Advertisement
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Bangladesh Protest

ছাত্র বিক্ষোভে ফের উত্তাল বাংলাদেশ! ঢাকায় সংঘর্ষ, পুলিশের গাড়িতে আগুন, মুন্সিগঞ্জে গুলি, নিহত দুই

শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে নতুন করে উত্তাল বাংলাদেশ। আন্দোলনকারীদের যৌথমঞ্চ ‘বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর ডাকে রবিবার থেকে বাংলাদেশে শুরু হল সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলন।

উত্তরার বিএনএস সেন্টার এর সামনে জমায়েত।

উত্তরার বিএনএস সেন্টার এর সামনে জমায়েত। ছবি: এক্স।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০২৪ ১১:৩৩
Share: Save:

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে নতুন করে উত্তাল বাংলাদেশ। আন্দোলনকারীদের যৌথমঞ্চ, ‘বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর ডাকে রবিবার থেকে বাংলাদেশে শুরু হল সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলন। আন্দোলনের নয় দফা দাবি এখন নেমে এসেছে এক দফায়— হাসিনা সরকারের পদত্যাগ। শনিবারই ঢাকায় শহিদ মিনার চত্বরে আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম। এ ছাড়াও এ বিষয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দেন আন্দোলনের আর এক সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ। শহিদ মিনারে হাজার হাজার ছাত্র জনতার সমাবেশে ডাক দেওয়া হয় অসহযোগের।

রবিবার সকাল থেকেই আবার উত্তপ্ত ঢাকা শহর। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ জানাচ্ছে, শাহবাগ এলাকায় জড়ো হয়েছেন শ’য়ে শ’য়ে মানুষ। আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের সঙ্গে তাঁদের এক দফা সংঘর্ষ শুরু হয়। ওই চত্বরের বেশ কিছু গাড়িতেও ভাঙচুর চালানো হয়েছে। গাজিপুরে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আগুন লাগিয়ে দিয়েছেন বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীরা। ঢাকার সিএমএম আদালত চত্বরে পুলিশের একটি ভ্যানও জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। একই চিত্র মুন্সিগঞ্জ এলাকাতেও। সেখানে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন ২ জন। এই পরিস্থিতিতে ফের মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে সরকারি সংস্থা।

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে হিংসার ঘটনায় নিহতদের স্মরণে কর্মসূচিকে ঘিরে শুক্রবার থেকেই উত্তপ্ত রাজধানী ঢাকা-সহ বাংলাদেশের নানা এলাকা। শনিবারও কুমিল্লা শহরে কোটা সংস্কারপন্থী পড়ুয়াদের মিছিলে গুলি চলেছে। গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অন্তত পাঁচ জন আন্দোলনকারী। সশস্ত্র দুষ্কৃতীদের হামলায় আহত আরও বহু ছাত্র। অভিযোগ, শাসকদল আওয়ামী লীগের যুব সংগঠন যুবলীগ এই হামলা চালিয়ে থাকতে পারে। ওই ঘটনার পরে কুমিল্লার চান্দিনায় উপজেলা সহকারী কমিশনারের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন মারমুখী আন্দোলনকারীরা।

প্রসঙ্গত, প্রবল জনরোষের মুখে পড়ে বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট কোটা সংস্কারের পক্ষে রায় দিলেও ন’দফা দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল ‘বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন’। ধৃত আন্দোলনকারীদের মুক্তি, সমস্ত মামলা প্রত্যাহার, কোটা আন্দোলনে হামলাকারীদের শাস্তি-সহ আরও বিভিন্ন দাবি ছিল আন্দোলনকারী ছাত্রদের। কিন্তু বিগত কয়েক সপ্তাহে পুলিশ-প্রশাসন এবং আওয়ামী লীগের যৌথ হামলায় একের পর এক মৃত্যুর পর এখন নয় দফা দাবির পরিবর্তে একটি মাত্র দাবি নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা ঘোষণা করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন— হাসিনা সরকারের পদত্যাগ। অন্যথায় সর্বাত্মক অসহযোগের ডাক দিয়েছে তারা। বলা হয়েছে, অসহযোগ চলাকালীন বাংলাদেশের কোনও নাগরিক আর কর দেবেন না। দেবেন না বিদ্যুৎ, গ্যাস বা অন্যান্য পরিষেবা বাবদ বিলও। অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ থাকবে সরকারি-বেসরকারি সমস্ত প্রতিষ্ঠান— স্কুল, কলেজ, অফিস, আদালত। কেবলমাত্র হাসপাতাল, ওষুধের দোকান, অ্যাম্বুলেন্স, দমকল, ইন্টারনেট পরিষেবা দফতর, সংবাদমাধ্যমের মতো জরুরি পরিষেবাগুলি চালু থাকবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকানগুলি খোলা রাখা হবে সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE