Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪

নোত্র দামকে এক সেন্টও দিলেন না ধনকুবেররা

ধনকুবেরদের আশ্বাস ‘কথার কথা’ হিসেবেই রয়ে গিয়েছে। বরং সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে মার্কিন ও ফরাসি নাগরিকদের একটা বড় অংশ যে যাঁর সামর্থ মতো অনুদান দিয়েছেন ‘নোত্র দাম চ্যারিটেবল ফাউন্ডেশন’-এ।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
প্যারিস শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০১৯ ০০:৪৮
Share: Save:

প্রকাশ্যে ঘোষণা করেছিলেন, প্যারিসের নোত্র দাম গির্জা পুনর্নির্মাণে তাঁদের ‘কোষাগার’ উপুড় করে দেবেন। কিন্তু দু’মাস কেটে গেলেও ফরাসি ধনকুবেরদের পকেট থেকে এ পর্যন্ত একটি সেন্ট খসেনি। গত ১৫ এপ্রিল ভয়াবহ আগুন লেগেছিল নোত্র দামে। ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয় ঐতিহাসিক গির্জাটি।

ধনকুবেরদের আশ্বাস ‘কথার কথা’ হিসেবেই রয়ে গিয়েছে। বরং সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে মার্কিন ও ফরাসি নাগরিকদের একটা বড় অংশ যে যাঁর সামর্থ মতো অনুদান দিয়েছেন ‘নোত্র দাম চ্যারিটেবল ফাউন্ডেশন’-এ। সেই অর্থেই চলছে সংস্কারের কাজ। ওই ঘটনার পর থেকে দেড়শো জন কর্মী কাজ করে চলেছেন প্রতিদিন। তাঁদের বেতনও আসছে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলির ঘর থেকে। এ মাসেই প্রথম বেসরকারি উদ্যোগে ৪০ লক্ষ ডলার অর্থসাহায্য পেয়েছেন ক্যাথিড্রাল কর্তৃপক্ষ।

নোত্র দামের প্রেস সচিব অঁদ্রে ফিনো বলেন, ‘‘বড়লোক ‘সাহায্যকারীরা’ এক সেন্টও দেননি। ওঁরা জানতে চান, সাহায্যের অর্থ কোথায় কী ভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। জবাবে সন্তুষ্ট হলে তবে দেবেন।’’ ঘটনার সময়ে শুধুমাত্র ফরাসি কোটিপতিরাই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ১০০ কোটি ডলার সাহায্য করবেন। কেউ কেউ আবার নিজেদের ক্ষমতা প্রদর্শন করতে, একে অন্যকে টেক্কা দিতে আরও বড় অঙ্কের অর্থ হাকতে থাকেন। সেই নিয়ে সমালোচনাও হয়েছিল তখন।

গুচি, স্যাঁ লর‌্যাঁর মতো ব্র্যান্ডের মালিকানা কেরিং-এর। তাদের মূল সংস্থা আর্টেমিসের মালিক ফ্রাঁসোয়া পিনো প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ১১ কোটি ২০ লক্ষ ডলার দেবেন। ফরাসি শক্তি সংস্থা ‘টোটাল’-এর সিইও প্যাট্রিক পয়াঁ জানিয়েছিলেন, তাঁর সংস্থা ফ্রাঁসোয়ার সমতূল্য অর্থ দেবে। আর এক ফরাসি কোটিপতি বের্নার্ড আর্নো বলেছিলেন ২২ কোটি ৪০ লক্ষ ডলার অনুদান দেবেন। বেটেনকোর্ট ফাউন্ডেশনও একই কথা বলেছিল। কিন্তু সব কথাই ‘কথার কথা’ হয়ে থেকে গিয়েছে। এক সেন্টও কেউ চোখে দেখতে পাননি বলে জানিয়েছেন ফিনো। কেউ বলছেন সংস্কারের নকশা দেখতে চান, কেউ বলছেন গির্জা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চুক্তি করতে চান। তাঁদের এমন হাজারো বায়নাক্কায় ক্যাথিড্রাল সংস্কার নিয়ে আগ্রহ কমই চোখে পড়ছে বলে মনে করছেন অনেকে।

তবে তাতে সংস্কারের কাজ থামেনি। দিনরাত এক করে নোত্র দাম গির্জাকে আগের চেহারায় ফিরিয়ে আনতে কাজ করে চলছেন শ’খানেক কর্মী। পুনর্নির্মাণ কাজের প্রথম দফার অর্থ উঠে এসেছে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলোর দৌলতেই। ‘ফ্রেন্ডস অব নোত্র দাম দ্য প্যারিস’ জানিয়েছে তারা ৯০ শতাংশ অনুদান পেয়েছে মার্কিন নাগরিকদের থেকে। ‘ফেন্ড্রস অব নোত্র দাম’-এর প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘‘আমেরিকার মানুষ সত্যিই নোত্র দামকে ভালবাসেন। তাই এ ভাবে এগিয়ে এসেছেন।’’

ফরাসি ধনকুবেরদের মধ্যে পিনোর মুখপাত্র স্বীকার করে নিয়েছেন, ক্যাথিড্রাল সংস্কারে তাঁরা কোনও অর্থ দেননি। জানিয়েছেন, তাঁরা সাহায্য করতে চান, কিন্তু তার আগে চুক্তি করতে চান গির্জার সঙ্গে। এলভিএমএইচ গ্রুপ ও আর্নো পরিবার জানিয়েছে, আর একটু কাজ এগোলেই তারা সাহায্যের অর্থ তুলে দেবে। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁ অবশ্য জানিয়ে দিয়েছেন, পরিস্থিতি যা-ই হোক না কেন, পাঁচ বছরের মধ্যে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হবে নোত্র দামকে।

অন্য বিষয়গুলি:

Fire Accident Notre Dame Paris
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy