বৃহস্পতিবার তাইল্যান্ডের এক বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তব্য রাখেন জয়শঙ্কর। ফাইল ছবি
সীমান্ত সমস্যার ফলে শীতল ভারত-চিন সম্পর্ক। লাদাখের বাকি সংঘর্ষবিন্দু থেকে সেনা সরাতে উদ্যোগী হয়নি চিন। কিন্তু তার মধ্যেই ভারতীয় বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের ‘এশিয়ার শতাব্দী’ সংক্রান্ত মন্তব্যে সদর্থক প্রতিক্রিয়া জানাল বেজিং। যা তাৎপর্যপূর্ণ বলে মত কূটনীতিকদের।
বৃহস্পতিবার তাইল্যান্ডের এক বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতায় জয়শঙ্কর বলেন, ‘‘ভারত ও চিন হাত না মেলালে এশিয়ার শতাব্দী তৈরি হওয়া কঠিন। এই মুহূর্তে একটি বড় প্রশ্ন হল ভারত-চিন সম্পর্ক কোন পথে এগোচ্ছে।’’ জয়শঙ্করের মতে, ‘‘সীমান্তে উত্তেজনার ফলে ভারত-চিনের সম্পর্ক খুব কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে চিড় ধরলে তা আঞ্চলিক বৃদ্ধিতেও প্রভাব ফেলতে পারে।’’
১৯৮৮ সালে তৎকালীন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর সঙ্গে বৈঠকের সময়ে ‘এশিয়ার শতাব্দী’ শব্দটি উচ্চারণ করেছিলেন প্রাক্তন চিনা রাষ্ট্রনেতা দেং জিয়াও পিং। জয়শঙ্করের মন্তব্য নিয়ে প্রশ্নের জবাবে চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র বলেন, ‘‘চিনের এক নেতা বলেছিলেন ভারত ও চিনের উন্নতি না হলে এশিয়ার শতাব্দী আসবে না। ভারত, চিন ও প্রতিবেশী বলয়ের দেশগুলির উন্নতি না হলে তৈরি হবে না প্রকৃত এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় শতাব্দী বা এশীয় শতাব্দী।’’ চিনা মুখপাত্রের মতে, ‘‘ভারত ও চিন উন্নয়নশীল অর্থনীতি। প্রতিবেশী হিসেবে তাদের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রের চেয়ে একই স্বার্থে কাজ করার ক্ষেত্রই বেশি। একে অপরকে ধাক্কা দেওয়ার পরিবর্তে একে অপরকে সফল হতে সাহায্য করার মতো জ্ঞান ও ক্ষমতা দু’দেশেরই আছে।’’
কিন্তু চিন কি লাদাখের বাকি সংঘর্ষবিন্দু থেকে সেনা সরানোর বিষয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনা চালাবে? চিনা মুখপাত্রের বক্তব্য, ‘‘সীমান্ত প্রশ্নে চিন ও ভারতের যোগাযোগ মসৃণ। আমাদের মধ্যে কার্যকরী আলোচনা হয়।’’
জয়শঙ্করের মন্তব্যের সদর্থক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন চিনা বিশেষজ্ঞেরাও। সে দেশের সরকারি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত চিনা বিশেষজ্ঞদের মত অনুযায়ী, ১৯৮৮ সাল থেকে ‘এশিয়ার শতাব্দী’ বাক্যবন্ধটি ভারত-চিন সম্পর্কের চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করেছে। এই শব্দটি ব্যবহার করে একটি বন্ধুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উপরে জোর দিয়েছেন জয়শঙ্কর। যা প্রশংসাযোগ্য বলে মনে করছেন চিনা বিশেষজ্ঞেরা। তাঁদের মতে, বিশ্বের নানা সমস্যা মোকাবিলায় ভারত ও চিনের একসঙ্গে কাজ করা গুরুত্বপূর্ণ। সীমান্ত বিবাদকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে বাধা হয়ে উঠতে দেওয়া উচিত নয়।
তবে বেজিংয়ের এই বক্তব্যে উল্লসিত হওয়ার কারণ নেই বলে মত কূটনীতিকদের একাংশের। তাঁদের মতে, লাদাখের বাকি সংঘর্ষবিন্দু থেকে দু’দেশের সেনা সরানোর বিষয়ে একাধিক দফায় আলোচনা হয়েছে। কিন্তু চিন সেনা সরানোর বিষয়ে উচ্চবাচ্য করছে না। ফলে এই বিষয়ে বেজিং উদ্যোগী না হলে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতি হওয়া কঠিন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy