল’স লিবারেশন আর্মি ডেইলিতে জানানো হয়েছে, সেনার কাঠামোয় সংস্কারের বিষয় নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় যে ভূরি ভূরি তথ্য ভেসে উঠছে, তার অধিকাংশই গুজব। স্বঘোষিত বিশেষজ্ঞরা ভুল তথ্য ছড়াচ্ছেন। আতঙ্কিত হওয়ার মতো কিছুই ঘটেনি। যাঁদের ছাঁটাই করা হচ্ছে, তাঁদের অবসরকালীন সুবিধায় কোনও খামতি থাকবে না, ছাঁটাই হওয়া সেনাকর্মীরা শীঘ্রই অন্য কাজ পাবেন বলেও জানানো হয়েছে।

শুধু এটুকুই নয়, সেনার মুখপত্রে রীতিমতো ধমকের সুর কর্মীদের প্রতি। মুখপত্রে লেখা হয়েছে, গুজবে বিশ্বাস না করা এক জন সৈনিকের অন্যতম কর্তব্য। সরকারি সূত্র থেকে যে তথ্য জানানো হবে, শুধুমাত্র সে তথ্যেই বিশ্বাস রাখতে বলা হয়েছে সেনাকর্মীদের।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE