ইমরান খান। —ফাইল চিত্র।
মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে আন্তর্জাতিক মহল। কিন্তু তিনি শেষ দেখেই ছাড়বেন। রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় জম্মু-কাশ্মীর প্রসঙ্গ তুলবেন বলে নিয়ে এ বার পাকিস্তানবাসীকে এমনই বার্তা দিলেন ইমরান খান। নিজেকে ‘কাশ্মীরবাসীর মুক্তির দূত’ বলেও উল্লেখ করলেন তিনি।
ফ্রান্সে গ্রুপ সেভেন বা জি-৭ সম্মলেনের ফাঁকে সোমবার বৈঠক করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং নরেন্দ্র মোদী। সেখানে উঠে আসে কাশ্মীর প্রসঙ্গও।ওই বৈঠকে কাশ্মীর সমস্যা নিয়ে মধ্যস্থতার ব্যাপারে উচ্চবাচ্য করেননি ট্রাম্প। নয়াদিল্লি একে কার্যত নিজেদের কূটনৈতিক জয় বলেই মনে করছে। তবে গুরুত্বপূর্ণ হল, ইমরান দেশবাসীকে বার্তা দিতে বেছে নিলেন সেই সন্ধ্যেকেই।
ইমরান বলেন, ‘‘ক্ষমতায় আসার পর একাধিক বার ভারতের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চেয়েছিলাম। বলেছিলাম, শান্তি স্থাপনে ভারত এক পা এগোলে, চার পা এগোব আমরা। কিন্তু আলোচনায় বসতেই রাজি হয়নি ভারত। সবকিছুর জন্য শুধু পাকিস্তানকে দায়ী করে গিয়েছে। সন্ত্রাসে মদত জোগানোর অভিযোগ তুলেছে।’’
(2/4) Prime Minister Of Pakistan Imran Khan's Address To The Nation On The Issue Of Kashmir (26.08.19)#KashmirAtDecisionPoint@ImranKhanPTI pic.twitter.com/yu5uuYnlop
— PTI (@PTIofficial) August 26, 2019
কাশ্মীর সিদ্ধান্তের জন্য বিজেপি এবং সঙ্ঘের হিন্দুত্ববাদ আদর্শকেও দায়ী করেন ইমরান। তিনি বলেন, ‘‘জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বিলোপ করেছে ভারত সরকার। উপত্যকাকে ভেঙে দু’টুকরো করেছে। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিয়ম নীতির তোয়াক্কাও করেনি ওরা। নিজেদের দেশের সুপ্রিম কোর্টেরও পরোয়া করেনি। মহাত্মা গাঁধী এবং জওহরলাল নেহরু কাশ্মীরবাসীকে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তার বিরুদ্ধে গিয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধানেরও পরিপন্থী। বিজেপি এবং আরএসএস-এর শুধু একটাই লক্ষ্য, হিন্দুস্তান শুধু হিন্দুদের। বাকিদের সেখানে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হয়ে থাকতে হবে।’’
ইমরানের আরও বলেন, ‘‘ফ্যাসিবাদী আদর্শে বিশ্বাসী আরএসএস। মোদী পূর্ববর্তী সরকার তাদের সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হিসাবে চিহ্নিত করেছিল। হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের বার্তা দেওয়ায় মহাত্মা গাঁধীকেও খুন করেছিল ওরা। নেহরুর মৃত্যুর পর থেকেই ওদের বাড়বাড়ন্ত শুরু হয়, যা আগেভাগে আঁচ করতে পেরেছিলেন জিন্না। তাই পৃথক পাকিস্তান রাষ্ট্র গড়ার পথে এগিয়েছিলেন। পবিত্র কোরানের আদর্শে বিশ্বাস করি আমরা। তাই সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তায় বিশ্বাস করি। আরএসএস-এর আদর্শ সম্পূর্ণ বিপরীত।’’
আরও পড়ুন: আজ রাত থেকেই হামলা শুরু, ইজরায়েলকে হুমকি হিজবুল্লা প্রধানের
তবে মোদী সরকারের কাশ্মীর সিদ্ধান্তে জম্মু-কাশ্মীরের স্বাধীনতার পথ আরও প্রশস্ত হয়ে গিয়েছে বলেও দাবি করেন ইমরান। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের কূটনৈতিক জয় হয়েছে। কারণ কাশ্মীর সমস্যা আন্তর্জাতিক স্তরে পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছি আমরা। বিভিন্ন রাষ্ট্রনেতার সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলেছি। আমাদের উদ্যোগেই বিষয়টি নিয়ে অধিবেশন ডাকতে বাধ্য হয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ, ১৯৬৫ সালের পর যা প্রথম। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমও সমালোচনা করতে শুরু করেছে।’’
জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে ইতিমধ্যে একাধিক দেশ ভারতের সমর্থনে এগিয়ে এসেছে। কিন্তু ইমরানের দাবি, ‘‘অর্থনৈতিক স্বার্থ জড়িয়ে রয়েছে বলে বেশ কিছু দেশ কাশ্মীর নিয়ে উচ্চবাচ্য করছে না। কিন্তু একটা সময় তাদের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে হবেই।’’ কাশ্মীরবাসীর উদ্দেশে ইমরান বলেন, ‘‘আপনারা হতাশ হবেন না। বিশ্বের কেউ আপনাদের কথা না ভাবলেও, পাকিস্তান সবসময় আপনাদের পাশে থাকবে।’’
আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ অধিবেশনে বক্তৃতা করবেন ইমরান। সেখানেও ‘কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘন’-এর অভিযোগ নিয়ে সরব হবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy